
কলকাতা: কলকাতার নতুন আতঙ্কের নাম ‘হেলে পড়া বাড়ি’। বছরের শুরুতেই বাঘাযতীনে ফ্ল্যাট বাড়ি ভেঙে পড়া থেকে যে অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে তাতে সংযোজিত হয়েছে, বাগুইআটি, ট্যাংরা, সল্টলেক, তপসিয়া-সহ একাধিক জায়গার নাম। শহরের বুকে একাধিক হেলে পড়া বাড়ির হদিশ মিলেছে। তা নিয়ে আগেই মেয়রকে “হেলে পড়া” হাকিম বলে কটাক্ষ করেছিলেন। এবার তাঁর গ্রেফতারির দাবি তুললেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিধানসভা উত্তাল করারও দাবি তোলেন তিনি। কলকাতা পৌরনিগমের কর্মসূচিতে বললেন শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দু বলেন, “আমরা এতদিন শুনে এসেছি প্রাচীন বাড়ি, ঐতিহ্যের বাড়ি, রাজবাড়ি, রবি ঠাকুরের বাড়ি… এই প্রথমবার কলকাতা মহানগরীর ছাপ্পা মেরে চেতলা থেকে জেতা মুখ্যমন্ত্রীর আলালের দুলাল জনাব ফিরহাদ হাকিম একটা নতুন সংযোজন করেছেন, হেলে পড়া বাড়ি। নতুন সংযোজিত বাড়ি।”
শুভেন্দু পরিসংখ্যান দিয়ে জানান, KMDA এলাকাতে যেভাবে বেআইনি বিল্ডিং হয়েছে, যেভাবে ফ্ল্যাট অনুমোদিত হয়েছে, যেভাবে অনুমোদনহীন বিল্ডিং তৈরি হয়েছে, ট্যাক্স চালু করা হয়েছে, তার প্রতিবাদ করার সময় এসেছে। তিনি বলেন, “একাধিক জনস্বার্থের মামলা কলকাতা হাইকোর্টে পেন্ডিং রয়েছে। আমি আদালতকে আবেদন জানাব, এই মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য।” উল্লেখ্য, শহরের বুকে একের পর এক হেলে পড়া বাড়ি প্রসঙ্গে মেয়র ফিরহাদ হাকিম দাবি করেছিলেন, “সব হেলে পড়া বাড়ি বিপজ্জনক নয়। যদি স্ট্রাকচারাল স্টেবিলিটি দিয়ে দেয়, যদি স্ট্রাকচার ঠিক থাকে, তাহলে সেটা বিপজ্জনক নয়। কলকাতায় এরকম অনেক বাড়ি রয়েছে, একটু হেলে গিয়েছে।”
সে প্রসঙ্গ উত্থাপন করেই মুখ্যমন্ত্রী ও মেয়রকে খোঁচা দিয়ে শুভেন্দু বলেন, “লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন, গচ্ছিত অর্থ জড়িত। প্রধানমন্ত্রী যেখানে পাঁচ কোটি মানুষকে বাড়ির ছাদ দিয়েছেন, সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিম মাথার ছাদ কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত করেছেন। পাঁচ হাজারের বেশি জলাশয় ভরিয়ে অবৈধ নির্মাণ হয়েছে।” শুভেন্দু জানিয়ে রাখেন, ফিরহাদ হাকিমের গ্রেফতার আর মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে বিধানসভা উত্তাল করবে বিজেপি।
হেলে পড়া বাড়ির ভবিষ্যৎ পুনরুদ্ধারে শুভেন্দু দুটো দাবি পেশ করেন। তিনি বলেন, “আইআইটিকে দিয়ে কলকাতার সব বাড়ি অডিট করানো হোক। আর দ্বিতীয়ত, কলকাতাতে বিশেষ করে বিধাননগরে হাউজিং বিভাগে শয়ে শয়ে ফ্ল্যাট রয়েছে, সেখানে অন্তত ৩০০ তৃণমূল নেতাকে ফ্ল্যাট দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বার করে হেলে পড়া বাড়ির বাসিন্দাদের সরকারি ফ্ল্যাট দেওয়া হোক।”
যদিও এপ্রসঙ্গে মেয়র বলেন, “নেপোয় মারে দই। আছেন তো মাত্র ৩ জন কাউন্সিলর, আগে ৭৩ পেয়ে দেখাক, ৭৩-এর সাতও নেই, আছে তিন। কলকাতা পুরসভা যথেষ্ট কাজ করছে। যা বেআইনি হয়েছে, আগে হয়েছে।”