“ছেলেকে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়র যা বানানোর বানান। কিন্তু আগে ভাল হিন্দু বানান। যে নিজে ধর্মের প্রতি সমর্পিত হবে। আর বাড়িতে একটা করে ধারাল অস্ত্র রাখুন। নিজের ধর্ম-সংস্কৃতি রক্ষা করতে না পারলে ডাক্তার ব্যারিস্টার যাই হোক, ফুটে যাবে!” কে বলছেন এ কথা? সুকান্ত মজুমদার! বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি। লোকসভা ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ইস্যু কাজে না লাগতেই কী ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগে শেষ পর্যন্ত ঝুলি থেকে চড়া হিন্দুত্বের বিড়ালটা বের করেই ফেলছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা? সে কারণেই কী বাংলাদেশ-চিন্ময়কৃষ্ণ ইস্যুতে এক ইঞ্চিও মাটি ছাড়তে চাইলেন না বাংলায় শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতারা? কেউ কেউ তো তাঁকে বেশ কিছুদিন ধরেই বঙ্গ হিন্দুত্বের ‘পোস্টার বয়’ বলেও ডাকতে শুরু করেছেন। এসব তো চলছেই, কিন্তু তলে তলে বাংলার বুকেই লেখা হয়ে যাচ্ছে মেরুকরণের এক অন্য উপাখ্যান। তেমনটাই ব্যাখ্যা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। ২২ জানুয়ারি বুধবারের বারবেলায় যখন এই প্রতিবেদন লেখা হচ্ছে ঠিক সেই সময় মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি সাক্ষী থাকছে আর এক ঘটমান ইতিহাসের। দক্ষিণ ভারত থেকে নিয়ে আসা হয়েছে রামললার অষ্টধাতুর মূর্তি। তাই প্রতিষ্ঠা করা হবে এই রামমন্দিরে। এদিনই হচ্ছে ভূমিপুজো।
ব্লকে ব্লকে মন্দির
ছাব্বিশের ভোটের আগে মেরেকেটে যেখানে আর বছরখানেক বাকি তার আগে সাগরদিঘির অলংকার গ্রামে তৈরি হচ্ছে রামমন্দির। তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের বাবরি মসজদি তৈরির ঘোষণার কিছু সময়ের মধ্যেই ব্লকে ব্লকে মন্দির তৈরির ঘোষণা এসেছিল গেরুয়া শিবিরের তরফেও। প্রতি বিধানসভায় রাম মন্দির তৈরির ডাক দিয়েছিলেন হিন্দু সেনার অধ্যক্ষ অম্বিকানন্দ মহারাজ। তবে তা যে শুধু কথার কথা নয়, তাও বুঝিয়ে দিলেন মাত্র মাসখানেকের ব্যবধানে। রামমন্দিরের শিলান্যাসের অনুষ্ঠানে দেশের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা, সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদককেও যে ডাকা হয়েছে তা আগেই জানিয়েছিলেন অম্বিকা। ডাক পেয়েছিল আইএসএফও। হুমায়ুনের প্রসঙ্গ উঠতেই বলেছিলেন বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে হুমায়ুনকেও। যদিও হুমায়ুন আগেই বলে দিয়েছিলেন সব মিথ্যা কথা। তাঁর সঙ্গে নাকি যোগাযোগই করা হয়নি। হুমায়ুন যদিও বলছেন বেলডাঙায় ‘তাঁর’ বাবরি মসজিদের কাজ শেষ হতে হতে ২০২৯ সাল পর্যন্ত সময় গড়িয়ে যেতে পারে। কিন্তু, গেরুয়া শিবির যে অত সময় নষ্ট করতে নারাজ, তা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে বলেই মত রাজনীতির কারবারিদের বড় অংশের। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার’ কথা। হিন্দুত্বের তাস কে কত ভাল খেলতে পারেন তাই বোঝাতে যেন মাঠে নেমে পড়েছে বাংলার ‘টপ’ দুই রাজনৈতিক দলের নেতা-মন্ত্রীরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক শুভময় মৈত্র বলছেন, “প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার ফলে ‘তৃণমূল প্লাস বিজেপি’ এই ভোট বাড়বে। এই ভোটটা বাড়ানো দুই দলেরই টার্গেট। বিজেপির আদর্শগতভাবে সিপিএম ও রাজনৈতিকভাবে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে যাওয়া মুশকিল। তাই বিজেপির কাছে সবথেকে ভাল পছন্দ কিন্তু সর্বদাই তৃণমূল। একইভাবে, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের কাছে ভাল অপশন সর্বদাই বিজেপি। তাই তারা সর্বদাই চায় সিংহভাগ ভোট এই দুই দলের দখলেই থাক – অর্থাৎ ‘তৃণমূল প্লাস বিজেপির’ মোট ভোট যেন বাড়ে। ওই অবস্থান থেকেই দু’জনেই চাইছে দুইদলের মোট ভোট আরও বাড়ুক। তৃণমূলও চায় সিপিএম কংগ্রেস পিছিয়ে পড়ুক। বিজেপিও তাই চায়। এদিকে সিপিএম কিন্তু আদর্শগত ভাবে চায় বিজেপি হারুক, আর রাজনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়ুক তৃণমূল। কংগ্রেস মধ্যপন্থী, কেন্দ্রে তৃণমূল ঘেঁষা আর রাজ্যে সিপিআইএম। তাই অঙ্কের নিয়মেই তৃণমূল সবথেকে ভাল অবস্থানে আছে বলাই যায়। এখন বিজেপি ও তৃণমূলের এই দু’টো দলের বাকি সব বৈশিষ্ট্য যদি এক রাখা হয় তখন কিন্তু এককভাবে দুই দলই সবথেকে বেশি ভোট ঘরে তুলতে চাইবে। সে কারণেই আপাতত হিন্দু ভোট দুজনেরই পাখির চোখ।”
মেরুকরণের হালকা আঁচেই ভোটের রুটি স্যাঁকার কাজ শুরু হয়ে গেল?
ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের রণদামামা এখনও বাজেনি। কিন্তু, মেরুকরণের হালকা আঁচেই যে ইতিমধ্যেই ভোটের রুটি স্যাঁকার কাজটা শুরু হয়ে গিয়েছে তা মানছেন অনেকেই। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকই বলছেন বিজেপি উগ্র হিন্দুত্বকে হাতিয়ার করলেও পিছিয়ে নেই তৃণমূলও। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের লাভের গুড় পুরোটাই ঘরে তুলতে চাইছে ঘাসফুল শিবির। ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরও যে ভোটের বাজারে ভাল দাম পেতে চলেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর সে কথা বুঝে ঠেস দিতে ছাড়ছেন না বঙ্গ বিজেপির নেতারা। বাংলাদেশের অশান্তি, হিন্দুদের উপর বেলাগাম নির্যাতন, চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি নিয়ে বারবার গর্জে উঠেছেন কলকাতার ইসকনের প্রতিনিধি রাধারমন দাস। সম্প্রতি মমতার দিঘা সফরে সঙ্গীও ছিলেন তিনি। তাঁকে দিঘার জন্ননাথ মন্দিরের ট্রাস্টিও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই রাধারমনকেও একহাত নিয়েছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, পুরী মন্দিরের নকল করা যায় না। তাঁর কথায়, “কেদারধাম, বদ্রীধামের নকল হয় না। গীতাকে বদলে দেওয়া যায় না। পুরীধামেরও বদল করতে পারেন না। মমতাকে চ্যালেঞ্জ করছি, পুরী ধামের নকল আমরা মানব না। করে দেখুন।”
হিন্দু ভোটে চাপ?
হিন্দু ভোটের উপর চাপ যে আছে সেটা পরিষ্কার, বলছেন শুভময়বাবু। কেন এমনটা বলছেন তার ব্যখ্যাও দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “ ধরুন মুসলিম ভোটের ৯০ শতাংশই তৃণমূল কংগ্রেস পাচ্ছে। আর হিন্দুদের মোট প্রদত্ত ভোটের ৫০ শতাংশের নিচে তৃণমূল পাচ্ছে। কিন্তু, এই তথ্য বিশ্লেষণ করলে অর্থাৎ প্রাপ্ত মুসলিম ও হিন্দু ভোটের যোগ ফল ধরলেই তো দেখা যাবে তৃণমূল জিতে যাচ্ছে। শুধু দু’টো কারণে তৃণমূলের অসুবিধা হতে পারে। মুসলিম ভোটের কিছু কমলে ঘাসফুল শিবির বেকায়দায় পড়তে পারে। তবে মুসলিমদের বড় ভোট যে বিজেপির দিকে চলে যাবে সেই সম্ভাবনা একদমই নেই। তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোট কমলেও তার কিছুটা বিজেপিতে না গিয়ে কংগ্রেস সিপিআইএমের দিকে যেতে পারে। কিন্তু, সেই সম্ভাবনাও এখন প্রবল নয়। হিন্দুদের প্রদত্ত ভোটের অন্তত ৩০ শতাংশ যে তৃণমূল পাবে, এটা সম্ভাব্য।” কিন্তু কেন?
শুভময়বাবুর ব্যাখ্যা, “কারণ, তৃণমূল কোনও আদর্শভিত্তিক রাজনৈতিক দল নয়। সেই দলের মধ্যে বাম থেকে ডানদিক পর্যন্ত সবরকমের লোক রয়েছেন। এই দলে কিছু লোকজন আছেন যাঁরা একেবারে বামপন্থী। তাঁরা চান বিজেপি হারুক যে কোনওভাবে। তাঁরা কিন্তু তৃণমূলকে ছেড়ে যাবেন না। এই দলেই আবার বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের একটা অংশ রয়েছেন। তাঁদের কিছু ব্যক্তিগত স্বার্থ থাকা অসম্ভব নয়। প্রাইড অফ দ্য লেফট, প্রিভিলেজ অফ দ্য রাইট – এই অবস্থান নিয়ে তাঁরা চলতে পছন্দ করেন। একদিকে তৃণমূল থেকে দক্ষিণপন্থী সুবিধা পাব, অন্যদিকে সমাজতান্ত্রিক ভাবমূর্তিও রাখতে পারব সমাজের বুকে। তৃণমূলের এই কৌশলগত অবস্থান তাঁদের দলকে নির্বাচনী রাজনীতিতে সবল রাখবে বলেই মনে হয়।”
এদিকে মমতার পাশে রাধারমনকে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন শুভেন্দু। রীতিমতো ক্ষোভের সুরেই বলেছিলেন, “আমার লজ্জা লেগেছে মাননীয় রাধারমণ দাসকে দেখে। শ্রীলা প্রভুপাদ ইসকন তৈরি করেছিলেন চৈতন্য দেবের ভাবধারায়। চৈতন্য দেব তিনবারের বেশি পুরীতে গিয়েছেন। পুরীধাম নিয়ে চৈতন্য দেবের যে কথা আছে, তা তিনি পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছেন রথযাত্রার মাধ্যমে। আপনি পাশে দাঁড়িয়ে আপত্তি করলেন না?” শুভেন্দুর সাফ কথা, রাধারমনের আপত্তি জানানো উচিত ছিল। চৈতন্য দেব, শ্রীলা প্রভুপাদ-র ভাবধারাকে অপমান করছেন মমতা। যার সাক্ষী থাকলেন রাধারমন। যদিও রাধারমন বলছেন, তাঁরা রাজনীতি নয়, প্রভুর সেবা করেন।
সম্প্রীতি নাকি চাপা টেনশন?
এদিকে আবার মন্দির-মসজিদ বিতর্কে হুয়ামুন কবীর মুখে বলছেন সাম্প্রদায়িক ‘সম্প্রীতির’ কথা। তিনি তো আবার নিজের উদ্যেগেই রাম মন্দিরের জন্য জমি খুঁজে দেওয়ার কথা বলছেন। বেলঙাডায় বাবরি মসজিদের পাশেই রামমন্দির তৈরির প্রস্তাবও দিয়েছেন তিনি। সাফ বলছেন, অর্থ সাহায্যের কথাও। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথাও তুলে ধরেছেন বারেবারেই। বলেন, “বাবরি মসজিদের পাশে জমি আমি সংগ্রহ করে তাঁদের হাতে তুলে দেব। তাঁরা রামমন্দির বানান।” তাঁর আরও সংযোজন, “বাংলা যেটা আগে করে, সেটা ভারতবর্ষের মানুষ পরে ভাবে। এটার ক্ষেত্রেও আমরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করি। মুর্শিদাবাদের মানুষ হিসেবে পূর্বের যে ইতিহাস, তার পুনরাবৃত্তি করি। সম্রাট আকবর, সম্রাট সিরাজদৌল্লাকে আর একবার স্মরণ করি। হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতি বজায় রেখে বাবরি মসজিদের পাশে রামমন্দির হোক।” বিশালাকার সেই বাবরি মসজিদের শিলান্যাসের কথা চলতি বছরের ৬ ডিসেম্বর। তৈরি হচ্ছে বাবরি মসজিদ ট্রাস্ট। জমি খোঁজার কাজও চলছে পুরোদমে। ইতিমধ্যেই ৬ বিঘা জমিও হাতে এসেছে বলে খবর। মসজিদের পাশেই থাকছে হাসপাতাল, রিসর্ট। পুরো কাজ শেষ হতে হতে ২০২৯ সালের জানুয়ারি হয়ে যাবে বলে মনে করছেন হুমায়ুন।
এই হুমায়ুনের কারণেই আবার বিগত কয়েক মাসে লাগাতার অস্বস্তিতে পড়েছে বাংলার শাসকদল। কিন্তু, তাঁর বাবরি মন্তব্যে কোনও বিরোধিতার সুর সেই অর্থে শোনা যায়নি তাঁর দলের নেতাদের। আপার হ্যান্ড পেয়েছেন ফিরহাদের মতো নেতাও। তাঁর দাবি, উপরওয়ালার আশীর্বাদে একদিন সংখ্যাগুরু হবেন সংখ্যালঘুরা। তাঁর কথায়, “বাংলায় আমরা ৩৩ শতাংশ। কিন্তু, দেশে আমরা ১৭ শতাংশ। আমাদের সংখ্যালঘু বলা হয়। কিন্তু, আমরা নিজেদের সংখ্যালঘু বলে মনে করি না। আমরা মনে করি, উপরওয়ালার আশীর্বাদে একদিন আমরা সংখ্যাগুরুর চেয়েও সংখ্যাগুরু হতে পারি। উপরওয়ালার আশীর্বাদে এটা আমরা হাসিল করব।” যাঁর তীব্র প্রতিবাদ করে বিজেপি। প্রতিবাদে সরব হতে দেখা যায় একাধিক গেরুয়া সংগঠনকেও। যদিও হুমায়ুন-ফিরহাদদের এ মন্তব্যে তৃণমূলের কৌশলগত অবস্থানই দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। সরাসরি সংখ্যগুরু তোষণ, বা সরাসরি সংখ্যালঘু তোষণ যেখানে দুই করতে পারে তৃণমূল। কিন্তু, বিজেপি বা কংগ্রেস-সিপিএমের মতো দলগুলির ক্ষেত্রে অবস্থানগত বা আদর্শগত জায়গা থেকে তা করা চাপের বলেই মত তাঁদের অনেকের।
প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতায় তৃণমূলই ‘ফেভারিট’?
এ প্রসঙ্গ রাজনৈতিক বিশ্লেষক শুভময় মৈত্র বলছেন, “তৃণমূলের কৌশলে আপাতত প্রথম ডাইমেনশন কম্পিটিটিভ কমিউনালিজম। তার মানে কিন্তু মুসলিমদের পক্ষে বলব না এমনটা নয়। আমি হিন্দুদের পক্ষেও বলব, আবার মুসলিমদের পক্ষেও বলব। অর্থাৎ লাইনটা হচ্ছে ধর্মভিত্তিক। এই লাইন থাকলে সিপিএম এবং কংগ্রেস এর খুবই অসুবিধে হয়ে যাবে, যদি না তাঁরা তাঁদের মতো ঘর গোছাতে পারে।” তাঁর আরও সংযোজন, “সফট হিন্দুত্বের পাশাপাশি প্রয়োজনে হার্ড হিন্দুত্বের পথেও হাঁটবে তৃণমূল। এ ক্ষেত্রে আবার বিজেপির সমস্যা আছে। হিন্দু জাতীয়তাবাদের কথা বিজেপি বললেও সংখ্যালঘু নিয়ে খুব প্রশংসা তারা করতে পারবে না। কিন্তু, তৃণমূলের হিন্দু বলবে হিন্দু ভাল, মুসলিম বলবে মুসলিম ভাল। ওদের দুটো অপশনই রয়েছে। এটা সরাসরি সিপিআইএম বা কংগ্রেসও করতে পারবে না। কংগ্রেস ন্যাশনাল লেভেলে হিন্দুত্বের কার্ড খেলতে গিয়ে বারবার মুখ থুবড়ে পড়ছে। ওনারা আপাতত অর্থনীতির দক্ষিণপন্থা বাড়ে সবকিছুতেই মধ্যপন্থা থেকে সমাজতান্ত্রিক, বামপন্থী দলের দিকে সরে যাচ্ছেন। তার ফলে সফট হিন্দুত্বকে হ্যান্ডেল করতে পারছেন না। এখানেই রাজ্যে সুবিধে পাচ্ছে তৃণমূল। রামনবমী থেকে গণেশ পুজো সবই এখন কলকাতায় বেড়ে গিয়েছে। সোজা কথায় তৃণমূল তো হিন্দু ধর্মীয় সংস্কৃতিকেও সফলভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।”
আপাতভাবে সব অঙ্কের বিচারে তৃণমূল যে ছাব্বিশের খেলায় ফেভারিটের আসনে থাকছে তা বলছেন অনেকেই। তবে, হিন্দুত্বের জোয়ারে ভোটের হাওয়া নিজেদের পালে আনার চেষ্টায় বিজেপিও। রাজনীতির কারবারি থেকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যেও চলছে জোরদার আলোচনা। শুভময়বাবু তো সাফ বলছেন, “ভোটের আগে সব দলই ঘর গোছানোর চেষ্টা করবে। এবারও সেটাই হচ্ছে। তৃণমূলের যে রাজনৈতিক আধিপত্য এবং কৌশল, সে জায়গায় তারা বাংলার বাকি দলগুলির থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে। ফলে অনেকেই মনে করছেন ২৯৪ আসনের মধ্যে তৃণমূল চাইলে ২৫০টি আসনও পেয়ে যেতে পারে।” যদিও হুমায়ুন বলছেন, “রাজনীতি যেমন থাকবে, তেমনটি প্রত্যেকটা মানুষ তাঁর ধর্মকে বাঁচিয়ে রাখবে।”