Primary School: নথি যাচাই না করেই ১২ জন শিক্ষক নিয়োগ! প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন আদালতে
আদালতে শুনানি চলাকালীন হাইকোর্ট প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের ভূমিকায় উষ্মা প্রকাশ করে। নথি না দেখে চাকরি দেওয়ার ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করে।
কলকাতা: প্রয়োজনীয় নথি না থাকা সত্ত্বেও এক ব্যক্তি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকের চাকরি পেয়েছিলেন। পরে ত্রুটি ধরতে পারে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। ওই শিক্ষককে টেটের প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে বললেও তিনি তা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ ওঠে। এরপরই তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেন তিনি।
আদালতে শুনানি চলাকালীন হাইকোর্ট প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের ভূমিকায় উষ্মা প্রকাশ করে। নথি না দেখে চাকরি দেওয়ার ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করে। কিন্তু পরে নথি না পেয়ে চাকরি থেকে বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়। এর পরই ওই অভিযুক্ত শিক্ষক আরও ১২ জনের নামের তালিকা আদালতের কাছে জমা দেন। অভিযোগ, এই ১২ জনের কারও প্রয়োজনীয় নথি না থাকা সত্ত্বেও তাঁরা এখনও চাকরি করছেন স্কুল শিক্ষক হিসাবে।
বিস্ময়কর এমন অভিযোগ পাওয়ার পর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় গোটা বিষয়টিকে জনস্বার্থ মামলা হিসাবে দেখার নির্দেশ দিয়ে যাবতীয় নথিপত্র ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের বেঞ্চে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন রেজিস্ট্রারকে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে মামলাকারী শিক্ষক-সহ ১২ জনের প্রত্যেকেই উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দা। প্রশ্ন উঠছে একটি জেলায় কী ভাবে এতজন ‘ভুয়ো শিক্ষক’ নিয়োগ হল। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে সংসদের ভূমিকা নিয়েও। ওই শিক্ষকের দায়ের করা অভিযোগ যদি সত্যি প্রমাণিত হয় তা হলে তা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার পরিকাঠামোর নড়বড়ে চেহারাটা তুলে ধরবে বলেই মনে করছেন শিক্ষামহলের একাংশ।
এ রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ নিয়ে ভুরি ভুরি অভিযোগ। প্রাথমিক থেকে উচ্চ প্রাথমিক কিংবা বৃত্তিমূলক শিক্ষাক্ষেত্র, এমনকী শিক্ষক-চিকিৎসক নিয়োগ নিয়েও চূড়ান্ত অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠেছে এ রাজ্যে। কিছুদিন আগেই মেডিক্যাল কলেজগুলিতে শিক্ষক-চিকিৎসক নিয়োগে ব্যাপক বেনিয়মের অভিযোগে তোলপাড় শুরু হয় রাজ্যে। এমডিএমএসদের এড়িয়ে এমবিবিএসরা নিয়োগ পেয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। চিকিৎসা সংগঠনের একাংশ দাবি করে, এমবিবিএসকে সুযোগ করে দিতেই এই পথ অবলম্বন করেছে নিয়োগ সংক্রান্ত বোর্ড। এ নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি।
প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে যে কত মামলা কলকাতা হাইকোর্টে জমা পড়েছে তার বোধহয় হিসাব রাখাই দুষ্কর। সেই মামলার সিংহভাগই নিয়োগে অস্বচ্ছতা সংক্রান্ত। সম্প্রতিও একটি মামলা দায়ের হয় যেখানে বলা হয়, প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক পদে উচ্চ প্রাথমিকের পার্শ্ব শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছে। কী ভাবে এই নিয়োগ হল? এই প্রশ্ন তুলে এবার কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয় মামলা। অন্যদিকে দুর্গাপুজোর আগেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এমনই দাবিতে রাজ্য জুড়ে আন্দোলনে নেমেছেন ২০১৪ সালের টেট (TET) উর্ত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা। পুজোর আগে নিয়োগ না পেলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীকে খুন করতে চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট কলেজের অধ্যাপকের