কলকাতা: ‘দিয়েছে কেষ্টকে পাঠিয়ে নোটিস…’ ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় বীরভূমে এক বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় অনুব্রত মণ্ডলকে সিবিআই-এর নোটিস পাঠানোয় বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচনের পর নেতাজি ইন্ডোরে অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিজেপির নীতির বিরুদ্ধে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। ইডি-সিবিআই তদন্ত নিয়ে ফের সুর চড়ান তিনি। তাঁর বক্তব্য, কোনও নির্বাচনের আগেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অতিসক্রিয়তা আসলে বিজেপির অঙ্গুলিহেলনেই হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২ মে একুশের নির্বাচনের ফলপ্রকাশের দিন বীরভূমের গোপালনগর গ্রামে খুন হন গৌরব সরকার নামে এক বিজেপি কর্মী। সেই মামলায় এফআইআর-এ নাম না থাকা সত্ত্বেও অনুব্রত মণ্ডলকে নোটিস পাঠিয়েছে সিবিআই। এই নিয়ে দুবার তাঁকে তলব করা হয়েছে। যদিও শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাজিরা এড়িয়েছেন তিনি। বুধবার সিবিআই এড়াতে হাইকোর্টের দ্বারস্থও হয়েছেন তিনি।
সেই প্রসঙ্গ টেনেই নেতাজি ইন্ডোরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পলিটিক্যালি তো পারবে না, দিয়েছে সিবিআই-এর নোটিস পাঠিয়ে। ও বেচারা অসুস্থ।” এরপরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। বলেন, “অভিষেক গোয়া করছে, ওর লইয়ার, ওর প্লেনে যে টিকিট কাটে, সেই ট্র্যাভেলার্স থেকে শুরু করে, স্কুলের যত বন্ধু রয়েছে সবার বাড়িতে নোটিস পাঠিয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, “তার মানে কী? আমরা কারোর সঙ্গে কোনও রিলেশন রাখতে পারব না। হাতের সামনে যত বন্ধু হয়েছে, সব ডানাগুলো কেটে দাও। সবার ডানা কেটে দাও। সবার ডানা কেটে দেবেন আর ওনারা ডানার ছানা হয়ে বসে থাকবেন।”
প্রসঙ্গত, পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের আগে কয়লা কাণ্ড নিয়ে ফের তৎপর হয়ে উঠেছে সিবিআই। গোয়ায় অচেনা মাটিতে শক্তি পরীক্ষায় নেমেছে বিজেপি। মুখ মমতা-অভিষেক। মাটি আঁকড়ে অভিষেক পড়ে রয়েছেন গোয়ায়। কিন্তু এরই মধ্যে কয়লাকাণ্ডে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদককে একাধিকবার নোটিস পাঠিয়েছে সিবিআই। নোটিস পাঠানো হয়েছে অভিষেকের স্ত্রী রুজিরাকেও। অভিষেক হাজিরা দিয়েছেন, কিন্তু বাচ্চা ছোটো বলে হাজিরা এড়িয়েছেন রুজিরা। এরই মধ্যে অভিষেকের আপ্ত সহায়ককেও মঙ্গলবার নোটিস পাঠিয়েছে সিবিআই। আর তাই নিয়েই বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপির ‘সিবিআই-তদন্ত হাতিয়ার’ তত্ত্ব- এর আগেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার তুলে ধরেছেন। এদিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তিনি বলেছেন, “বিজেপির তিন রত্ন, ইডি-সিবিআই আর অর্থ। ভোট এলেই মুখ বন্ধ করতে ইডি, সিবিআই লাগিয়ে দেয়।” মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কোভিড, সন্ত্রাসকে ইস্যু করেই ভোট করে যাচ্ছে বিজেপি। ”