কলকাতা: পুজোপর্ব মিটতেই খুলে যাবে রাজ্যের স্কুলগুলি (School Reopen)। আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে পঠনপাঠন হবে। এরপর ধীরে ধীরে বাকিরাও স্কুলে যাবে। কিন্তু গত কয়েকদিনে যে হারে রাজ্যে করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে, তা নতুন করে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে অভিভাবকদের মধ্যে। এ নিয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও কিছুটা চিন্তিত। তাঁদের পরামর্শ, কোনও রকম কোমর্বিডিটি থাকলে আপাতত স্কুলে না যাওয়াই ভাল।
দীর্ঘদিন ধরে এ রাজ্যে স্কুল না খোলা নিয়ে নানা মহলে ক্ষোভের সুর শোনা যাচ্ছিল। স্কুল খোলার দাবি নিয়ে পথেও নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। অভিভাবকরাও বার বার বলছিলেন, এ রাজ্যে সমস্ত কিছু খুলে গিয়েছে, এক স্কুল, দুই লোকাল ট্রেন ছাড়া। সোমবার উত্তরকন্যা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা আপাতত সে সমস্ত ক্ষোভ কিছুটা হলেও প্রশমিত করতে পেরেছে। ১৬ নভেম্বর থেকে (নবান্ন জানিয়েছে ১৫ নভেম্বর সরকারি ছুটি) খুলবে স্কুল।
কিন্তু এরই মধ্যে করোনার বাড়বাড়ন্তে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। কারণ, অনেকেই এখনও টিকা পায়নি। এই অবস্থায় স্কুলে ক্লাসরুমে গাদাগাদি করে একসঙ্গে বসা কতটা বিপজ্জনক হতে পারে তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। যদিও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামীর মত, “গত দু’বছর ধরে ছেলে মেয়েরা যে ঘরে বসে ছিল তা তো বলতে পারব না। আমরা পুজোয় যা দেখলাম, অনেক অল্পবয়সী ছেলে মেয়ে মা বাবা, বন্ধুদের সঙ্গে ভিড় প্যান্ডেলে ঘুরেছে। পুজোর কেনাকাটা করেছে। সেখানে যদি কোভিড না হয়ে থাকে, স্কুল কলেজে পড়াশোনা করতে গেলে আলাদা করে কোভিড হয়ে যাবে পৃথিবীতে এমন কোথাও ঘটেনি। আমাদের দেশেরও কোনও রাজ্যে ঘটেনি।”
তবে অনেকেরই স্কুল-কলেজ দূরে। ট্রেনে চেপে যেতে হয় অনেককেই। এদিকে লোকাল ট্রেন বন্ধ, স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে ওঠাও অত্যন্ত ঝুঁকির। তাঁদের জন্য অবশ্য এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ, আরও কিছুদিন তাঁরা স্কুলে না গিয়ে বাড়িতেই পড়াশোনা করুক। তবে কারও কো-মর্বিডিটি থাকলে সে যেন অবশ্যই ঘরে থাকে, সেই পরামর্শই দিচ্ছেন সুবর্ণ গোস্বামী।
সুবর্ণ গোস্বামীর কথায়, “যাদের শ্বাসের সমস্যা আছে, অ্যাজমা, হার্টের সমস্যা বা অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা রয়েছে তাদের এখনই স্কুলে না যাওয়াই ভাল। স্কুলগুলির দেখা উচিৎ, এই পরিস্থিতিতে যেখানে আমাদের রাজ্যে কোভিডের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী সেখানে এই পড়ুয়ারা স্কুলে যাবে কি না! যদিও এখনও কিছুটা সময় রয়েছে। সংক্রমণের গ্রাফ উঠছে না নামছে তা নজরে রাখা যাবে। তবে কো-মর্বিডিটি থাকলে অনলাইন পড়াশোনার অনুমতি দিক স্কুল।”
অন্যদিকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বিশেষজ্ঞ শুভ্রজ্যোতি ভৌমিকের মতে, “স্কুল তো খুলতেই হবে। বহু রাজ্যে স্কুল খুলেও গিয়েছে। তবে স্কুলে যারা কাজ করেন সকলের টিকার দুই ডোজ় থাকা খুবই দরকার। বাচ্চাদের টিকাকরণও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করানো দরকার। দু’ মাস হতে চলল জাইকোভ-ডি ভ্যাকসিন অনুমোদন পেয়েছে কিন্তু তার কোনও হদিশ নেই। কবে আসবে কেউ জানে না। সেটা এলে বাচ্চাদের টিকাকরণ হলে সুবিধা হবে। তবে এমন বহু দেশ আছে যারা বাচ্চাদের টিকা না দিয়েও স্কুল চালাচ্ছে। তাই স্কুল চালাতেই হবে।” একই মত বিশিষ্ট চিকিৎসক কুণাল সরকারেরও।
আরও পড়ুন: ১৬ নভেম্বর থেকে রাজ্যে খুলছে স্কুলের তালা, বড় ঘোষণা মমতার
আরও পড়ুন: School Opening: খুলছে স্কুল, আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ! ধাপে ধাপে স্কুলে যাবে বাকিরাও