ফিরে দেখা: 2025-এ কারা চাপে রাখল Trinamool Congress কে?

Trinamool Congress in 2025: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড থেকে একের পর এক হেভিওয়েটের জামিন থেকে শুরু করে শেষবেলায় এসআইআর— রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক চাপানউতোর কম হল না। কখনও বিরোধীরা চেপে ধরল শাসককে, আবার কখনও শাসক একহাত নিল বিরোধীদের। একনজরে দেখে নিন নজরে থাকল কোন কোন ইস্যু।

ফিরে দেখা: 2025-এ কারা চাপে রাখল Trinamool Congress কে?
২০২৫ সালে নজরে থাকল কোন কোন ইস্যুImage Credit source: TV 9 Bangla GFX

Dec 30, 2025 | 8:44 PM

কলকাতা: বছর ঘুরলেই বিধানসভা ভোট। তবে  উত্তাপটা ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছিল ২০২৫ সালের শুরু থেকেই। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড থেকে একের পর এক হেভিওয়েটের জামিন থেকে শুরু করে শেষবেলায় এসআইআর— রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক চাপানউতোর কম হল না। কখনও বিরোধীরা চেপে ধরল শাসককে, আবার কখনও শাসক একহাত নিল বিরোধীদের। স্নায়ুযুদ্ধ চলল পুরোদমে। কিন্তু এই এক বছরে এমন কিছু ঘটনা ঘটল যা ভোটমুখী বাংলায় স্নায়ুর চাপ রীতিমতো বাড়িয়ে দিল বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের। 

সুপ্রিম ধাক্কা 

চলতি বছরেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জোর ধাক্কা খায় রাজ্য সরকার। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২৫ সালের ৩ এপ্রিল নজিরবিহীন রায় দেয় দেশের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের ওই রায়ে পাকাপাকিভাবে চাকরি বাতিল হয়ে যায় এসএসসি-র প্রায় ২৬ হাজার চাকরি। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ নিয়োগ প্যানেলই খারিজ করে দেয়। এই রায়ের ফলে এক ধাক্কায় চাকরি হারান বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী। তারপর বারবার এই রায় পুর্নবিবেচনার আবেদন জানানো হলেও আর ফেরেনি চাকরি। 

কেষ্টর কষ্ট 

২০২৫ সালের মে মাসের শেষ দিকে বোলপুর থানার তৎকালীন ইন্সপেক্টর-ইন-চার্জ (IC) লিটন হালদারকে ফোন করে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠল বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, বাড়ির মহিলাদের নিয়েও কুকথা বলার অভিযোগ উঠল কেষ্টর বিরুদ্ধে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হল সেই ক্লিপ (সত্যতা যাচাই করেনি টিভি৯ বাংলা) । রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন তৈরি হতেই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে এ বার এফআইআর দায়ের করল পুলিশ। অন্য দিকে, তৃণমূলের তরফে অনুব্রতকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতেও বলা হল। নড়েচড়ে বসে জাতীয় মহিলা কমিশনও।  

ল কোথায় ল কলেজে? 

আরজি করের ঘটনার পর ফের হিন্দোল ওঠে কসবা ল কলেজের ঘটনায়। গত ২৫ জুন কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে গণধর্ষণের শিকার হন প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী। মূল অভিযুক্ত কলেজেরই প্রাক্তন ছাত্র বলে জানা যায়। তিনি আবার কলেজেরই অস্থায়ী কর্মী। তাঁর সঙ্গে জুড়ে যায় শাসকদলের নাম। জুড়ে যায় তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের নাম। তাঁকে অপরাধে মদত দিয়েছিল কলেজেরই দুই ছাত্র। জড়ায় এক নিরাপত্তা রক্ষীরও নাম। গোটা ঘটনায় ফের রাস্তায় নামে শহরের মানুষ। প্রশ্ন ওঠে রাজ্যের নারী নিরাপত্তা নিয়ে। দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতারও করে পুলিশ। 

চোখে জল মায়ের

উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী আলিফা খাতুনের জয় নিশ্চিত হতেই বেরিয়ে পড়েছিল তৃণমূলের বিজয় মিছিল। অভিযোগ সেই মিছিল থেকে ছোঁড়া বোমার আঘাতেই প্রাণটাই চলে গিয়েছিল ক্লাস ফোরের ছাত্রী তামান্নার। উপনির্বাচনের ফলপ্রকাশের দিনে নদিয়ার কালীগঞ্জের ওই ঘটনায় মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল পরিবার। এ ঘটনাতে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য-রাজনীতি। তামান্নার পরিবার বাম সমর্থক হওয়ায় শাসকের উপর চাপ বাড়াতে থাকে সিপিএম। এরইমধ্যে আবার তামান্নার মা-কে আর্থিক সাহায্য করতে গিয়ে মুখ পোড়ে ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের। চোখে জল নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সন্তানহারা মা। 

দল দেখল নতুন দল 

বারবার বিতর্কিত মন্তব্য, বারবার নিজেরই দলের নেতাদের চাঁচাছোলা আক্রমণ, বারবার তোপ! দিনের শেষে রেজাল্ট একটাই — সাসপেনশন। গোটা বছরই হুমায়ুন কবীরকে ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্কে রাজ্য রাজনীতিতে অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদল। বিভিন্ন সময় তাঁর মন্তব্য, কার্যকলাপ চাপ বাড়িয়েছে দলের অন্দরে। তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরেও এই বিতর্ক নিয়ে অসন্তোষ দেখা যায়। দল বারবার শৃঙ্খলা রক্ষার বার্তা দেয় এবং স্পষ্ট করে জানায়, দলীয় নীতির বাইরে গিয়ে কোনও মন্তব্য বা কাজ বরদাস্ত করা হবে না। একই সঙ্গে তৃণমূল নেতারা এও বলেন, হুমায়ুন কবীরের ব্যক্তিগত বক্তব্যকে তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থান হিসেবে দেখা ঠিক নয়। তবে দিনের শেষে হুমায়ুন ছিলেন হুমায়ুনেই। তোপ দেগেছেন খোদ দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। শেষে আবার খুন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেন। তারইমধ্যে সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ককে সামনে রেখে খুলে ফেললেন নতুন দল জনতা উন্নয়ন পার্টি।