‘স্ত্রীকে গলা টিপে মেরে ফেলেছি’, থানায় গিয়ে নিজেই জানালেন স্বামী, খাস কলকাতায় চাঞ্চল্যকর ঘটনা
পরকীয়া সন্দেহে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। কতদিন ধরে তাঁদের মধ্যে অশান্তি চলছিল? কেন আচমকা খুন? তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
কলকাতা: ২১ বছরের দাম্পত্য। রয়েছে ১৮ বছরের এক পুত্র সন্তানও। এতদিন ধরে তেমন কোনও অশান্তির ঘটনাও ঘটেনি। কিন্তু, আজ সাত সকালেই স্ত্রী’কে খুন করে থানায় হাজির হলেন স্বামী। খাস কলকাতায় এই ঘটনা ঘটল বৃহস্পতিবার সকালে। স্ত্রী মুনমুন দাসকে গলা টিপে খুন করে থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেন তাঁর স্বামী সঞ্জয় দাস। সঙ্গে সঙ্গে সঞ্জয়ের বাড়িতে ছুটে যায় চিৎপুর থানার পুলিশ। গিয়ে দেখে, মাটিতে লুটিয়ে পড়ে রয়েছেন মুনমুন। তাঁর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আরজিকর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
চিৎপুরের বীরপাড়ার মনীন্দ্র রোডের ঘটনা। ঘটনার সময় বাড়িতে ছিল না তাঁদের সন্তান। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ১০ টা নাগাদ চিৎপুর থানায় হাজির হন সঞ্জয় দাস নামে ওই ব্যক্তি। তিনি নিজেই পুলিশকে জানান যে তিনি তাঁর স্ত্রী’কে গলা টিপে মেরে ফেলেছেন। সঞ্জয়কে নিয়েই তাঁদের বাড়িতে যায় পুলিশ। মুনমুনের গলায় আঘাতের চিহ্নও রয়েছে। শ্বাসরুদ্ধ করে খুন করা হয়েছে বলেই প্রাথমিক অনুমান। সঞ্জয় পুলিশকে জানিয়েছে পরকীয়া সন্দেহেই খুন করেছেন তিনি। জানা গিয়েছে, এলাকায় একটি কেকের দোকানে কাজ করতেন মুনমুন। তাঁর স্বামী সঞ্জয় দাস একজন অটোচালক। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, তেমন কোনও অশান্তির খবর তাঁদের কাছে ছিল না।
খবর পেয়ে ছুটে এসেছেন মুনমুনের পরিবারের সদস্যরা। তাঁর বোন জানিয়েছেন, এ দিন সকালে চিৎপুর থানা থেকে ফোন যায় তাঁর ভাইয়ের কাছেই। পুলিশ জানায়, তাঁদের দিদি আত্মহত্যা করেছেন। আরজিকর হাসপাতালে যেতে বলা হয় তাঁদের। এরপরই মুনমুনের বাড়িতে এসে আসল ঘটনা জানতে পারেন তাঁরা। মুনমুনের বোন জানান, তাঁর দিদি টিফিন বক্সে খাবার নিয়ে কাজের জন্য বেরচ্ছিলেন, সেই সময়ই এই ঘটনা ঘটেছে। পরকীয়া নাকি অন্য কোনও কারণ, তা খতিয়ে দেখতে তাঁদের সন্তান ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ। কী ভাবে খুন করা হল মুনমুনকে, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: TV9 বাংলার খবরের জের, এসএসকেএমে যৌন হেনস্থার ঘটনা ফাঁস হতেই নড়েচড়ে বসল স্বাস্থ্য ভবন
বিশিষ্ট মনোবিদ অমিত চক্রবর্তী বলেন, এই ধরনের ঘটনা থেকে প্রাথমিকভাবে মনে করা হয় খুনী মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। তাঁর মতে, হতে পারে যে ওই ব্যক্তির অহেতুক সন্দেহ করার অভ্যাস ছিল। এমন মানসিক সমস্যা থাকলে অনেক সময় কোনও ব্যক্তির মনে হয় যে তাঁর বিরুদ্ধে সবসময় কেউ বা কারা ষড়যন্ত্র করছে। সেই মানসিক সমস্যা থেকে এই ধরনের ঘটনা ঘটানো অস্বাভাবিক কিছু নয়। সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, সুস্থ মস্তিষ্কে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করা হলে, নিজেই আত্মসমর্পণ করতেন না।