TV9 Bangaliana: বঙ্গীয় নবজাগরণ কি সমাজের সমস্ত স্তরে পৌঁছতে পেরেছে?
TV9 Bangaliana: শিক্ষিত বাঙালি অশিক্ষিত বাঙালির মন বুঝে না, লিখেছিলেন স্বয়ং সাহিত্য সম্রাট।
বাঙালিয়ানা নিয়ে আলোচনায় অবশ্যই উঠে আসে বঙ্গীয় নবজাগরণের কথা। সে সময়টা ‘বেঙ্গল রেনেসাঁস’-এর। ১৮১৫ থেকে ১৯১৯ সাল পর্যন্ত সময়টা। একটা শতাব্দীতে জ্ঞান বিজ্ঞান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এত মনীষার জন্ম সত্যিই তুলনারহিত। অসাধারণ সব মানুষের জন্ম, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁদের অবিস্মরণীয় অবদান কালজয়ী করে রেখেছে একটা শতাব্দীকে। চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষের মতে এই বেঙ্গল রেনেসাঁস উচ্চবিত্ত ও শিক্ষিত মধ্যবিত্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। সেক্ষেত্রে ইউরোপিয়ান রেনেসাঁস অনেক বেশি সাধারণ মানুষের জীবনেও প্রভাব ফেলেছিল। এ প্রসঙ্গে গৌতম ঘোষ বলেন, “আমি ইতালির কোনও শ্রমজীবী মানুষ বা ফ্রান্সের কোনও ওয়ার্কারকে যদি লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি বা ভ্যান গগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি, অন্তত বলবেন নাম শুনেছেন। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে যদি যামিনী রায় বা অবন ঠাকুরের কথা বলা হয় সেই একই শ্রেণির মানুষকে তাঁরা কিন্তু হাঁ করে তাকিয়ে থাকবেন। এটাই প্রমাণ করে সর্বত্র সেই আলো পৌঁছয়নি।” এই বক্তব্যে সহমত বর্তমান প্রজন্মের সাংবাদিক-গবেষক অর্ক দেব।
ভাষাতত্ত্ববিদ পবিত্র সরকারও তা মানছেন। তাঁর কথায়, “কতগুলো ঘটনা সমান্তরাল আছে। বঙ্কিমচন্দ্রের বঙ্গদর্শন বের হল ১৮৭২-এ। সে বছরই আমাদের সাক্ষরতা হচ্ছে তিন শতাংশের একটু বেশি। অর্থাৎ মানুষের মধ্যে নিরক্ষরতা বিপুল। সেই সাক্ষরতা ১৯০১ সালে পৌঁছল পাঁচ শতাংশের একটু বেশি। ১৯১১ তে ছয় শতাংশের মতো। স্বাধীনতার বছর ১৭ শতাংশের মতো। এই সাক্ষরতার হারই বুঝিয়ে দিচ্ছে কত মানুষ অন্ধকারে ছিলেন। এটা বঙ্কিমচন্দ্র নিজেও লিখেছেন বঙ্গদর্শনের প্রথম সংখ্যায়। পত্রসূচনা বলে সম্পাদকীয়তে লেখেন, শিক্ষিত বাঙালি অশিক্ষিত বাঙালির মন বুঝে না।”
বাঙালিকে এখন ‘বং’ বলেই বেশি খ্যাত। বং মানে ভালো ফুটবল খেলে, অঙ্ক করে। কিন্তু ব্যবসায় ‘বং’ এর খুব বেশি ঐতিহ্য আছে তা খুব একটা শোনা যায় না। টিভি নাইন নেটওয়ার্কের সিইও বাঙালির ব্যবসায় নামডাক নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেন। বাঙালির একতা নিয়েও কথা হয় এদিনের আলোচনায়।