‘গৃহবন্দি থেকে মুক্তি চাই’, মানবাধিকার কমিশনকে চিঠি লিখলেন মইদুল
SSK Teacher Moidul Islam: মইদুলের দাবি, বিকাশ ভবনের সামনে শিক্ষিকাদের আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ এনেছে পুলিশ।
কলকাতা: শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক মইদুল ইসলামের পাশে দাঁড়ালেন কামদুনির মৌসুমি কয়ালরা। রবিবার মইদুলের সঙ্গে দেখা করতে যান তাঁরা। শিক্ষক নেতার এই লড়াইয়ে তাঁরা পাশে থাকার বার্তাও দিয়েছেন। অন্যদিকে এদিনই রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার কমিশনে নালিশ জানান মইদুল। কোনও কারণ ছাড়াই তাঁকে অন্যায় ভাবে হেনস্তা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।
তিনদিন ধরে গৃহবন্দি শিক্ষক নেতা মইদুল ইসলাম। রয়েছেন বেলেঘাটার চালপট্টি এলাকায় তাঁর শ্বশুরবাড়িতে। শুরু থেকে এই বাড়ি পুলিশ ঘিরে রেখেছে বলে সরব হয়েছেন মইদুল। রবিবার সেখানে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন কামদুনির মৌসুমি কয়ালরা।
মইদুলের বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় কালো পোশাকের এক ব্যক্তিকে দেখে সন্দেহ হয় মৌসুমিদের। প্রশ্ন তোলেন, “আপনি কি পুলিশের লোক? এখানে কী ব্যাপার?” পরিচয় পত্র দেখতে চাওয়া নিয়ে শুরু হয় গোলমাল। মইদুল প্রশ্ন তোলেন, হাইকোর্টে রাজ্য জানিয়েছে তাঁর বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন নেই। তা হলে এই ব্যক্তি কে? কী করছিলেন?
মইদুল বলেন, “আদালতে অ্যাডভোকেট জেনারেল জানাচ্ছেন, মইদুল ইসলামের বাড়িতে কোনও পুলিশ মোতায়েন নেই। অথচ আজ সত্তর ঘণ্টা হয়ে গেল আমার পুরো পরিবার গৃহবন্দি। আতঙ্কে আছি। কারণ এখানে ২৪ ঘণ্টা কুড়ি থেকে পঁচিশ জন পুলিশ এখানে ঘুরছে। আমরা তো সাধারণ নাগরিক। আমাদের তো অধিকার আছে। সব সময় এলাকায় পুলিশ ঘুরছে, নজরদারি চলছে, আমরা কি জঙ্গি? আমরা তো শিক্ষক।”
অন্যদিকে এদিন মইদুল ইসলামের শ্বশুরবাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে মৌসুমি কয়াল বলেন, “মইদুল ভাইয়ের সঙ্গে আমরা প্রথম থেকেই ছিলাম আছি থাকব। উনি তো কোনও অন্যায় করেননি। যে পাঁচজন শিক্ষিকা বিষ খেলেন, তাঁদের দক্ষিণ থেকে উত্তরে ট্রান্সফার করে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের রাজ্যে যে কোনও অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই কি তাঁকে যে কোনও জায়গায় বদলি করে দেওয়া হবে? ওনারা কী দোষ করেছিলেন?”
মৌসুমি অভিযোগ তোলেন, “আজ শিক্ষামন্ত্রী ওনাদের বিষ খেতে বাধ্য করেছিলেন। উনি তো একবার দেখা করতে পারতেন। উনি একবার কথা বলে নিলে তো আজ এই পরিস্থিতি হতো না।” মইদুলের দাবি, তাঁর ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়া বাকি। বাইরে পুলিশ! কী ভাবে তিনি টিকা নেবেন তা নিয়ে চিন্তিত। গৃহবন্দি অবস্থা থেকে মুক্তি চাইছেন শিক্ষক নেতা। সেই মুক্তির খোঁজেই এবার মানবাধিকার কমিশনকে চিঠি লিখলেন মইদুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাত ১১ টা নাগাদ নিউটাউন নর্থ থানা ও বেলেঘাটা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক মইদুল ইসলামের শ্বশুর বাড়িতে যায়। বেলেঘাটা ৫১/বি/ এইচ চালপট্টি এলাকায় এই ফ্ল্যাট তাঁর শ্বশুরের। বিষপানে শিক্ষিকাদের প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করতে চাইছে বলে অভিযোগ তোলেন মইদুল। এ নিয়ে আদালতেরও দ্বারস্থ হন তিনি। যদিও রাজ্যের বক্তব্য, গ্রেফতারি নয়, নোটিস দিতে এদিন রাতে পুলিশ তাঁর বাড়িতে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন: এ কোন বিপদ শিয়রে! শতাধিক শিশু জ্বরে কাবু, বাচ্চাদের ওয়ার্ডে বাড়ছে ভিড়
আরও পড়ুন: ‘পরিবার ন্যায় না পাওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে’, অভিজিতের শ্রাদ্ধবাসরে ‘শপথ’ বিজেপি নেতাদের