School and College Reopening in West Bengal: খুলছে স্কুল, আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ! ধাপে ধাপে স্কুলে যাবে বাকিরাও
CM Mamata Banerjee: নবম শ্রেণি, দশম শ্রেণি, একাদশ শ্রেণি ও দ্বাদশ শ্রেণির পঠনপাঠন শুরু হবে ১৫ নভেম্বর থেকে। সঙ্গে কলেজেও শুরু হবে ক্লাস।
কলকাতা: অবশেষে রাজ্যে খুলতে (School Reopen) চলেছে স্কুল, কলেজ। সোমবারই উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক থেকে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। স্কুলগুলি যাতে সবরকম প্রস্তুতি সেরে রাখে সে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তকে বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বাগত জানিয়েছেন। সমর্থন করেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেন্ড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনও। শিক্ষাবিদ থেকে জনস্বাস্থ্য আধিকারিক, স্কুল খোলার পক্ষেই সকলের মত। তবে একই সঙ্গে কম বেশি উদ্বেগও শোনা গিয়েছে তাঁদের গলায়। কারণ আবারও রাজ্যে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন শুরু হবে স্কুলে। পাশাপাশি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হবে। পরে ধীরে ধীরে খুলবে বাকি ক্লাসগুলিও।
২ অগস্ট থেকে স্কুল খুলে গিয়েছে পঞ্জাবে। ছত্তীসগঢ়েও ২ অগস্ট থেকেই দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হয়েছে। অন্ধ্র প্রদেশে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে ১৬ অগস্ট থেকে। উত্তর প্রদেশও ১৬ অগস্ট থেকে ৫০ শতাংশ উপস্থিতি নিয়ে স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেছে। মহারাষ্ট্রে ১৬ জুলাই থেকে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির জন্য খোলা হয়েছে স্কুলের দরজা। ২৬ জুলাই থেকে গুজরাতে নবম-একাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুলে যাচ্ছে। মধ্য প্রদেশেও ২৬ জুলাই থেকে ৫০ শতাংশ পড়ুয়া নিয়ে চলছে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পঠনপাঠন। হরিয়ানায় ১৬ জুলাই থেকে নবম-দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হয়েছে। সব ঠিকমতো এগোলে ১৫ নভেম্বর থেকে খুলবে এ রাজ্যেরও স্কুলের তালা।
দেড় বছর পার করে স্কুল খুলতে চলেছে। আবারও ক্লাসরুমে হই হই, শিক্ষকদের বকুনি, টিফিনের ঘণ্টা, ক্লাস ওয়ার্ক, হোম টাস্ক। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় স্বভাবতই খুশি বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা। বর্ধমান টাউন স্কুলের প্রধান শিক্ষক তুষারকান্তি মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা মানসিক ভাবে তৈরি। আমাদের সমস্ত শ্রেণিকক্ষ স্যানিটাইজও করা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পুজোর পর শুনছি করোনাটা বাড়ছে। সরকার বললে তো স্কুল খুলতেই হবে। তবে করোনার প্রকোপ কতটা কী বাড়ছে তা দেখে সিদ্ধান্ত নিলে আমরা তৈরি। ইতিমধ্যেই আমরা বেশ কয়েকবার স্কুল স্যানিটাইজ করিয়েছি। দমকল, পুরসভার তরফে স্যানিটাইজ করে দিয়েছে। আমরাও নতুন মেশিন কিনেছি। আমরা স্কুলচত্বর স্যানিটাইজ করেছি।”
আসানসোলের মণিমালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রঞ্জনা রায় চৌধুরী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত আমরা সর্বান্তকরণে স্বাগত জানাচ্ছি। সেই গত বছর মার্চে বন্ধ হয়েছিল স্কুল। এখনও বন্ধ। পড়াশোনার সুযোগ থেকে ছেলে মেয়েরা বঞ্চিত হয়েছে। অনলাইন ক্লাস হলেও সকলে তার আওতায় আসতে পারেনি। স্কুল শুরু হওয়াটা এবার দরকার।”
মালদহ টাউন হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, “আমরা প্রস্তুতি সেরেই রেখেছি। পুজোর আগেই আমরা ইঙ্গিত পেয়েছিলাম এবার স্কুলের দরজা পড়ুয়াদের জন্য খুলতে চলেছে। তবে করোনা বাড়ছে এটা একটা চিন্তার। স্বাস্থ্য দফতর ও শিক্ষা দফতরের মধ্যে একটা আলোচনার মধ্যে দিয়ে নির্দিষ্ট গাইডলাইন থাকলে খুব ভাল হয়। কারণ স্কুল খোলাটা জরুরি। আজকের পড়ুয়ারাই তো কালকের ভবিষ্যৎ। ওদের পড়াশোনাটা খুব দরকার। আমরা ইতিমধ্যেই স্কুল স্যানিটাইজও করিয়েছি।”
অন্যদিকে ১৫ নভেম্বর থেকে স্কুল খোলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেন্ড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি পিন্টু পাড়ুই বলেন, ” স্কুল খোলার সিদ্ধান্তকে আমরা সম্পূর্ণভাবে সর্মথন করছি। কারণ, গ্রামীণ বাংলার ছাত্ররা কোনও ভাবেই অনলাইনে পড়াশোনা করতে পারছে না। ফলে ওদের শিক্ষার অধিকার খর্ব হচ্ছে। স্কুলছুটের সংখ্যাও বাড়ছে। আবার তাদের স্কুলমুখী করতে স্কুল খোলাটা খুবই প্রয়োজন।”
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতিও বলছে, ‘আমরা বার সরকারের কাছে আবেদন করছিলাম স্কুল খোলার জন্য। আমরা সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ ও স্বাগত জানাই। তবে স্কুল পরিকাঠামোর উন্নয়নের দিকেও একটু জোর দিক।’ যদিও মুখ্যমন্ত্রী ১৫ নভেম্বর স্কুল-কলেজ খোলার কথা জানালেও সোমবার বিকেলে নবান্ন থেকে জানানো হয়, এদিন সরকারি ছুটি রয়েছে। তাই ১৬ নভেম্বর থেকে স্কুলে যাবেন পড়ুয়ারা।
আরও পড়ুন: School Opening: ১৫ নভেম্বর থেকে রাজ্যে খুলছে স্কুলের তালা, বড় ঘোষণা মমতার