Suvendu Adhikari: ‘বাঁধ করেননি, ভাতায় খরচ করেছেন’, মমতার ‘ম্যানমেড’ তত্ত্ব খারিজ শুভেন্দুর
Suvendu Adhikari attacks Mamata Banerjee: বাংলার বন্যা পরিস্থিতির জন্য ফের 'ম্যানমেড' তত্ত্ব তুলে খাড়া করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। যার প্রেক্ষিতে পাল্টা মমতা সরকারকে কাঠগড়ায় তুললেন বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
কলকাতা: বাংলার বন্যা পরিস্থিতির জন্য ফের ‘ম্যানমেড’ তত্ত্ব তুলে খাড়া করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। যার প্রেক্ষিতে পাল্টা মমতা সরকারকে কাঠগড়ায় তুললেন বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সেচ দফতরের (Irrigation Department) ব্যর্থতা নিয়ে সরকারের কাছে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানালেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, ‘কোথায় খরচ করলে ভোট ব্যাঙ্কটাকে বাড়ানো যায়, এটাই এই সরকারের এজেন্ডা।’
এদিন শুভেন্দু অভিযোগ করেন, সরকার স্থায়ী পরিকাঠামোতে বিশ্বাস করে না। তাই বাংলায় এই বিপর্যয়। পাশাপাশি বাংলার প্লাবনের জন্য দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন বা ডিভিসি-কে যে দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তাও নস্যাৎ করেছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক। তাঁর অভিযোগ, ডিভিসি একক ভাবে জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় না। সরকারের তরফে সেচ দফতরের সচিব এবং পশ্চিমাঞ্চলের চিফ ইঞ্জিনিয়র থাকেন কমিটিতে। তাঁদের মতামত নিয়েই জল ছাড়া হয়।
শুভেন্দুর অভিযোগ, লোকসভায় বিপর্যয়ের পর রাজ্য সরকার উন্নয়নের জন্য স্থায়ী পরিকাঠামোতে বিশ্বাস করে না। খরচ করতে চায় না। উন্নয়নের খাতে বাজেট বরাদ্দ ছেঁটে ফেলা হয়েছে। শুধুমাত্র ভোট ব্যাঙ্ক তৈরির রাজনীতি করছে রাজ্যের শাসক দল কটাক্ষ করেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর খোঁচা ভাতা দিয়ে রাজনীতি করতে ব্যস্ত মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের শাসকদল। এই নীতির অনিবার্য পরিণাম হিসাবে দক্ষিণবঙ্গ বারবার বন্যার কবলে পড়েছে। সঙ্কটে পড়েছেন গরিব মানুষ।
উল্লেখ্য, দক্ষিণের প্লাবন (West Bengal Flood Situation) নিয়ে ডিভিসিকে তোপ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, না জানিয়ে জল ছাড়া হয়েছে। ঝাড়খণ্ডের বোঝা বইতে হচ্ছে বাংলাকে। ডিভিসি-র দিকে অভিযোগ তুলেছেন মমতা। কিন্তু শুভেন্দুর দাবি, তা-নয়। ডিভিসি জল ছাড়ার বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট কমিটি আছে। যার সদস্য রাজ্য সেচ দফতরের সচিব এবং পশ্চিমাঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিফ ইঞ্জিনিয়ার। তাঁদের মতামত ও আলোচনার প্রেক্ষিতেই জল ছাড়া হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীকে মাটিতে নেমে বন্যা দেখার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন শুভেন্দু।
শুভেন্দু বলেন, “সেচ দফতরের আমি ১১ মাস দায়িত্বে ছিলাম। যার মধ্যে ৮ মাস লকডাউন ছিল। তাই কোনও প্রকল্পে টাকা খরচ করতে পারিনি। আমি ছাড়ার পর ভোট পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেচমন্ত্রী দায়িত্বে ছিলেন।” অর্থাৎ, ঘুরিয়ে সরাসরি মমতার সরকারকেই বন্যা পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছেন বিরোধী নেতা।
এদিকে একই রকম অভিযোগ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। তাঁর কটাক্ষ, “নাচতে না পারলে উঠোন বাঁকা, ম্যানমেড বলে দিলে হলে হয়ে গেল! ম্যানমেড না রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা মেড তা আমরা জানতে পারছি না। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে বলছি যে, বাঁধ দিয়ে যে নদী পশ্চিমবঙ্গের প্রবেশ করুক না কেন সেই নদীর উপর যত বাঁধ আছে, সব বাঁধ এ জল ছাড়ার আগে রাজ্য সরকারের সাথে আলোচনা করে জল ছাড়তে হয়। রাজ্য যদি মনে করে ম্যান-মেড তাকে না জানিয়ে সব কিছু হয়েছে তাহলে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন না কেন?”
এদিকে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে কম জল ছেড়ে আসানসোল দুর্গাপুরকে আশ্বাস দিয়েছে ডিভিসি। সাধারণত ম্যান মেডবন্যা বলে তাদের বহুবার কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়। এবার টানা দুদিনের বৃষ্টির পর দুর্গাপুর ব্যারেজ তাদের থেকে বেশি জল ছেড়েছে, এই খতিয়ানকেই হাতিয়ার করল ডিভিসি। গত মঙ্গলবার ৪০০ মিমি বৃষ্টির পর আজ ডিভিসির মোট ছাড়া জলের পরিমান দেড় লাখ কিউসেক জল।