Ami Banglar Digital Joddha: রাজনীতির ময়দানে কি আরও বড় ভূমিকা পালন করতে চলেছে তৃণমূলের ‘ডিজিটাল যোদ্ধা’?

Ami Banglar Digital Joddha role: রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, সময়ের সঙ্গে প্রযুক্তি আরও উন্নত হবে। এখন থেকে প্রশিক্ষণ পেলে এই ডিজিটাল যোদ্ধারা নিজেদের সময়ের সঙ্গে আরও বেশি পেশাদার করে তুলতে পারবেন। সহজ হবে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছনো। পাশাপাশি বাংলার ঐতিহ্যের গর্ব হয়ে উঠতে পারবেন এই যোদ্ধারা। কন্টেন্ট ক্রিয়েটের মাধ্যমে নিজের প্রতিভা তুলে ধরা থেকে শুরু করে নিজস্ব নেটওয়ার্ক তৈরি করতে পারবেন তৃণমূলের এই ডিজিটাল যোদ্ধারা।

Ami Banglar Digital Joddha: রাজনীতির ময়দানে কি আরও বড় ভূমিকা পালন করতে চলেছে তৃণমূলের ডিজিটাল যোদ্ধা?
ভোট ময়দানে কি গুরুত্ব বাড়তে চলেছে 'ডিজিটাল যোদ্ধাদের'?Image Credit source: Social Media

| Edited By: সঞ্জয় পাইকার

Nov 07, 2025 | 11:02 AM

কলকাতা: বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের আর মাস ছয়েক বাকি। তবে রাজনৈতিক দলগুলি পুরোদমে ময়দানে নেমে পড়েছে। আর ছাব্বিশের নির্বাচনে বিরোধীদের মোকাবিলা করতে কি তৃণমূলের অন্যতম তুরুপের দাস হতে চলেছে ‘আমি বাংলার ডিজিটাল যোদ্ধা’? ভোট ময়দানে কতটা প্রভাব ফেলবেন তৃণমূলের ‘ডিজিটাল যোদ্ধারা’? শুধু কি ভোট ময়দানে শাসকদলের প্রচার করাই তাঁদের কাজ হবে? নাকি ডিজিটাল যোদ্ধারা আরও বড় ভূমিকা পালন করতে চলেছেন? এই কর্মসূচি শুরুর দিন কুড়ি পর কোথায় দাঁড়িয়ে ‘আমি বাংলার ডিজিটাল যোদ্ধা’?

গত ১৬ অক্টোবর তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ‘আমি বাংলার ডিজিটাল যোদ্ধা’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সেই কর্মসূচির পোস্টারে ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। তৃণমূলের ‘ডিজিটাল যোদ্ধা’ হওয়ার জন্য যুব সমাজকে আহ্বান জানানো হয়।

হঠাৎ কেন ‘ডিজিটাল যোদ্ধা’ কর্মসূচি চালু করলেন অভিষেক? আসলে ডিজিটাল যোদ্ধা কথাটার মধ‍্যেই লুকিয়ে আছে তার সারমর্ম। তৃণমূলের বক্তব্য, দেওয়াল লিখন, পোস্টারের থেকে বর্তমান প্রজন্মের কাছে মোবাইল আর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম বেশি জনপ্রিয়। আর সেই কারণেই ভোট ময়দানে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বেশি দরকার। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপি, সিপিএম-কে ডিজিটালি কাউন্টার করার জন্য যোদ্ধাদের দরকার বর্তমান বাংলায়।

এই মুহূর্তে তৃণমূলের ডিজিটাল যোদ্ধার সংখ্যা ঠিক কত?

গত ১৬ অক্টোবর এই কর্মসূচি চালুর পর লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে তৃণমূলের ডিজিটাল যোদ্ধার সংখ্যা। রাজ্যের শাসকদলের একটি সূত্রের দাবি, এখনও পর্যন্ত এই ডিজিটাল যোদ্ধার সংখ্যা ৪ লাখের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু হঠাৎ ডিজিটাল যোদ্ধার প্রযোজন কেন পড়ল শাসকদলের? প্রশ্ন উঠছে। শাসকদলের বক্তব্য, গত কয়েক মাসে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলায় কথা বললে হেনস্থার ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশি তকমা দেওয়া হচ্ছে। এমনকি, কোথাও কোথাও ক্যাম্পে আটকে রাখা হচ্ছে। অথচ ভারতীয় সংবিধানের অষ্টম তফসিলে স্বীকৃত সরকারি ভাষার মধ্যে অন্যতম বাংলাভাষা। ফলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাঙালিদের প্রতি ‘বিদ্বেষ’-কে প্রতিহত করতে ডিজিটালের যুগে সোশ্যাল মিডিয়া একমাত্র বড় প্ল্যাটফর্ম। সেখানে সুন্দর কন্টেন্ট তৈরি করে বাংলার গৌরব তুলে ধরার জন্যই এই ডিজিটাল যোদ্ধার ভাবনা। তৃণমূলের বক্তব্য, বাংলার মনীষী থেকে শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলনে বাঙালির অগ্রণী ভূমিকা, সতীদাহ থেকে শুরু করে বাল্য বিবাহ বন্ধ, বিধবা বিবাহ শুরু, সবই এই বাংলার মাটিতে ঘটেছে । কিন্তু এ রাজ্যের শাসকদলের অভিযোগ, বিজেপি বাংলা ভাষাকে অপমান করতে গিয়ে জাতীয় সঙ্গীত এবং জাতীয় গীতের রচয়িতাকে অসম্মান করছে। আর এখানেই শুরু হচ্ছে ডিজিটাল যোদ্ধার কাজ। যোদ্ধা হিসাবে নাম লেখানোর পরে শুরু হচ্ছে ধাপে ধাপে তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে সুন্দর কন্টেন্ট লেখার কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া। প্রশিক্ষণ কে দিচ্ছে? তৃণমূলের ভোটকুশলী সংস্থা আইপ‍্যাক। প্রশিক্ষণ শেষে এই ডিজিটাল যোদ্ধারা সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরছেন বাংলার গৌরবগাথা। আবার কেউ বাংলা ভাষা কিংবা বাংলাকে অপমান করলে পাল্টা তার জবাব দিতেও কী করে হবে, সেটাও শেখানো হচ্ছে এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে। কন্টেন্ট ক্রিয়েটর, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার এবং ডিজিটাল অ‍্যাম্পিফ্লায়ার, এই তিনটি উদ্যোগের মাধ্যমে ডানা মেলে চলেছেন ডিজিটাল যোদ্ধারা।

তবে শাসকদলের লক্ষ্য শুধু আসন্ন নির্বাচনে ভোট বাড়ানো নয়, ডিজিটাল যোদ্ধাদের আরও বড় পরিসরে কাজে লাগাতে চায় তারা। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, সময়ের সঙ্গে প্রযুক্তি আরও উন্নত হবে। এখন থেকে প্রশিক্ষণ পেলে এই ডিজিটাল যোদ্ধারা নিজেদের সময়ের সঙ্গে আরও বেশি পেশাদার করে তুলতে পারবেন। সহজ হবে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছনো। এছাড়া কন্টেন্ট ক্রিয়েটের মাধ্যমে নিজের প্রতিভা তুলে ধরা থেকে শুরু করে নিজস্ব নেটওয়ার্ক তৈরি করতে পারবেন এই ডিজিটাল যোদ্ধারা। আবার ব‍্যক্তিগত এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলা এবং তৃণমূলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া তো আছেই।

তৃণমূল বলছে, প্রতিদিন ডিজিটাল যোদ্ধার সংখ্যা বেড়ে চলেছে। শাসকদলের হাত শক্ত করতে ডিজিটাল ময়দানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চলেছেন তাঁরা। এখন দেখার, এই ডিজিটাল যোদ্ধার সংখ্যা কোথায় গিয়ে পৌঁছয়।