অরিত্র ঘোষ
কলকাতা: আরজি কর কাণ্ডে রাজ্যজুড়ে শোরগোল। তারই মধ্যে একটি শর্ট ফিল্ম রিলিজ হতে চলেছে। এই শর্ট ফিল্মে অভিনয় করেছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেত্রী রাজন্যা হালদার। আর পরিচালকের ভূমিকায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদেরই নেতা প্রান্তিক চক্রবর্তী। তাঁদের এই শর্ট ফিল্ম কি আরজি কর কাণ্ড নিয়ে? এই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করার পরই বড় পদক্ষেপ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের। প্রান্তিক ও রাজন্যাকে সাসপেন্ড করা হল। কিন্তু, কেন তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে, তা নিয়ে অভিমানী রাজন্যা ও প্রান্তিক।
শুক্রবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য এক প্রেস বিবৃতিতে জানান, রাজ্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতির পদ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে প্রান্তিক চক্রবর্তীকে। আর যাদবপুর-ডায়মন্ডহারবার জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতির পদ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে রাজন্যা হালদারকে। এই মুহূর্ত থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর বলে জানিয়েছেন তৃণাঙ্কুর। কিন্তু, কী কারণে সাসপেন্ড করা হল রাজন্যা ও প্রান্তিককে? তৃণাঙ্কুর জানিয়েছেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য দু’জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি তাঁদের নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত এই সাসপেনশন বজায় থাকবে।
তৃণাঙ্কুর এই সিদ্ধান্তের কথা জানানোর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি লিখেছিলেন, “আরজিকর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে একটি শর্টফিল্মের খবর এসেছে। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা তিলোত্তমার ঘটনার ন্যায়বিচার চাই। এই স্পর্শকাতর বিষয়কে প্রচারে ব্যবহার করার চেষ্টার আমরা বিরোধী।” একইসঙ্গে তিনি লিখেছিলেন, “যে বা যারা এর সঙ্গে জড়িত, খতিয়ে দেখে, কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতৃত্বকে বলা হয়েছে।” তার কয়েকঘণ্টা পরই রাজন্যা ও প্রান্তিককে সাসপেন্ড করার কথা জানানো হয় টিএমসিপির পক্ষ থেকে।
তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “একটি ছবিকে ঘিরে বিতর্ক হচ্ছে। অনেকে মনে করছে, তৃণমূল দল বা তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের তরফে করা। দল স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছে, এর সঙ্গে দল যুক্ত নয়। যেহেতু ওই দু’জন ওই শর্ট ফিল্মের সঙ্গে যুক্ত। তাই সাসপেন্ড করা হয়েছে। শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি বিষয়টা দেখছে। তবে এই শর্ট ফিল্ম নিয়ে দল কিছু জানত না।”
সূত্রের খবর, তৃণমূল নেতৃত্ব চায় না, এই আবহে শর্ট ফিল্মটি মুক্তি পাক। দলের তরফে রাজন্যা ও পরিচালককে সতর্ক করা হয়। তাহলে কি পিছিয়ে যাবে ছবি মুক্তি? প্রান্তিক বললেন, “এখনও পর্যন্ত ২ অক্টোবরই ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা। সেটা পিছিয়ে দেওয়া নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।”
দলের সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজন্যা হালদার বলেন, “আমাকে সিবিআই ডাকেনি। ইডির ঘরে যাইনি। খুন করিনি। আমার ঘরে টাকা পাওয়া যায় না। কোন ক্ষেত্রে দলবিরোধী, সেটা জানি না।” ২ তারিখে সিনেমাটি সবাইকে দেখার আহ্বান জানাবেন বলে জানালেন রাজন্যা।