‘পরিবার ন্যায় না পাওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে’, অভিজিতের শ্রাদ্ধবাসরে ‘শপথ’ বিজেপি নেতাদের
Post Poll Violence: ভোটের দিন বিকেলেই পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে কাঁকুড়গাছির অভিজিৎ সরকারকে। গলায় পেঁচানো ছিল তার।
কলকাতা: দীর্ঘ কয়েক মাস লাশকাটা ঘরে পড়েছিল দেহ। শেষে ডিএনএ রিপোর্টে দেখে ভাইয়ের শ্রাদ্ধের ব্যবস্থা করেছেন দাদা। মায়ের সামনেই ছোট ছেলের শ্রাদ্ধ! মর্মন্তুদ এক চিত্র রবিবার অভিজিৎ সরকারের বেলেঘাটার বাড়িতে। ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’র (Post Poll Violence) বলি বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের শেষ কাজে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সহ একাধিক নেতা।
এদিনও দিলীপ ঘোষ (BJP Leader Dilip Ghosh) অভিযোগ করেন, “শাসকদল করেনি বলেই, সরকারি গুন্ডা ও তৃণমূলের লোকেরা নৃশংস ভাবে পিটিয়ে মেরেছে।” পরিবারেরও অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতেই খুন হয়েছেন অভিজিৎ। প্রমাণ ধামাচাপা দিতে পুলিশের সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে বলেও অভিযোগ পরিবারের। এই টানাপোড়েনেই গত কয়েক মাস ধরে মর্গে পড়েছিল অভিজিতের দেহ। তবে শেষমেশ ডিএনএ রিপোর্ট পাওয়ার পর দেহ দাহ এবং শ্রাদ্ধপর্ব সারেন অভিজিতের দাদা বিশ্বজিৎ সরকার।
অভিজিতের মতো অল্প বয়সী কর্মীর মৃত্যু মানতে পারছেন না পদ্মশিবির। এদিন সরকার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে তাঁর বাড়িতে যান রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতারা। দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমি আজ যেখানে দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললাম, সেখানে ছেলেটাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে পুলিশের সামনে। যে ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার বিবরণ আসছে এটা অকল্পনীয়। এই অবস্থা জানি না পশ্চিমবাংলায় কতদিন চলবে। এর পরিবর্তন চাই।”
অভিজিতের পরিবারের পাশে দাঁড়ান সজল ঘোষ, প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বিজেপি নেতারাও। তাঁর বাড়ি গিয়েছিলেন ভবানীপুর উপনির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালও। সেখানেই প্রিয়াঙ্কা বলেন, “আমি এখানে দাঁড়িয়ে প্রতিজ্ঞা করছি, যতক্ষণ না এই পরিবার ন্যায় পায়, লড়াই চলবে।”
‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ মামলায় সিবিআই চেয়ে আবেদন করেছিলেন বিজেপির এই দুঁদে আইনজীবী প্রার্থী। এদিন তিনি বলেন, “সরকার তো ওদের আছেই। কিন্তু এই একটা সুযোগ ভবানীপুরের মানুষ পেয়েছেন। তাঁরা এই সরকারকে সঠিক জবাব দিতে পারেন। আমি বলব, এ সুযোগ আপনারা ছাড়বেন না। একদম যথাযথ জবাব দিন। নন্দীগ্রাম পেরেছে। আপনারাও পারবেন।”
ভোটের দিন বিকেলেই পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে কাঁকুড়গাছির অভিজিৎ সরকারকে। গলায় পেঁচানো ছিল তার। পরিবারের দাবি, বিজেপি করার অপরাধেই খুন করা হয় তাঁকে। তারপর থেকে বিচারের আশায় থানা, আদালত সর্বত্রই ছুটেছে পরিবার। ভোটের পর রাজনৈতিক হিংসার পুরো তদন্তভার এখনও সিবিআই-এর হাতে।
তদন্তের স্বার্থে এতদিন অভিজিতের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। পরিবারও নিশ্চিত ছিল না এ দেহ তাদের ছেলেরই কি না। তবে সম্প্রতি ময়না তদন্ত ও ডিএনএ রিপোর্টের পরীক্ষা করে আদালত জানিয়েছে, চার মাস ধরে লাশকাটা ঠান্ডা ঘরে যে দেহটা পড়েছিল, ওটা কাঁকুরগাছির ছেলেটারই। অভিজিৎ সরকারেরই। সেই দেহ বৃহস্পতিবার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এদিনই তাঁর দাহকাজ সম্পন্ন করেন পরিবারের লোকেরা।
আরও পড়ুন: এ কোন বিপদ শিয়রে! শতাধিক শিশু জ্বরে কাবু, বাচ্চাদের ওয়ার্ডে বাড়ছে ভিড়