CM Mamata Banerjee: প্লাবনে সেই ‘ম্যান মেড’ তত্ত্ব, সেই ডিভিসিকেই দুষলেন মমতা! পাল্টা অধীর, ‘সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন না কেন?’
West Bengal Flood Situation: এর আগেও একাধিক বার বাংলার প্লাবনের কারণ হিসাবে ডিভিসিকে দায়ী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বার বার অভিযোগ করেছেন, না জানিয়ে ইচ্ছামতো জল ছাড়ে ডিভিসি।
কলকাতা: দক্ষিণের প্লাবন (West Bengal Flood Situation) নিয়ে ডিভিসিকে তোপ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee)। না জানিয়ে জল ছাড়া হয়েছে। ঝাড়খণ্ডের বোঝা বইতে হচ্ছে বাংলাকে। টিভি নাইন বাংলাকে এমনটাই জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঝাড়খণ্ডে যেহেতু অনেক বৃষ্টি হয়েছে ওরা আমাদের না বলে রাত ৩টের সময় আসানসোলে জল ছেড়ে দেয়। এদিকে আসানসোলের বৃষ্টির পরিমাণটাও প্রায় ৩৪৫ মিলিমিটার ছিল। আগে কখনও এত বৃষ্টি হয়নি। ফলে আসানসোল পুরো ডুবে যায়। একই সঙ্গে বাঁকুড়া, পুরুলিয়াও। তার পর কাল আবার ডিভিসি ১ লক্ষ কিউসেকের উপর জল ছেড়ে দিয়েছে। সমস্যা হচ্ছে, ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলে আমাদের ফেস করতে হচ্ছে, বিহারে বৃষ্টি হলে আমাদের ফেস করতে হচ্ছে। ওরা যদি ওদের ট্যাঙ্কগুলো, ড্যামগুলো একটু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখে, তা হলে কিন্তু অনেক জল জলাধারে ধরতে পারে। মাইথন, পাঞ্চেতে তো অনেক জল ধরার ক্ষমতা। কিন্তু ওরা দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে কোনও পরিষ্কার করে না। কোনও ড্রেজিং করে না। ফলে ওদের খেসারতটা আমাদের দিতে হচ্ছে। এটা খুব অন্যায়। আমি বার বার এর প্রতিবাদ করছি। যদি বৃষ্টির জলে আমাদের বন্যা হতো আমি বুঝতাম। বৃষ্টি বেশি হচ্ছে, আমি সামলাতাম। কিন্তু বন্যাটা হচ্ছে জল ছাড়ার জন্য। ম্যানমেড ফ্লাড।”
এর আগেও একাধিক বার বাংলার প্লাবনের কারণ হিসাবে ডিভিসিকে দায়ী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বার বার অভিযোগ করেছেন, না জানিয়ে ইচ্ছামতো জল ছাড়ে ডিভিসি। ফলে বাংলার একটা বড় অংশ প্লাবিত হয় পড়শি রাজ্যের জলে। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই তত্ত্ব মানতে নারাজ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সুকান্ত মজুমদারের কথায়, “জল ছাড়ার অনেক আগেই ডিভিসির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল। সেই চিঠি আমার কাছেও আছে। আমরা আগে থেকেই জানতাম এই ধরনের বক্তব্য আসবে। ডিভিসি তো জানিয়েছিল, যাতে লোক সরানোর যা পদক্ষেপ তা করা হয়।”
অন্যদিকে প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী আরও এক ধাপ এগিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন, “নাচতে না পারলে উঠোন বাঁকাই হয়। ম্যান মেড বলে দিলে হয়ে গেল? ম্যান মেড না রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা মেড তা আমরা জানতে পারছি না। একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে বলছি, কোনও বাঁধের জল রাজ্যে আসার আগে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে জল ছাড়তে হয়। রাজ্য যদি মনে করে ম্যান মেড, তা হলে তো সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন না কেন?”
অধীরের তোপ, “ইডি, সিবিআই-এর হাত থেকে বাঁচতে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন। অথচ এত বড় একটা অন্যায়, পশ্চিমবঙ্গকে ডুবিয়ে মারার জন্য বাঁধগুলো থেকে না জানিয়ে জল ছাড়া হচ্ছে, তাতে আদালতে যাচ্ছেন না? কমপক্ষে হাইকোর্টে তো যান! তাহলে আমরা জানতে পারি এটা মানুষের তৈরি বিপদ না এটা ভগবানের তৈরি বিপদ, না এটা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ব্যর্থতার বিপদ।”
প্রসঙ্গত, শনিবার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে খবর, আকাশপথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁকুড়া, হাওড়া, পুরুলিয়া ও হুগলি জেলার বিস্তীর্ণ প্লাবিত এলাকা ঘুরে দেখবেন।