Selim in Local Train: মানুষের আরও কাছে পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা, লোকাল ট্রেনে হাঁসখালি যাত্রা মহম্মদ সেলিমের
Md Selim visits Hanskhali: লোকাল ট্রেনে চেপেই হাঁসখালিতে পৌঁছে গেলেন মহম্মদ সেলিম। সেখানে যান নির্যাতিতার নাবালিকার বাড়িতে। তার পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলে সেলিম। শুধু তাই নয়, সেখানে মিছিলও করলেন, জমায়েতে বক্তৃতাও দিলেন। সব কর্মসূচি শেষে আবার ট্রেনে চেপেই ফিরলেন কলকাতায়।
কলকাতা ও হাঁসখালি : মহম্মদ সেলিম। সিপিএমের বর্তমান রাজ্য সম্পাদক। হাঁসখালির নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়েছিলেন রবিবার। রাজ্য সম্পাদক হওয়ার দৌলতে অনায়াসেই কোনও গাড়িতে চেপে হাঁসখালিতে যেতে পারতেন তিনি। কিন্তু না, তিনি বেছে নিলেন লোকাল ট্রেনকে। আজ লোকাল ট্রেনে চেপেই হাঁসখালিতে পৌঁছে গেলেন তিনি। সেখানে যান নির্যাতিতার নাবালিকার বাড়িতে। তার পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলেন সেলিম। শুধু তাই নয়, সেখানে মিছিলও করলেন, জমায়েতে বক্তৃতাও দিলেন। সব কর্মসূচি শেষে আবার ট্রেনে চেপেই ফিরলেন কলকাতায়। একেবারে সাদামাটা যাত্রা। আর পাঁচটা সাধারণ ট্রেনযাত্রীর মতোই লোকাল ট্রেনে চেপেই হাঁসখালির নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে এলেন।
হাঁসখালির নির্যাতিতা নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। সেদিন ঠিক কী ঘটেছিল, কীভাবে ঘটেছিল, সেই সব বিষয়ে খোঁজখবর নেন। এর পাশাপাশি, রাজ্য পুলিশের ভূমিকা এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের ভূমিকা কেমন এবং সেই নিয়ে নির্যাতিতার পরিবারের কী মত, তা নিয়েও জানতে চান তিনি। স্থানীয় লোকজনদের সঙ্গেও কথা বলে বেশ কিছু খোঁজখবর নেন সেদিনের ঘটনার। এর পাশাপাশি আজ দুপুরে হাঁসখালিতে একটি মিছিলও করেন তিনি। রবিবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে সেই মিছিলের বেশ কিছু টুকরো টুকরো ছবি শেয়ারও করেছেন মহম্মদ সেলিম।
রবিবার হাঁসখালিতে গিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “যা বলার মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন। অপরাধীদের পক্ষে দাঁড়িয়ে শুধু অপরাধীদের গুণগান করেননি, বাকি সবটাই করেছেন। উল্টে ১৪ বছরের মেয়েটির ঘাড়ে সব দোষ চাপিয়েছেন।” প্রশ্ন তুললেন, “কেউ প্রেম করবে না? কেউ ভালবাসবে না? কেউ বন্ধুত্ব করবে না? কেউ বাড়ির বাইরে যাবে না? গোটা দেশেই তো আমরা এটাই শুনছি। যখনই কোনও ঘটনা হয়, মেয়েটির পোশাক নিয়ে, ব্যবহার নিয়ে চালচলন নিয়ে কথা হয়। বাংলা তার মেয়ের নিরাপত্তা চায়।”
রবিবার হাঁসখালিতে ঠাসা কর্মসূচি ছিল সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের। নির্যাতিতার বাড়িতে যাওয়া, মিছিল করা, জমায়েতে বক্তৃতা দেওয়া, সব শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়া। কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে নজর কেড়েছে তাঁর সাদামাটা ছবিটা। অন্তত এমনটাই মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা। তাঁদের মতে, লোকাল ট্রেনে চেপেই কলকাতা থেকে হাঁসখালি গেলেন, আবার সেই লোকাল ট্রেনে চেপেই ফিরে আসলেন। অতীতে বাম নেতাদের এমন সরল ছিমছামভাবেই দেখে এসেছে মানুষ। বামেদের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার পিছনে এটি অবশ্যই অন্যতম একটি অনুঘটক ছিল।
বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্য রাজনীতি বামেদের খুব একটা অনুকূলে নেই। ২০২১ সালের ভোটে মানুষ মুখ ফিরিয়েছে বামেদের থেকে। বাম শূন্য বিধানসভা গঠিত হয়েছে। সেই জায়গা থেকে একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বামেরা। যদিও ঘুরে দাড়ানোর গতি অনেকটাই শ্লথ। তবে পুরভোট থেকেই আশার আলো দেখতে শুরু করেছিলেন বামেরা। সম্প্রতি বালিগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপিকে টপকে দ্বিতীয় স্থানে বামেদের উঠে আসার পর মনোবল আরও কিছুটা চাঙ্গা হয়েছে বামেদের। অনেকেই মনে করছেন, বামেদের গ্রহণযোগ্যতা একটু একটু করে বাড়তে শুরু করেছে আবার। ঠিক এমনই একটি পরিস্থিতিতে মানুষের আরও কাছে পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা দেখা গেল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের লোকাল ট্রেন যাত্রায়। অন্তত এমনই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা।
আরও পড়ুন : Body Recover: বাপ মরা ছেলেদের নিয়ে নতুন করে সংসার মহিলার, এমন সর্বনাশ ভাবতেও পারছে না পরিবার…