Jadavpur University: ‘উপাচার্যের ঘরে আমাকে মারল SFI,’ সুজনের পাশে বসে যাদবপুর চর্চায় প্রাক্তনী জয়প্রকাশ

Jadavpur University: আজও যাদবপুর নিয়ে গর্ববোধ করেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তাঁর দাবি, তাঁদের সময় ক্ষমতায় কংগ্রেস থাকলেও যাদবপুরে মূল লড়াইটা ছিল তদানন্তীন ‘বাম’ ডিএসএফের সঙ্গেই। লড়াইটা রাজনৈতিক আদর্শের জায়গা থেকে।

Jadavpur University: 'উপাচার্যের ঘরে আমাকে মারল SFI,' সুজনের পাশে বসে যাদবপুর চর্চায় প্রাক্তনী জয়প্রকাশ
চর্চায় জয়প্রকাশ-সুজনImage Credit source: TV-9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 18, 2023 | 5:07 PM

কলকাতা: প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা তার রন্ধ্রে রন্ধ্রে, মুক্তমনের চাষ অলিতেগলিতে, তার ‘ওয়ার্ল্ড ভিউয়ের’ চর্চা সর্বজনবিদিত। প্রবেশিকার কঠিন গণ্ডি পেরিয়ে যেখানে একবার সুযোগ পেলে গর্বে বুকটা ফুলে ওঠে পড়ুয়াদের। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University)। হ্যাঁ, বাংলার ১ নম্বর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা ভাবলেই এখন যেন লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে সেখানকার প্রাক্তনী থেকে বর্তমান পড়ুয়াদের। বাংলা বিভাগের নবাগত ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর রাতারাতি ‘খুনি’ তকমা পেয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়েছে পোস্টারে। বাসে-ট্রেনে-ট্রামে এখন আম-আদমির রক্তচক্ষুর সামনে রবীন্দ্রনাথ, ঋষি অরবিন্দের সেই যাদবপুর। নামজাদা সাহিত্যিক থেকে খ্যাতনামা শিল্পী, সমাজসেবক, অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, সমাজকে সবই দিয়েছে এই যাদবপুর। একসময়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছিল আজকের সব তাবড় তাবড় রাজনীতিকদের। তাঁদের মধ্যে কেউ এখন আছেন তৃণমূলে, কেউ বা সিপিআইএমে। ব্রিটিশ বিরোধী জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের আধারে গড়ে ওঠা যাদবপুরে রাজনৈতিক লড়াই, সংগ্রামের ইতিহাস বহু পুরনো। কিন্তু, র‌্যাগিং? তাও কী হয়ে আসছে যুগের পর যুগ ধরে? মানতে নারাজ জয়প্রকাশ, সুজনরা। রাজ্যে বাম জমনার শুরুর সময় থেকে দুজনেই পড়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। 

সুজনের ভিন্ন রাজনৈতিক মেরুতে থাকলেও তণমূল রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলছেন, “আমি নিজে যাদবপুরের প্রাক্তনী। মেইন হস্টেলেরও প্রাক্তনী। কিন্তু, এরকম ঘটনা আমাদের সময়ে কখনওই হয়নি। আমার সঙ্গে সেলিম-সুজনরা একমত হবে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শুরু হয়েছিল জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মাধ্যমে। ১৯০৬ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির সময় থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে ঋষি অরবিন্দ ঘোষের নামও জুড়ে আছে। আমি যখন পড়েছি তখন তিনটি ইউনিয়নই ছাত্র পরিষদের ছিল। আমি মনে হয় ক্যাম্পাসের শেষ একজন জাতীয়তাবাদী নেতা হিসাবে কাজ করেছি।” 

তবে টিভি-৯ বাংলার বিশেষ অনুষ্ঠানে এসে খোঁচা দিতে ছাড়েননি সিপিএমকে। সুজন চক্রবর্তীর পাশে বসেই বলেন, “১৯৭৭ সালের শেষে বাংলায় সরকার পরিবর্তন হয়। আটাত্তরের ৪ এপ্রিল আমাকে উপাচার্যের ঘরে প্রায় মেরে ফেলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হল। মারল এসএফআই। তদন্ত কমিটিও তৈরি হয়। সেই রিপোর্টের আজও কোনও ফয়শালা হয়নি। ওখানে যাকে দোষী হিসাবে দেখানো হয়েছিল তিনি পরবর্তীকালে ভারতের আইনসভার সদস্য হয়েছিলেন, তৎকালীন শাসকদলের হয়ে সাংসদ হয়েছিলেন রাজ্যসভার।”

অন্যদিকে আজও যাদবপুর নিয়ে গর্ববোধ করেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। যদিও তাঁর দাবি, তাঁদের সময় ক্ষমতায় কংগ্রেস থাকলেও যাদবপুরে মূল লড়াইটা ছিল তদানন্তীন ‘বাম’ ডিএসএফের সঙ্গেই। রাজনৈতিক বৈরিতা থাকলেও সৌজন্যতার কোনও অভাব ছিল না সেই সময়। কিন্তু, যে ঘটনা কদিন আগে ঘটে গিয়েছে তাতে লজ্জায় মাথা হেঁট হচ্ছে তাঁরও। টিভি-৯ বাংলার ‘স্বপ্ন-মৃত্যু-রাজনীতি’ অনুষ্ঠানে এসে বললেন, “জয়দা আমার সিনিয়র ছিলেন। উনি যখন পড়েছেন আমিও তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। জয়দা আমার তিন বছরের সিনিয়র ব্যাচে ছিলেন। আমি শুধু যাদবপুরের প্রাক্তনী নই, এসএফআইয়েরও প্রাক্তনী। এ ঘটনায় লজ্জায় মাথাটা আমারও হেঁট হয়ে যাচ্ছে। এরকম অবস্থা আমরা কখনওই দেখিনি। সেই সময় আমাদের মূল লড়াইটা ছিল ডিএসএফের সঙ্গে। ওদেরকে বাম-অতিবাম কী বলা যায় আমি জানি না। ডিএসএফের যে নেতা ছিল আমি তো ওর ঘরে থাকতাম। ওর ঘরে ঘুমিয়েওছি। একসঙ্গে ক্যাম্পেনেও গিয়েছি। আসলে তখন একটা গণতান্ত্রিক পরিসর ছিল। আমি যাদবপুরের জন্য গর্ববোধ করি। এটা একটা মুক্তমনা বিশ্ববিদ্যালয়। শুধু এই জন্য নয়। আরও নানা কারণ রয়েছে। আমাদের দেশ-বিদেশের বন্ধুরাও গর্ববোধ করি। আমি নিজে গর্ববোধ করে বলি আমিও যাদবপুরীয়ান। কিন্তু, বরাবরই দেখেছি যাদবপুরে লড়াইটা সবসময়েই বাকিদের সঙ্গে এসএফআইয়ের।”