Subodh Sarkar: ‘পুলিশ কি রসগোল্লা খাওয়াবে?’ জ্যোতি বসুকে টেনে ‘লাথির’ খোঁচা সুবোধের
Subodh Sarkar: কসবার ঘটনা প্রসঙ্গে কবির বক্তব্য, আগে পুলিশকে উত্ত্যক্ত করা হয়েছে। তাহলে পুলিশের কী করা উচিত? সে প্রসঙ্গে বাম আমলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী 'জ্যোতিবাবুর' উক্তিও উল্লেখ করেন তিনি।

কলকাতা: কসবায় চাকরিহারাদের বিক্ষোভ, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, লাঠিচার্জ, সর্বোপরি পুলিশের লাঠিচার্জ- বুধবার দিনভর তপ্ত ছিল বাংলা। কলমের খোঁচায় প্রতিবাদের ঝড় নেটিজেনদের। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল ‘পুলিশি অত্যাচারের’ ছবি! এবার মুখ খুললেন কবি সুবোধ সরকার। কবিতা লিখলেন তিনি। কবিতার নাম
‘লাথি’!
“বেরিয়ে আয়, কসবা নিয়ে কবিতা লেখ শালা, ভদ্রলোক হলে।” লিখব,তার আগে তাহলে যাদবপুর হোক।
যাদবপুরে হয়নি জ্বালা, কসবাতেই জ্বালা।
যাদবপুর ভিয়েতনাম ও ফেসবুক সেন্ট হেলেনা সেখানে অতি রব উঠেছে “কসবা নিয়ে কবিতা লেখ শালা”।
যাদবপুরে কোমরে মারা লাথিটা তবে লাত্থি নয়? কি করে তবে কসবাতেই সেই লাথিটা লাত্থি হয়?
কর্মসূচি ঠিক হয়েছে “আরও আগুন জ্বালা।”
কবির কলমে উঠে এল যাদবপুরে অধ্যাপককে লাথি মারার প্রসঙ্গও। প্রশ্ন তুললেন. যাদবপুরের লাথি নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠল না, তাহলে কসবার ঘটনায় কেন এত প্রশ্ন উঠছে? কবি বলেন, “যাদবপুরের লাথি একজন মাস্টারমশাইয়ের। অধ্যাপক, প্রবীণ অধ্যাপক, প্রাক্তন উপাচার্য, তাঁকে ওরা পিছন থেকে গিয়ে লাথি মারল। সেটার ভিডিয়ো এখনও পাওয়া যায়। তাহলে সে সময়ে কোনও প্রতিবাদ হল না? সে সময়ে প্রতিবাদটা করে একটা কবিতা লিখতে পারতো তো কেউ। যাঁরা আজ ফেসবুকে কবিতা লিখছে… লজ্জা লজ্জা বলছে!”
কসবার ঘটনা প্রসঙ্গে কবির বক্তব্য, আগে পুলিশকে উত্ত্যক্ত করা হয়েছে। তাহলে পুলিশের কী করা উচিত? সে প্রসঙ্গে বাম আমলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ‘জ্যোতিবাবুর’ উক্তিও উল্লেখ করেন তিনি। সুবোধ বলেন, “কসবা নিয়ে আমার কাছে যা খবর, আন্দোলন হতেই পারে। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়েছে, পুলিশকে মেরেছে, পুলিশের কলার টেনে মেরেছে, পাঁচিল টপকেছে, ভেঙেছে… এসব ভিডিয়ো পাওয়া যাচ্ছে। তবে লাথিটা আমার ভাল লাগেনি। তবে পুলিশকে এভাবে যদি মারে, তাহলে জ্যোতিবাবুর কথাই বলা হচ্ছে, পুলিশ কি রসগোল্লা খাওয়াবে?”
বুধবার চাকরিহারাদের প্রতিবাদের স্বার্থকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কবি। তিনি বলেন, “যে কোনও সময়ে আন্দোলন হতে পারে, কিন্তু এখন কেন? মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী নেতাজি ইন্ডোরে স্পষ্ট বলে দিলেন, আমার জীবন থাকতে, তোমাদের চাকরি যাবে না। আমি তাঁকে কেবল এই কারণেই মানবিক মুখ্যমন্ত্রী বলিনি। আপনারা দেখান, ভারতবর্ষের কোন মুখ্যমন্ত্রী গরিবের জন্য খেটে যাওয়া, বিপন্ন মানুষের জন্য কন্যাশ্রী থেকে লক্ষ্মীর ভান্ডার- ৯৭টা প্রকল্প গরিবের জন্য করেছেন, অর্থ অনটনের মধ্যে থেকেও।”
সামাজিক মাধ্যমে যারা কসবার ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন তাঁদের উদ্দেশে কবির বার্তা, “আমি বলব যাদবপুরের লাথিটা নিয়েও প্রতিবাদ করতে। একজন মাস্টারমশাইকে পিছন থেকে যখন লাথি মারে, তখন ফেসবুকে বিবেক কোথায় থাকে? যদি মুখে কথা বলে হয়, ডায়লগের বদলে হাতাহাতি আমি মানতে পারি না। আগে যাদবপুর নিয়ে কবিতা লিখুন, তারপর কসবা নিয়ে লিখবেন। একসময় বিবেক বন্ধক দেবেন, আরেকসময়ে উল্লাস করবেন, সেটা চলতে পারে না।”
‘লাথি’ কবিতার শেষ পংক্তি ‘আরও আগুন জ্বালা….’। এই অর্থের সারমর্ম বোঝাতে কবির বক্তব্য, এই আন্দোলনের পিছনে প্রোভোকেশন রয়েছে। কবির কথায়, ‘আরও আগুন জ্বালা… কসবার ঘটনা তারই একটা কর্মসূচি। কিন্তু সেই কর্মসূচি করে লাভ হবে না। মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর পাশে রয়েছে।” সুবোধ সরকারের স্পষ্ট বক্তব্য, “ছাব্বিশে দিদিই আসছেন…”

