‘মুখ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রীর হলফনামা নেব না’, সাফ জানালেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি
দেরি হওয়ায় এই হলফনামা নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বিচারপরি রাজেশ বিন্দল।
কলকাতা: গত মাসে নারদ মামলায় (Narada Case) চার নেতার গ্রেফতারির পর থেকেই কলকাতা হাইকোর্টে চলছে মামলা। মঙ্গলবার ছিল শুনানি। এই মামলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের (Malay Ghatak) নাম যুক্ত করা হয় সেই মামলায়। আর এই দুই মন্ত্রীর হলফনমা নিয়ে ফের একবার ক্ষোভ প্রকাশ করল হাইকোর্ট। মঙ্গলবার সাফ জানিয়ে দেওয়া হল তাঁদের হলফনামা গ্রহণ করা হবে না। এ দিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল জানিয়েছেন, সময় মতো না দেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রী কারও হলফনামা নেবে না হাইকোর্ট। হলফনামা না নেওয়ার অর্থ হল তাঁদের উত্তর না শুনেই রায় দেবে আদালত। হলফনামা রেকর্ডেও রাখবে না কোর্ট। আগে একবার এই বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিল বৃহত্তর বেঞ্চ।
সিবিআই-এর পক্ষে সলিস্যিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, যারা হলফনামা দেরিতে দিয়েছে তার বিরোধিতা করলেও উত্তর চাই। বিচারপতি বিন্দল বলেন, ‘যারা দেরিতে হলফনামা দিয়েছেন কারও হলফনামা নিচ্ছি না। রাজ্য, মুখ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী কারও হলফনামা নেবে না বৃহত্তর বেঞ্চ।
অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা এ দিন বলেন, ‘সিবিআই আদালতের মাননীয় বিচারক কোথাও উল্লেখ করেননি যে বিক্ষোভের কারণে কোনও বাধা তৈরি হয়েছে। ১৭ মে’র নির্দেশ খুব গুরুত্বপূর্ণ। একজন বিচারক যখন কিছু লেখেন তখন সেটাই চূড়ান্ত। জুডিশিয়াল অর্ডারের ব্যাখ্যা বা অনুবাদ করা নজিরবিহীন। সিবিআইয়ের আচরন দেখুন। তারা যখন হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন তখন তারা আদালতকে জানাতে বাধ্য যে অভিযুক্তরা ইতিমধ্যে জামিনে আছেন। সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে নোটিস জারি করা হোক।
আরও পড়ুন: চিনারপার্কের হোটেলে দু’দিন, শহরে কি জাল বিছিয়েছিল গ্যাংস্টার ভুল্লাররা? চাঞ্চল্যকর তথ্য তদন্তে
বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন বলেন, ‘বিপক্ষের অনুপস্থিতিতে রায় গ্রহণ করার প্রবণতা এখন দেখা যাচ্ছে। এর ফলে মানুষ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সিবিআই ম্যানুয়ালের ১১ নম্বর অধ্যায় উল্লেখ করে সিদ্ধার্থ লুথরার দাবি যে সিআরপিসি-র ৪১ এ অনুসরণ করতে সিবিআই বাধ্য। সিদ্ধার্থ লুথরা বলেন, যে সিবিআইকে নিজেদের আভ্যন্তরীণ নিয়মাবলী মেনে চলতে হবে।
নারদ মামলা:
গত ১৭ মে নারদ মামলা নাটকীয় মোড় নেয়। অভিযুক্ত চার হেভিওয়েট নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিন নিম্ন আদালত তাঁদের জামিন দেয়। এরপর সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যায় সিবিআই। পরে হাইকোর্টেও ওই চার নেতার অন্তবর্তী জামিন মিলেছে। তবে, মামলা অন্যত্র সরানোর আবেদনের শুনানি চলছে হাইকোর্টে। সিবিআইয়ের হয়ে সওয়াল করছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। অভিযুক্তদের হয়ে লড়ছেন কংগ্রেস সাংসদ তথা আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি।