Mamata Banerjee: ‘একটা বাঙালি, দশটা গুজরাটি!’, BLA-দের ৮টা দাওয়াই দিলেন মমতা
Mamata Banerjee in Netaji Indoor Stadium: যে সকল ভোটারদের বিএলও 'আনম্য়াপড' বলে চিহ্নিত করেছে, তাঁদের সকলে শুনানি নোটিস পেয়েছেন কিনা দেখতে হবে বিএলএ-দের। পাশাপাশি, এই সকল ভোটারদের ১১টি নথির মধ্য়ে যে কোনও একটি সংগ্রহ করে রাখতে বলতে হতে হবে। শুনানির সময় যাতে এনারা উপস্থিত থাকেন, সেটাও সুনিশ্চিত করতে হবে খোদ বিএলএ-দেরই।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়Image Credit: PTI
কলকাতা: ভর দুপুরে নেতাজি ইন্ডোরে জমেছে ভিড়। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছেন তৃণমূলের বিএলএ ১ এবং বিএলএ ২-রা। তাঁদের কাছে পেয়েই বড় দায়িত্ব দিয়ে দিয়েছেন মমতা। ভোটার তালিকার নিবিড় পরিমার্জনের দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও কাজ বাড়ল তৃণমূলের বিএলএ-দের। ভোটার যাচাই থেকে ভোটারদের সহযোগিতা, সর্বক্ষণ রাখতে হবে কান খাড়া।
কী কী দায়িত্ব দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো?
- বিএলএ-দের বাড়ি বাড়ি ঘুরতে হবে। খোঁজ নিতে হবে বাদ পড়া ভোটারদের। মমতার কথায়, ‘প্রত্যেক পোলিং স্টেশনের এএসডি তালিকা জেলাশাসক, মহকুমা শাসক এবং ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। সেই তালিকার ভিত্তিতে বাড়ি বাড়ি ঘুরে জানতে হবে, এমন ভোটার বাস্তবে রয়েছেন কিনা।’ যদি কোনও ‘বাদ পড়া’ ভোটারকে খুঁজে পাওয়া যায়, তা হলে সেই ভোটারের নাম নথিভুক্তের কাজে ফর্ম ৬ এবং অ্য়ানেক্সচার ৪ ইআরওদের কাছে জমা দেওয়ার দায়িত্ব ওই বিএলএ-দের দিয়েছেন মমতা।
- যে সকল ভোটারদের বিএলও ‘আনম্য়াপড’ বলে চিহ্নিত করেছে, তাঁদের সকলে শুনানি নোটিস পেয়েছেন কিনা দেখতে হবে বিএলএ-দের। পাশাপাশি, এই সকল ভোটারদের ১১টি নথির মধ্য়ে যে কোনও একটি সংগ্রহ করে রাখতে বলতে হতে হবে। শুনানির সময় যাতে এনারা উপস্থিত থাকেন, সেটাও সুনিশ্চিত করতে হবে খোদ বিএলএ-দেরই। কিন্তু যাঁদের নথি নেই, তাঁরা কী করবেন? সেই সুরাহাও দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এদিন তিনি বলেন, ‘যাঁদের কাছে ১১টি নথির মধ্যে কোনওটাই নেই। তাঁদের স্থায়ী বাসস্থান শংসাপত্র, তফসিলি জাতি-উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির শংসাপত্র (যদি তিনি যোগ্য হন) পাওয়ার জন্য দ্রুত আবেদন করানোর ব্যবস্থা করতে হবে বিএলএ-দের। পাশাপাশি, একটি May I help desk- চালু করতে হবে। এটা বিএলএ ২-দের কাজ।’
- বিএলও অ্যাপে যে সকল ভোটারদের Logical Discrepancy বা যুক্তিযুক্ত অমিল পাওয়া গিয়েছে, সেই সকল ভোটাররা শুনানিতে যথাযথ নথি জমা দিয়েছেন কিনা দেখতে হবে বিএলএ-দের। সংশ্লিষ্ট ভোটাররা যাতে কোনও ভাবেই হয়রানির শিকার না হয়, তাও সুনিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে বুথে বুথে ক্যাপ তৈরি করতে হবে। বলে রাখা প্রয়োজন এই ক্যাম্প তৈরির দায়িত্ব বিধায়ক এবং কাউন্সিলরদের দিয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘অনেক কাউন্সিলর কাজ করেন না। শুধু দলের বদনাম করেন, আমি তাঁদের পরিবর্তে দরকার হলে ব্লক প্রেসিডেন্ট তৈরি করে দেব। যে ভাল কাজ করবে, তাঁকে আমি ব্লক প্রেসিডেন্ট করে দেব।’
- যে সকল ব্যক্তি ফর্ম ৬ এবং ফর্ম ৮ জমা দিচ্ছেন, তাঁদের উপর নজর রাখতে হবে। সবাই যাতে নাম নথিভুক্ত করতে পারে, সে জন্য আবেদনকারীদের ‘হাসি মুখে’ সাহায্য করতে হবে।
- যদি কারওর বয়স ১৮-এর উর্ধ্বে হয় এবং তিনি ফর্ম ৬ জমা দেন, তা হলে বিএলএ-দের দেখতে হবে সেই তথ্য সঠিক কিনা। মমতার অভিযোগ, ‘আগের লিস্টে অনেক বাইরের নাম ঢুকিয়েছে। একটা বাঙালি, ১০টা গুজরাটি। এখন আবার এআই ঢুকিয়ে দিচ্ছে। তাই নজর রাখুন।’
- যে সকল ভোটার ‘ফর্ম ৮ দিয়ে’ নাম তুলতে চাইছেন, সেক্ষেত্রে বিএলএ-দেরই নিশ্চিত হতে হবে, তিনি কোথা থেকে আসছেন। মমতার কথায়, ‘পরিযায়ী শ্রমিক যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের দরকার পড়লে আসতে বলুন। নিজেদের ভবিষ্যতের স্বার্থে। যদি কেউ বলে ওখান থেকে গেলে আর চাকরি দেবে না, তা হলে কাজ দেওয়ার গ্যারান্টি আমাদের।’
- ভোটের জন্য অন্য় রাজ্য থেকে যাঁরা আসছেন, নাম তুলছেন, তাঁদের উপরেও বিএলএ-দের নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।
- নজর রাখতে হবে গোটা এসআইআর প্রক্রিয়ার উপরেও। প্রয়োজন পড়লে দলের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
