Kunal Ghosh Exclusive: সেন্সরশিপের কারণেই কি মুখ বন্ধ? কী বলছেন কুণাল?
Kunal Ghosh Exclusive: “দলের একটা অনুশাসন, পার্টি লাইন আছে। পুরোটা আবেগের উপর চলবে না।” সেন্সরশিপ নিয়ে বলতে গিয়ে অকপট কুণাল।
কলকাতা: কয়েকদিন আগে শোনা গিয়েছিল পার্থ ইস্যুতে কোনও প্রকার মন্তব্য করতে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে (Trinamool spokesperson Kunal Ghosh) ‘নিষেধ’ করা হয়েছে। সেন্সর করা হয়েছিল ১৪ দিনের জন্য। এদিকে নিয়োগ কেলেঙ্কারি মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) গ্রেফতারির পর গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। পরপর গ্রেফতারিতে কী বাড়ছে অস্বস্তি? এ বিষয়ে টিভি-৯ বাংলার ম্যানেজিং এডিটর অমৃতাংশু ভট্টাটার্যকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “আমি এ বিষয়ে একটি মন্তব্যও করব না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেত্রী। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেনাপতি। সিনিয়র-জুনিয়র মিলে তৃণমূল একটা সম্মিলিত পরিবার। ফলে নির্দিষ্টভাবে দুটি নাম নিয়ে আমার কোনও মন্তব্য নেই। তবে আমি মনে করছি তৃণমূল অনেক শক্তিশালী জায়গায় আছে। এসবে নির্বাচনে তৃণমূলের খুব একটা কিছু এসে যাবে বলে আমার মনে হয় না।”
তবে কী সেন্সরশিপের কারণেই কি মুখ বন্ধ? এ প্রসঙ্গে কুণালের অকপট উত্তর, “দলের একটা অনুশাসন, পার্টি লাইন আছে। পুরোটা আবেগের উপর চলবে না।” সেন্সরশিপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ ছিল সেটা তো শেষ হয়ে গিয়েছে। পরবর্তীকালে মুখপাত্র হিসাবে আমার যে কর্তব্য ছিল তা আমি মনপ্রাণ দিয়ে করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু একটা দলে যদি আমি থাকি সেখানে একটা শৃঙ্খলা থাকে। সেখানে একটা অনুশাসন থাকে। দলের নেতৃত্বের যদি মনে হয় আমার কোনও মন্তব্য দলের নীতির সঙ্গে ঠিক হয়নি তবে পার্টির অবশ্যই অধিকার আছে আমাকে সেন্সর করার।”
এদিকে পার্থ ইস্যুতে সেন্সরের পর কুণাল ঘোষকে নিয়ে নানা চাপানউতর শোনা গিয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। দলের ঊর্ধ্বে উঠে এ বিষয়ে কী ভাবছেন ব্যক্তি কুণাল? খোলামেলা ভঙ্গিতেই এ প্রশ্নের উত্তরে কুণাল বলেন, “আমি মানুষ, রক্ত মাংসের মানুষ। কোথাও হয়তো কোনও যন্ত্রণার কোনও প্রতিফলন বেরিয়ে যায়। সেই কারণে আপাতত আমি একটু ডিস্টার্বড। তাই আমি চেষ্টা করছি ব্যক্তি কুণাল ঘোষের জন্য পার্টির কুণাল ঘোষকে যাতে কোনও বিড়ম্বনায় পড়তে না হয়।” তিনি আরও বলেন, “তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। যতক্ষণ দল আমাকে এই জায়গায় রেখেছে ততক্ষণ তৃণমূলের মুখপাত্রের সঙ্গে ব্যক্তি কুণাল ঘোষের যন্ত্রণার কোনও কোনও মুহূর্তে একটা সংঘাত চলে আসছে। সেই জায়গায় দল নিশ্চয় মনে করতে পারে, দলের সেই অধিকার আছে যে ততক্ষণ পার্টির তকমা আছে ততক্ষণ আমাকে বলতেই পারে তোমার অধিকার নেই ব্যক্তিগত আবেগ দেখানোর।”
এদিন তৃণমূলের প্রতি নিজের দৃষ্টিভঙ্গি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মমতা-অভিষেকের প্রতি নিজের ভালবাসার কথা জানাতে ভোলেননি তিনি। তবে সারদা মামলায় গ্রেফতারির প্রসঙ্গ উঠতেই আবেগতাড়িত কুণালকে বলতে শোনা যায়, “আমাকে বিনাদোষে অনেকদিন নানারকম জিনিস সহ্য করতে হয়েছে। সারা পৃথিবীকে বলা হয়েছে আমি নাকি সারদার ৬ কোটি টাকা নিয়ে লাস ভেগাসে একমাস মোচ্ছব করেছি। সিপিএমের একজন নেত্রী সাক্ষীও দিয়েছেন। অনেক পরে ধরা পড়ল আমি কোনওদিন আমেরিকা যাইনি। সেটাও পৃথিবী জানল। তার অনেক পরে যিনি আসল কারিগর তিনি গ্রেফতার হলেন। ফলে আমার লাইফ স্টাইল, আমার ইমেজ, আমার স্বপ্ন সব তছনছ হয়ে গিয়েছে। তারপরেও বলছি মমতা দিদির সঙ্গে আমার এত ভালভাল স্মৃতি আছে, অভিমান হলেও সেগুলি থেকে বের হতে পারি না। আমি ভালবাসি তাঁকে। লোকে তো ঝগড়া হলে দল ছেড়ে যায়। আমি ভাবলাম তাই এখানেই থেকে দেখি না। অভিষেককে আগে অনেক ছোট দেখেছিলাম। এখন তো অভিষেক অনেক বড়। আমার বেশ ভাল লেগে গিয়েছে ছেলেটিকে। কিন্তু, সব মিলিয়ে তো পার্টি একটা। অনুশাসন, পার্টি লাইন আছে। পুরোটা আবেগের উপর চলবে না।”