
কলকাতা: ২০২৫-কে বিদায় জানিয়ে ২০২৬-কে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত সবাই। ২০২৫ সালে রাজ্য রাজনীতিতে ঘটনার ঘনঘটা দেখা গিয়েছে। এসআইআর প্রক্রিয়া ঘিরে রাজনৈতিক তরজা বেড়েছে। আবার ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর নতুন দল গঠন করেছেন। নতুন বছরে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তা নিয়ে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। নেতারা পরস্পরকে তোপ দেগে চলেছেন। নানা মন্তব্য করছেন। রাজনীতির বাইরেও কোনও নেতার মন্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় শোরগোল পড়ে। ২০২৫-কে বিদায় জানাতে গিয়ে ফিরে দেখা যাক সেই সব মন্তব্য।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী মন্তব্য-
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সালের ২২ জুলাই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে ইডি। তিন বছর ৩ মাসের বেশি জেলে কাটে তাঁর। এই বছরের নভেম্বরে জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন তিনি। ২০২২ সালে পার্থর সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। নভেম্বরে জামিন পাওয়ার পর অর্পিতাকে নিয়ে পার্থকে প্রশ্ন করা হয়। তাতে পার্থ বলেন, “হ্যাঁ, অর্পিতা আমার বান্ধবী। আমি সদর্পে স্বীকার করছি ও আমার বান্ধবী। যার বউ আছে, তার যদি দু’টো বান্ধবী থাকতে পারে, আমার বউ নেই, আমার একটা বান্ধবী থাকতে পারে না? এতে অসুবিধার কী আছে?” পার্থর এই মন্তব্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় শোরগোল পড়ে।
ছাব্বিশের নির্বাচনের সুর বেঁধে মমতার মুখে ‘ফাটাফাটি খেলা হবে’-
একুশের নির্বাচনে সাড়া ফেলেছিল ‘খেলা হবে’ স্লোগান। দু’শোর বেশি আসন পেয়েছিল ঘাসফুল শিবির। ছাব্বিশের নির্বাচনেও কি ‘খেলা হবে’ স্লোগান রাজনীতির ময়দান কাঁপাবে? ডিসেম্বরের শেষে এসে ছাব্বিশের নির্বাচনের সুর বেঁধে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘খেলা হবে’ স্লোগান নিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “দারুণ খেলা হবে এবার। ফাটাফাটি। এবারকার খেলার নাম হবে ফাটাফাটি। আর বিজেপির জন্য থাকবে কী, সেটা আপনারা নিজেরা বানিয়ে নিন। আমি বললে খারাপ লাগবে।”
হুমায়ুন কবীরের বাবরি চ্যালেঞ্জ-
তিনি ভরতপুরের বিধায়ক। তৃণমূল তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করেছে। তবে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বাবরি মসজিদ তৈরি নিয়ে নিজের সিদ্ধান্ত অনড় থেকেছেন হুমায়ুন কবীর। গত ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। একইসঙ্গে তাঁর চ্যালেঞ্জে, “আমি হুমায়ুন কবীর বলছি, মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদ তৈরি হবেই। কেউ আটকাতে পারবে না।” বাবরি মসজিদ তৈরি নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও বেড়েছে। এরইমধ্যে ‘জনতা উন্নয়ন পার্টি’ নামে নতুন দল গড়েছেন হুমায়ুন।
মমতাকে ‘প্রাক্তন’ করার চ্যালেঞ্জ শুভেন্দুর-
নতুন বছরে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তবে পঁচিশেই রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে রাজ্যে। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী লাগাতার নিশানা করে চলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। একুশের নির্বাচনে নন্দীগ্রামে মমতাকে হারিয়েছিলেন শুভেন্দু। সেকথা উল্লেখ করে বিভিন্ন সভায় তিনি বলেন, “নন্দীগ্রামের মানুষ যেমন মমতাকে পরাজিত করেছেন, তেমনই ২০২৬ সালে সারা পশ্চিমবঙ্গ তাঁকে প্রাক্তন করবে।” মমতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তাঁর বক্তব্য, “৪ মাস পর মমতা মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন না। আপনাকে প্রাক্তন করাবই।”
বাংলায় ‘ভোট ডাকাতি’ নিয়ে অধীর-
তিনি প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি। সেই অধীররঞ্জন চৌধুরী বাংলায় ভোট চুরির অভিযোগ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “পশ্চিমবঙ্গে ভোট চুরি হয় না। পশ্চিমবঙ্গে ভোট ডাকাতি হয়। আমরা যারা নির্বাচন করি, তারা এটা জানি। পঞ্চায়েত ভোট করতে দেয় না, সমবায় ভোট করতে দেয় না, পৌরসভার ভোট করতে দেয় না। মৃত ব্যক্তি ভোট দেয়। আরও অনেক ব্যাপার রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ভোট মানেই জটিলতা।” তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে।
মীনাক্ষীর ‘পকেটে রাখা’ মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক তরজা-
তিনি সিপিএমের বর্তমান প্রজন্মের নেত্রী। চলতি বছরের মে মাসে সেই মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের এক মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক তরজা বেড়েছিল। রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহকে আক্রমণ করে মীনাক্ষী বলেছিলেন, “উদয়ন গুহদের আমরা পকেটে রাখি।” কোচবিহারের দিনহাটা উদয়ন গুহদের বাপের সম্পত্তি নয় বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। যার জবাবে উদয়ন বলেছিলেন, “৩৪ বছরে টাকা খেয়ে খেয়ে পকেট এত বড় হয়েছে যে উদয়ন গুহকে পকেটে রাখা যায়।”