SSC Recruitment Case: ১০ হাজারের শিক্ষকতার চাকরি করে কীভাবে প্রাসাদপম বাড়ি? এবার নজরে প্রসন্ন-ঘনিষ্ঠ
SSC Recruitment Case: জানা যাচ্ছে, সল্টলেক জিডি ২৫৩, প্রসন্ন রায়ের অফিসে যাতায়াত ছিল এই শিক্ষকের। আমিনের খোঁজ আর এখন মিলছে না।

কলকাতা: তিন তলা ঝা চকচকে কেতাদুরস্ত বাড়ি। স্কুলের প্যারা টিচার পদে কর্মরত থেকে কীভাবে এই বিলাশ বহুল বাড়ি? সিবিআই এবার খোঁজখবর করা শুরু করেছে এসএসসি দুর্নীতিতে ধৃত প্রসন্ন রায়ের ঘনিষ্ঠ স্কুলের সহকারী শিক্ষক আব্দুল আমিনকে নিয়ে। পাথরঘাটা স্কুলের সহকারি শিক্ষক আব্দুল আমিন প্রসন্নর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে জানা গিয়েছে। তাঁরও প্রাসাদপম বাড়ি দেখে স্তম্ভিত তদন্তকারীরা।
২০১৬ সালে পাথরঘাটা এলাকায় প্রাসাদপ্রম বাড়ি নির্মাণ করেন আমিন। সূত্রের খবর, বাড়িটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ১.৫ কোটি টাকা। কিন্তু ১০ হাজার টাকার চাকরি করে কীভাবে এত বড় বাড়ি বানিয়েছেন আমিন? সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই তদন্তকারীদের হাতে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ২০১৪ সাল থেকে পাথরঘাটা হাই স্কুলের প্যারা টিচার হিসেবে কাজ করতেন। কাজের সূত্রেই কোনওভাবে প্রসন্ন রায়ের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয়, এসএসসি দুর্নীতিতে আপাতত হাজতে যিনি। অভিযোগ, কয়েক লক্ষ টাকার বিনিময়ে আমিনও একাধিক ব্যক্তির চাকরি করিয়ে দিয়েছিলেন। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ১১৩টি চাকরি তিনি টাকার বিনিময়ে করিয়েছেন। তবে কি দুর্নীতির টাকাতেই তাঁর এই প্রাসাদপম বাড়ি? প্রভাব খাটিয়ে নিজের শ্যালিকারও চাকরি করে দেন তিনি। তিনি বর্তমানে ভগবানগোলা স্কুলের শিক্ষক, আর স্ত্রী নদিয়ার একটি স্কুলের শিক্ষক। এমনকি শ্যালিকার বিয়েতেও লাখ লাখ টাকা উড়িয়েছেন তিনি। সবই তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা যাচ্ছে।
প্রসন্ন গ্রেফতারির পর থেকেই আমিনকে সেভাবে দেখতে পাননি প্রতিবেশীরা। তাঁর বাড়ি কার্যত দুর্গসম। সমস্ত দরজা-জানালা-শাটার বন্ধ। বাইরে থেকে কাউকেই সেভাবে দেখা যায়নি। জানা যাচ্ছে, চাকরি দেওয়ার পাশাপাশি প্রসন্নর বিপুল সম্পত্তি ক্রয় করার পিছনেও আমিনের প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে। নিউ টাউন রাজারহাট জুড়ে প্রসন্নর একাধিক সম্পত্তি রয়েছে।
জানা যাচ্ছে, সল্টলেক জিডি ২৫৩, প্রসন্ন রায়ের অফিসে যাতায়াত ছিল এই শিক্ষকের। আমিনের খোঁজ আর এখন মিলছে না। প্রসন্ন গ্রেফতারির পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন তিনি। পাথরঘাটা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মৃণালকান্তি মহাপাত্র বলেন, “দুর্নীতিতে যুক্ত, সেটা আর কীভাবে জানব, আমাকে কি জানিয়ে করবে? আমি ২০০৬ সালে প্রধান শিক্ষক হিসাবে এখানে এসেছি। আমি যখন এসেছি, তখন দেখি ও প্যারা টিচার হিসাবে কাজ করছে। আমি যখন এসেছি, তখন এই পদটার সরকারি স্বীকৃতি ছিল না। আমি সেই জট সমাধান করি। ২০০৭ সাল থেকে সরকারিভাবে বেতন পেত। তার আগে ২হাজার টাকা করে পেত। ওর উন্নতি আমার চোখে পড়েছে, তবে কীভাবে হল সেটা জানি না। নিউটাউনে জমির দালালি করত, সেটাই ও বলত।”
নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া পার্থ ঘনিষ্ঠ প্রসন্ন কুমার রায়ও ছিলেন রং মিস্ত্রি। কয়েক বছরের মধ্যে নাটকীয় উত্থান। এখন কোটি কোটি টাকার মালিক প্রসন্ন। সিবিআই সূত্রের খবর, নিয়োগ দুর্নীতির টাকা খাটিয়ে একাধিক ব্যবসার মালিক প্রসন্ন। একাধিক জায়গায় হোটেল, গাড়ির ব্যবসা। নিউটাউনে তাঁর একাধিক ফ্ল্যাটের হদিশ মিলেছে। রাজারহাটে বাগানবাড়ি। কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকায় অভিজাত ভিলা। এই সবের হদিশ পেয়ে চক্ষুচড়ক গাছ সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের।
