CPIM State Conference: ‘বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব! তরুণ প্রজন্ম সেভাবে এগিয়ে আসছে না’, জোটকে একা দোষ দিতে নারাজ কারাত

Prakash Karat: সূত্রের খবর, রাজ্য সম্মেলনে প্রকাশ কারাত বলেছেন, "এ রাজ্যে রেড ভলান্টিয়াররা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়ে যে কাজ করেছে তা প্রশংসার দাবি রাখে। তাঁদের কাজ অভাবনীয় ও নজিরবিহীন। সেই কাজকে আরও বিস্তৃত করতে হবে। জনগনের সমস্যার সমাধানে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।"

CPIM State Conference: 'বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব! তরুণ প্রজন্ম সেভাবে এগিয়ে আসছে না', জোটকে একা দোষ দিতে নারাজ কারাত
কী বলছেন প্রকাশ কারাত?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 16, 2022 | 11:55 PM

কলকাতা : সিপিআইএমের রাজ্য সম্মেলনের (CPIM State Conference) দ্বিতীয় দিনে জোট প্রসঙ্গে মুখ খোলেন প্রকাশ কারাত। দলীয় সূত্র মারফত এমনটাই জানা গিয়েছে। কারাত জোট প্রসঙ্গে বলেছেন, “জোট হয়েছিল দলের কৌশলগত লাইন মেনে। বিপর্যয়ের জন্য শুধুমাত্র জোটকেই দোষ দিয়ে লাভ নেই। বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে তৃতীয় বিকল্প হিসেবে আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করা যায়নি।” সেই সঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, “সদস্যপদের সময় তরুণ প্রজন্ম সে ভাবে এগিয়ে আসছে না। অবসর নীতি তো আমরা ঠিক করে দিচ্ছি। বাধ্যতামূলক ভাবে সরে যেতে বলা হচ্ছে, সেই জায়গায় কিছু নতুন মুখ নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু স্বতঃস্ফূর্তভাবে নতুনরা আসছে না। বিষয়টি উদ্বেগজনক।”

উল্লেখ্য, বাম-কংগ্রেস-আইএসএফের যৌথ মঞ্চ সংযুক্ত মোর্চা তৈরির ক্ষেত্রে যাঁরা সামনের সারিতে থেকে সব যোগাযোগের কাজ করেছেন, জোটকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে একজন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম। তাঁর দোসর ছিলেন কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান। দু’জন মিলে বার বার অধীরের মানভঞ্জনের চেষ্টা করেছেন সেই সময়, পীরজাদাকে কাছে টানতে ফুরফুরা পর্যন্ত গিয়েছিলেন। তারপর জোটের ভরাডুবির পর বিভিন্ন সময়ে তির্যক মন্তব্য শুনতে হয়েছে মহম্মদ সেলিমকে। তবে এবার রাজ্য সম্মেলনে প্রকাশ কারাতের এই বার্তা, দলকে নতুন করে ভাবাবে বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

রাজ্য সম্মেলনে রেড ভলান্টিয়ারদের(Red Volunteers) কাজের ভূয়সি প্রশংসা করলেন প্রকাশ কারাত। সূত্রের খবর, রাজ্য সম্মেলনে প্রকাশ কারাত বলেছেন, “এ রাজ্যে রেড ভলান্টিয়াররা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়ে যে কাজ করেছে তা প্রশংসার দাবি রাখে। তাঁদের কাজ অভাবনীয় ও নজিরবিহীন। সেই কাজকে আরও বিস্তৃত করতে হবে। জনগনের সমস্যার সমাধানে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।” সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, “তৃণমূলের আক্রমণ, স্বৈরতন্ত্র মোকাবিলায় লড়াই করছে দল। আর সেই লড়াইয়ে সফল হতে গেলে দলের শক্তি বাড়াতে হবে। সেটাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আমাদের নিজস্ব শক্তি বাড়াতে হবে।”

সারা দেশে এমনকী এ রাজ্যেও অন্য বাম দল ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে সংহত করতে হবে বলেও মনে করছেন প্রকাশ কারাত। এর পাশাপাশি দলীয় সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে, রাজ্য সম্মেলনে উপস্থিত প্রতিনিধিদের আলোচনায় উঠে এসেছে, সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর মধ্যে পক্ষপাতমূলক আচরণ করেন অনেকে। তাই মুখে গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতার কথা বারবার মুখে বলা হলেও তা ধাক্কা খাচ্ছে। অনেকেই খোলা মনে কিছু বলতে পারছেন না। আর বললে উচ্চতর ক্ষমতা সম্পন্ন নেতারা অনেক সময়ে অসন্তুষ্ট হন। তাতে কাজে সমস্যা হয়। অর্থাৎ, সিপিআইএমের অন্দরে গণতন্ত্রের অভাব রয়েছে, তা এই সব বক্তব্যে স্পষ্ট হচ্ছে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

উল্লেখ্য, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকে নজর রাখলে, রাজ্য়ে বামেদের হাল মোটেও ভাল নয়। গতবছর বিধানসভা নির্বাচনে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। বাম শূন্য় বিধানসভা গঠন হয়েছে। তবে সেই ধাক্কা সামাল দিয়ে খুব শ্লথ গতিতে হলেও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বামেরা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন পুরভোটের ফলাফল বিধানসভা ভোটের তুলনায় অনেকটাই ভাল করেছে বাম শিবির। তবে বামেদের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে, সভা সমাবেশে ভালই ভিড় টেনেছে বামেরা। কিন্তু সেই ভিড় ভোটবাক্স পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে পারছেন না নেতারা। রেড ভলান্টিয়ার্সের প্রভাবও ইভিএমে সেভাবে পড়েনি। কোভিডকালে রেড ভলান্টিয়ার্সরা যেভাবে কাজ করেছেন, তার ভূয়সি প্রশংসা করেছেন শহরের আম জনতা। কিন্তু তারপরও কেন এই হাল? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটি বড় অংশ মনে করছেন, রেড ভলান্টিয়ার্সদের শহরবাসী কোনও রাজনৈতিক দল নয়, বরং একটি এনজিও হিসেবেই গ্রহণ করেছে। এই পরিস্থিতিতে রেড ভলান্টিয়ার্সদের কাজকে আরও বিস্তৃত করার কথা ভাবছে বামেরা।

আরও পড়ুন : CPIM Candidates: উপনির্বাচনে প্রার্থীতে ‘সাবধানী’ বাম! পোড় খাওয়া রাজনীতিকের সঙ্গে কর্পোরেটের মিশেল