কলকাতা : চিকিৎসকেরা বারবার বলছেন, করোনা আক্রান্ত হলে চোখ বন্ধ করে একমাত্র যে ওষুধের ওপর ভরসা করা যায়, তা হল প্যারাসিটামল। সবার চেনা এই ওষুধ করোনার ক্ষেত্রে কার্যকরী, এমনটা নয়। তবে করোনা আক্রান্ত হলে যে সব উপসর্গ দেখা দেয়, তাতে কার্যকরী প্যারাসিটামল। তাই সহজলভ্য এই ওষুধ কিনে ঘরে রেখে দিতে চান অনেকেই। কিন্তু, সংক্রমণ যখন নতুন করে দাপট দেখাচ্ছে, তখনই বাজার থেকে ‘উধাও’ প্যারাসিটামল।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ও দেখা গিয়েছিল এই একই ছবি। বাজারে পাওয়া যাচ্ছিল না প্রয়োজনীয় ওষুধ। আর চিকিৎসকেরা যখন তৃতীয় ঢেউয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছেন, তখন আবারও সেই একই সমস্যার সম্মুখীন সাধারণ মানুষ।
প্যারাসিটামল সরবরাহ হচ্ছে না ঠিক মতো। এটাই সমস্যার মূল কারণ বলে জানা যাচ্ছে। একদিনের নয়, এটা বেশ অনেকদিনের সমস্যা।
স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের দাবি, গত কয়েক মাস ধরেই প্যারাসিটামলের জোগান নিয়ে সমস্যা রয়েছে। কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় সরবরাহকারীরা ওষুধ জোগান দিতে চাইছিলেন না। তবে রাজ্যে তৃতীয় ঢেউ যখন দরজার কাছে হাজির, তখন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য স্বল্প মেয়াদী দরপত্র ডেকেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
এক ক্রেতা জানাচ্ছেন, শুধু প্যারাসিটামলই নয়, দোকানে ঘুরেও পাওয়া যাচ্ছে না অ্যাজিথ্রোমাইসিন, ডক্সিসাইক্লিনের মতো ওষুধ। কেউ বলছেন, প্যারাসিটামল ৫০০ পাওয়া গেলেও অমিল প্যারাসিটামল ৬৫০। সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল ৬৫০ খাওয়ারই পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। শুধু বাংলায় নয়, সারা দেশেই প্যারাসিটামলের অভাব তৈরি হয়েছে।
এক দিকে যেমন সরবরাহের ক্ষেত্রে একটা সমস্যা রয়েছে, অন্যদিকে, সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাব রয়েছে বলেও উল্লেখ করছেন চিকিৎসকেরা। ড. শিশির চৌধুরী এই প্রসঙ্গে বলেন, আগে থেকে ওষুধ কিনে রাখার কোনও প্রয়োজন নেই। হাসপাতালে ওষুধের অভাব নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, সাধারণ মানুষ কিছু হওয়ার আগেই এই প্যারাসিটামল কিনে বাড়িতে মজুত করে রাখছেন। তাতেই সমস্যা বাড়ছে। যাদের প্রকৃত প্রয়োজন, তাঁদের ওষুধ মিলছে না বলেই মনে করেন তিনি।
আরও পড়ুন : Corona Update: রাজ্যে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৮ হাজার, সুস্থতার হার ৯৫ শতাংশ
সাধারণত কোনও ব্যথা বেদনায় উপশমে অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল খাওয়া হয়। মাথা ব্যথা, গলার ব্যথা, দাঁতের ব্যথা কিংবা জ্বর, এ সব ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল খান অনেকে। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই সাধারণত এটি বিক্রি হয় এবং যে কেউ কিনতে পারেন। তবে বেশি ওষুধ খেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
আরও পড়ুন : Gangasagar Mela: কারা দেবেন গঙ্গাসাগরে পরিষেবা? অর্ধেক চিকিৎসকই করোনার কবলে!