Subrata Mukherjee: দলবদলুদের পাশে বসতে অস্বস্তি হত সুব্রতর, মনে করতেন এঁদের নৈতিকতা নেই
Subrata Mukherjee on Defection: "আমি একটা পার্টিতে আছি। তার পর প্রেস কনফারেন্সে বলে দিলাম, আমি ওই পার্টিতে আর নেই। যেভাবে আইনটা আছে, তা বাইপাস করে গিয়ে হাউসের মধ্যে গিয়ে যে পার্টি থেকে নির্বাচিত হয়েছে, সেখানে গিয়ে বসছে। আবার, বাইরে গিয়ে যে পার্টিতে নতুন করে জয়েন করল, সেখানে গিয়ে মিটিং- মিছিল করছে।''
কলকাতা: বিধানসভায় দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে সব্যসাচী দত্তের দলবদলে ‘কোনও মহাভারত অশুদ্ধ হয়নি’ বলে মন্তব্য রাজ্যের সদ্য প্রয়াত পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee)। যদিও একুশের ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে একের পর এক নেতার গেরুয়া শিবিরে যোগদান আবার ভোট মিটতেই তাঁদের ঘরওয়াপসি নাকি একেবারেই পছন্দ ছিল না তাঁর। এমনকি এহেন নেতাদের পাশে বসতেও অস্বস্তিবোধ করতেন তিনি। নিজেই সেকথা Tv9 বাংলায় ‘কথাবার্তা’ অনুষ্ঠানে বলেছিলেন সুব্রত।
বর্ষীয়ান নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় একসময় দলবদল করেছেন। কখনও আড়ালে- আবডালে কখনও আবার প্রকাশ্যে এ নিয়ে বিরোধীরা তাঁকে কটাক্ষ-ও করেছেন। দীর্ঘদিনের কংগ্রেস নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেস জন্ম নেওয়ার কয়েকবছর পরেই সেখানে যোগ দেন। সালটা ২০০০। আবার পরবর্তীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মতবিরোধ হলে কংগ্রেসেই ফিরে যান তিনি। বেশ কয়েক বছর কংগ্রেসে থাকার পরে ফের দলত্যাগ। এই পর্যায়ে অল্প কিছুদিনের জন্য শরদ পাওয়ারের দল এনসিপিতে ছিলেন সুব্রতবাবু। ঘড়ি চিহ্ন নিয়ে ভোটেও লড়েছিলেন। ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসেই ফিরে আসেন সুব্রতবাবু।
যদিও তাঁর ঘনঘন দলবদল নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষের জবাবে সুব্রতবাবুর দাবি ছিল তিনি কোনওদিন রাজনৈতিক আদর্শ থেকে বিচ্যূত হননি। তাঁর ব্যাখ্যা ছিল, কংগ্রেস থেকে তৃণমূল কিংবা এনসিপি করেছেন, বিজেপি বা সিপিএমে তো যোগ দেননি। সেই সুব্রতবাবু Tv9 বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন দলবদলুদের নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া।
Tv9 বাংলার ‘কথাবার্তা’ অনুষ্ঠানে সুব্রতবাবুকে প্রশ্ন করেছিলেন এডিটর অমৃতাংশু ভট্টাচার্য। তিনি প্রশ্ন করেন, “আপনার বিরোধী কারা সেসব তো বলা যাবে না? হ্যা সেব তো হয়েছে। কিন্তু দলে ফিরে আবার যখন সেই নেতারা পাশে বসেন, অস্বস্তি হয় না?” সুব্রতবাবুর জবাব ছিল, “অ্যাকচুয়েলি আমাদের পাশে বসতে পারে না। তবে এরা দলে ফিরলে অস্বস্তি হয়। ও যখন অন্য পার্টিতে গিয়েছে, তখন আমাদের সমালোচনা করেছে। আবার এখন প্রশংসা করছে। ওটা অ্যাডজাস্ট করতে একটু টাইম লাগে। ম্যান-টু-ম্যান ভ্যারিও করে।”
আবার দলে ফেরত আসা নেতাদের নাকি বিঁধতেও ছাড়তেন না তিনি। সুব্রতবাবুর কথায়, ‘সবাইকে বলি না। কাউকে কাউকে তো বলি।” তাহলে পরিষদীয় রাজনীতিতে এই সংস্কৃতি কি বন্ধ হওয়া দরকার? যে টিকিট পেলাম না অন্যদলে চলে গেলাম। জিতলাম বা হারলাম। আবার দু’দিন পরে ফিরে এলাম?
‘কথাবার্তা’-র সাক্ষাৎকারে সুব্রতের জবাব ছিল, “এই আইনটাই তো দুর্বল। আরও শক্তিশালী আইন হওয়া উচিত। আমি একটা পার্টিতে আছি। তার পর প্রেস কনফারেন্সে বলে দিলাম, আমি ওই পার্টিতে আর নেই। যেভাবে আইনটা আছে, তা বাইপাস করে গিয়ে হাউসের মধ্যে গিয়ে যে পার্টি থেকে নির্বাচিত হয়েছে, সেখানে গিয়ে বসছে। আবার, বাইরে গিয়ে যে পার্টিতে নতুন করে জয়েন করল, সেখানে গিয়ে মিটিং- মিছিল করছে।”
তিনি আরও বলেন, “আইনটা এত দুর্বল যে বাইরে কী করছে সেটা স্পিকারের কাছে গণ্য নয়। হাউসে বিরোধিতা করছে কিনা সেটাই ম্যাটার! ফলত হাউসে ওরা (বিরোধী) ওয়াক আউট করলে সে ওয়াক আউট করে যাচ্ছে। আর আইনটাই তাদের বাঁচাচ্ছে। তাই আইনটাই দুর্বল বলে মনে হয়। আর এদের নৈতিকতাও মনে হয় এ সব ব্যাপারে নেই।”