Mamata Banerjee On Governor: ‘বলি একটা কাউন্সিলরও তো জীবনে হও নাই’, ব্লক করার পরই রাজ্যপালকে চরম কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর

Mamata Banerjee On Governor: বিশ্লেষকরা বলছেন, এদিনের রাজ্যপালকে যেভাবে বিঁধেছেন মমতা, তা কার্যত নজিরবিহীন।

Mamata Banerjee On Governor: 'বলি একটা কাউন্সিলরও তো জীবনে হও নাই', ব্লক করার পরই রাজ্যপালকে চরম কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর
মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি রাজ্যপালের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 02, 2022 | 3:57 PM

কলকাতা: ‘আর এখানে একটা ঘোড়ার পাল দিয়েছে…’, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে এবার চরম কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচনের পর নেতাজি ইন্ডোরে অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে আবারও রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত আবহ টেনে আনলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বুধবার তৃণমূলের সাংগঠনিক নির্বাচন ছিল। চার বছর পর হল এই নির্বাচন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই চেয়ারপার্সন হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতাজি ইন্ডোরের মঞ্চে দাঁড়িয়ে দলের কর্মী সমর্থকদের সাংগঠনিক বার্তা দিতে থাকেন তিনি। কতটা ঝড় ঝাপটা পেরিয়ে, সংগ্রাম করে তৃণমূল আজ এই জায়গায়, তা তুলে ধরেন। বিজেপির বিরুদ্ধে এক কাট্টা হয়ে লড়াইয়ের ডাক দেন তিনি। প্রসঙ্গের প্রেক্ষিতেই রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত আবহ টেনে মমতা বলেন, ‘আর এখানে দিয়েছে একটা ঘোড়ার পাল। একদল ঘোড়ার পাল, রাজ্য শাসন করতে পাঠিয়েছেন।”

‘২৬ জানুয়ারি আমি একটা ঘোড়া দেখেছিলাম’

এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এই কথাটা আমার মনে এল, কারণ ২৬ জানুয়ারি আমি একটা ঘোড়াকে দেখছিলাম, মাউন্টেড পুলিশ, যাকে নিয়ে আমরা গর্ব করি, তারাও জানতে পেরে গেল, ঘোড়ার পাল আছে। আমরা তো শিখিয়ে দিই নি। এই না বলে বসে তৃণমূল কংগ্রেস শিখিয়ে দিয়েছে। আজকে তারাও রেজিস্ট করছে। ঘোড়ার পাল ঘোড়ার পালদের রেজিস্ট করছে।”

‘মুখ দিয়ে অনেক কিছুই বেরিয়ে যায়….সামলে নিই’

মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, “সকাল নেই, সন্ধ্যা নেই। শুধু আমাকে গালাগাল দিয়ে বেরাচ্ছেন। আর আমাকে গালাগাল দিয়ে আমার অফিসিয়াল টুইটারেই পাঠিয়ে দিচ্ছে। দেড় বছর ধরে সহ্য করেছি। বাংলায় গণতন্ত্র নেই, বাংলার শান্তি নেই, বাংলায় মানুষের ওপর বিচার নেই। বাংলায় শুধু খুন, বাংলায় শুধু নারী নির্যাতন, বাংলায় শুধু হিংসা! উনি ঘরে বসে বসে দূরবিন দিয়ে দেখছেন। জিজ্ঞাসা করুন, ইউপিতে কী হচ্ছে, একটু দেখেছেন? দিল্লিতে কী হচ্ছে, ত্রিপুরা-গুজরাটে কী হচ্ছে দেখেছেন? দেখবার চেষ্টা করেছেন? আমাকে কৈফিয়ত দিতে হবে? মা ক্যান্টিনে ৫ টাকায় গরিব লোকেদের ডিম ভাত খাওয়াই। তাও বলছে কী করে হবে? কেন হবে? কে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আরে! মুখ দিয়ে অনেক কিছুই বেরিয়ে যায় সামলে নিই।” (অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাকিরা তখন চেয়ারে বসে হাসছেন।)

‘বলি, একটা কাউন্সিলরও তো জীবনে হও নাই’

রাজ্যপাল যে নির্বাচিত নন, সেকথা মনে করিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ওঁ বলেন, আমার ইনস্ট্রাকশন ফলো করতে হবে। বলি, একটা কাউন্সিলরও তো জীবনে হও নাই। একটা ইলেকটেড কাউন্সিলর হলেও জীবনে বুঝতাম! রাজনীতিতে দশবার দল বদল করেছো। দলবদলু সব। আর আজকে বলে বেরাচ্ছে দেখ লেঙ্গে! ইউ ক্যান নট কল অ্যা অফিসার উইথ আউট দ্য পারমিশন অফ চিফ মিনিস্টার। দিস ইজ় কলড ডেমোক্রেসি।”

‘বেলা ১টায় তাজকে ডাকে…খেতে হবে তো’

সরকারি কর্তাদের রাজ্যপালের তলব প্রসঙ্গেও এদিন মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। কটাক্ষের সুরে বলেন, “সকাল থেকে রাত পর্যন্ত… পুলিশ কমিশনারকে বলছে সকাল ১০টায় এসে দেখা করো। চিফ সেক্রেটারিকে বলছে ১১ টায় এসে দেখা করো। হোম সেক্রেটারিকে বলছে ১২ টায় এসে দেখা করো। তাজ বেঙ্গলকে বলছে ১টায় এসে দেখা করো। খেতে হবে… (মঞ্চে আবারও হাসির রোল) কোনও কাজ নেই। লিগ্যাল ওঁ কত জানেন! আর্টিক্যাল ১১৯!”

নজিরবিহীন আক্রমণ

বিশ্লেষকরা বলছেন, এদিন রাজ্যপালকে যেভাবে বিঁধেছেন মমতা, তা কার্যত নজিরবিহীন।  অত্যন্ত কৌতুকের ভঙ্গিতে হালকা চালে একের পর এক তোপ দেগেছেন তিনি। টুইটারে রাজ্যপালকে ইতিমধ্যেই ব্লক করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিনই তিনি বলেন, ‘বাধ্য হয়েছি ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে রাজ্যপালকে ব্লক করতে, ‘এরজন্য আমি ক্ষমা চাইছি, কিন্তু বারবার প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, নিজেকে কী ভাবেন রাজ্যপাল, সুপার পাহারাদার রাজ্যপাল!’

রাজ্যপাল অবশ্য প্রত্যাশিতভাবেই পাল্টা টুইট করেছিলেন। লিখেছিলেন, “রাজ্যের কেউ সাংবিধানিক রীতিনীতি ব্লক করতে পারে না। আইনের শাসনকে কেউ ব্লক করতে পারে না। সংবিধানের ১৫৯ ধারা এটা সুনিশ্চিত করে। যাঁরা ক্ষমতায় আছেন তাঁরা সংবিধানের প্রতি আস্থাশীল ও অনুগত থাকবেন। এই ধারা সেটাই সুনিশ্চিত করে।” অবশ্য তার কোনও আর উত্তর দেননি মমতা। তবে এদিন নেতাজি ইন্ডোরের মঞ্চ থেকে রাজ্যপালকে কার্যত নজিরবিহীন আক্রমণ করেন তিনি। তার উত্তর রাজ্যপাল কীভাবে দেন, সেটার দেখার।

আরও পড়ুন: Sajal Ghosh Bengal BJP: ‘সাহস থাকলে শ্রীভূমিতে গিয়ে হামলা করুক’, প্রতিবাদ মিছিলে সজল ঘোষকে পুলিশি-বাধা, ধুন্ধুমার