কলকাতা: দমদম ও বিধান নগর স্টেশনের মাঝে রেল লাইনের ধারে বসে মোবাইলে পাবজি গেম খেলছিলেন। সে সময় পুলিশ তাড়া করলে রেললাইন ধরেই দৌড়তে থাকেন যুবক। উল্টোদিক থেকে ট্রেন চলে আসায় মর্মান্তিক পরিণতি (Patipukur Chaos)। ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় ওই যুবকের। ঘটনাকে ঘিরে বুধবার রাতে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় পাতিপুকুর এলাকায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ তাড়া করাতেই দিগভ্রান্তের মতো দৌড়াচ্ছিলেন যুবক। তাতেই পড়ে গিয়ে মৃত্য়ু। এরপরই সব ক্ষোভ আছড়ে পড়ে পুলিশের ওপর। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলতে থাকে ইটবৃষ্টি। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়। মৃত যুবকের নাম পুষ্পেন্দু তরতরি।
স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, কয়েকজন যুবক রেললাইনের পাশে বসে মদ্যপান করছিলেন। সেই সময় লেকটাউন থানার পুলিশ ধাওয়া দিলে পালাতে গেলে আচমকা ট্রেন চলে আসে। তখনই লাইনে পড়ে গিয়ে ট্রেনের তলায় চলে যান পুষ্পেন্দু। এর পরেই গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশকে লক্ষ্য করে লাইনের ধারের পাথর ছুড়তে থাকেন স্থানীয়রা। এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ব্যাপক উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয় এলাকায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় জিআরপি এবং লেকটাউন থানার পুলিশ।
ঘণ্টা দেড়েক ধরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকে। পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্তারা যান। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। তবে এই ঘটনার নেপথ্যে উঠে আসছে অন্য তত্ত্বও। প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের অভিযোগ, লাইনের ধারে বসে গেম খেলছিলেন কয়েকজন যুবক। ঠিক সেই সময় দু’জন সিভিল ড্রেসে ও ২ উর্দিধারী পুলিশ পুষ্পেন্দুদের কাছে জরিমানার টাকার দাবি করে। কিন্তু টাকা দিতে অস্বীকার করেন পুষ্পেন্দুরা। তাঁরা দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখনই ধাওয়া করে পুলিশ। সেই সময় ট্রেন এসে যাওয়ায় মর্মান্তিক মৃত্যু হয় পুষ্পেন্দুর। তারপরই রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রেল লাইনের ওপরে কোনও ঘটনা ঘটলে তা রেল পুলিশের অধীনে। লেকটাউন থানার পুলিশ কীভাবে রেলপুলিশের এলাকায় জরিমানা করতে পারে? স্থানীয়দের একজনের অভিযোগ, “পুলিশ তাড়া করেছে বলেই এরকমটা হল। না হলে ছেলেটাকে মরতে হত না।” পুলিশের তরফ থেকে অবশ্য এর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।