কলকাতা: কখনও আবাস তো কখনও একশোদিনের কাজ, নানা প্রকল্পে বারেবারেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লাগাতার বঞ্চনার অভিযোগে সরব হয়েছে তৃণমূল। কখনও মমতা তো কখনও অভিষেক, কখনও ঘাসফুল শিবিরের অন্যান্য নেতারা, সুর চড়িয়েছেন সকলেই। অন্যদিকে বিজেপি নেতারা বারবার তুলে ধরেছেন তৃণমূলের দুর্নীতির ‘উপখ্যান’। এবার একেবারে তথ্য দিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এদিন সাংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু বলেন, “তৃণমূলের মালিকরা বারেবারে বলে বিজেপির জমিদাররা ৪.৬ লক্ষ কোটি টাকা কর নিয়েছে। ১.৬ লক্ষ কোটি টাকার নায্য পাওনা আটকে রেখেছে। ভারত সরকার ২০১৮-১৯ সাল থেকে ২০২২-২৩ সাল পর্যন্ত ৬.৪৮ লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে দিয়েছে।” এরপরই তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণের ধার আরও বাড়িয়ে তিনি বলেন, “আসলে এরা আগে সেন্ট্রালের শেয়ার নিয়ে অ্যাকাউন্টে রেখে দিত। তার সুদের টাকায় খেলা-মেলা-দান-ভাতা এসব করতো। কেন্দ্র এটাকে আটকে দিয়েছে। ফাইন্যান্সিয়াল ডিসিপ্লিন চালু করেছে। যার মধ্যে এরা আসতে রাজি নয়। কারণ এটা তো আলাদা রাজ্য। এখানে আলাদা জাতীয় বাংলা সঙ্গীত রয়েছে, আলাদা পতাকা, আলাদা সংবিধান, পুজো-পার্বনের আলাদা নিয়ম।”
শুধু তাই নয়, চলমান প্রকল্পের পাশাপাশি আরও একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বাংলায় চালু না হওয়া নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন শুভেন্দু। পাশাপাশি বিদ্যমান প্রকল্পের কাজের বাস্তবায়ন নিয়েও প্রশ্ন তুলে দেন। খাতায় কাজ হলেও বাস্তবে কেব তার প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে না সেই প্রশ্ন তুলে তৃণমূলের উদ্দেশ্যে কটাক্ষবাণও ছুঁড়ে দেন। বলেন, “মোদিজীর কাছ থেকে ৮২ লক্ষের কাছাকাছি শৌচালয় পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু, কে পেয়েছে শৌচালয় কেউ জানে না। বাংলায় ৮৩ লক্ষের বেশি পিএম কিষাণ পাচ্ছে না। কেন পাঠানো হচ্ছে না নাম? কেন সেন্ট্রাল স্কিমগুলি চালু হচ্ছে না? আপনার কার্ড বাইরে চলে না কিন্তু আপনি কেন আয়ুষ্মান ভারত অন্তত বাইরে চালু করছেন না? বিশ্বকর্মা যোজনা নিয়ে ডিএম-দের দিয়ে মিটিং করাচ্ছেন না। তার কোনও উত্তর নেই।”
পাশাপাশি আবাস নিয়েও বেলাগাম আক্রমণ করতে দেখা যায় পদ্ম নেতাকে। পঞ্চায়েত মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সুর আরও চড়িয়ে বলেন, “বেলডাঙার এক প্রধান একা ১৭টি বাড়ি নিয়েছেন। কাবিলপুরের প্রধান সাগরদিঘির একা আত্মীয়-স্বজন মিলে ৩৫টি বাড়ি নিয়েছেন। কারণ পঞ্চায়েত মন্ত্রী নিজে দুর্নীতিগ্রস্ত। এরা বাইরে আছে এটাই আশ্চর্যের। এদের ভিতরে থাকার কথা। প্রত্যেকটা লোক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। দুর্নীতিগ্রস্ত রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে। বাংলা বঞ্চিত নয়। বাংলার জনগণকে তৃণমূল কংগ্রেস বঞ্চিত করছে।”