Winter Travel Place List: দক্ষিণে শীতের ডাক, এই ঠান্ডায় ঘুরে আসুন দক্ষিণ ভারতের সেরা ৫ শৈলশহর
উত্তর ভারতের পাহাড়ে যখন বরফের রাজত্ব, তখন দক্ষিণ ভারতের শৈলশহরগুলি নিজেদের মেলে ধরে এক অন্য রূপে। মনোরম জলবায়ু, ঘন সবুজ প্রকৃতি আর ঐতিহাসিক সংস্কৃতির মিশেলে এই স্থানগুলি হয়ে ওঠে শীতকালীন ভ্রমণের জন্য আদর্শ গন্তব্য।

শীতকাল মানেই কুয়াশার চাদর, নরম রোদ আর পাহাড়ের হাতছানি। উত্তর ভারতের পাহাড়ে যখন বরফের রাজত্ব, তখন দক্ষিণ ভারতের শৈলশহরগুলি নিজেদের মেলে ধরে এক অন্য রূপে। মনোরম জলবায়ু, ঘন সবুজ প্রকৃতি আর ঐতিহাসিক সংস্কৃতির মিশেলে এই স্থানগুলি হয়ে ওঠে শীতকালীন ভ্রমণের জন্য আদর্শ গন্তব্য। চলুন, জেনে নেওয়া যাক এই শীতে দক্ষিণ ভারতের কোন ৫টি শৈলশহর আপনার ‘বাকেট লিস্টে’ থাকা উচিত।
১. উটি (Ooty), তামিলনাড়ু: ‘পাহাড়ের রানি’
দক্ষিণ ভারতের শৈলশহরগুলির মধ্যে উটি সবচেয়ে বেশি পরিচিত। শীতকালে এখানকার তাপমাত্রা বেশ আরামদায়ক থাকে, যা পর্যটকদের জন্য আদর্শ।
শীতের আকর্ষণ: নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এখানকার হালকা শীত উপভোগ করার মতো। বিখ্যাত নীলগিরি পর্বত রেলওয়ে (Nilgiri Mountain Railway)-তে যাত্রা করা এবং উটি হ্রদে নৌবিহার এখানকার প্রধান আকর্ষণ। কুয়াশায় মোড়া পাইন বন এবং চা বাগানগুলি এই সময়ে আরও রহস্যময় হয়ে ওঠে।
যা দেখবেন: উটি লেক, বোটানিক্যাল গার্ডেন, দোদাবেট্টা পিক, পাইকারা জলপ্রপাত।
২. মাদিকেড়ি (Madikeri), কর্ণাটক: কুর্গ বা কোডাগু-এর হৃদয়
‘ভারতের স্কটল্যান্ড’ নামে পরিচিত কুর্গ বা কোডাগু জেলার প্রাণকেন্দ্র হল মাদিকেড়ি। এই স্থানটি তার ঘন কফি বাগান, মMলার সুবাস এবং সবুজের স্নিগ্ধতার জন্য বিখ্যাত।
শীতের আকর্ষণ: শীতকালে মাদিকেড়ির বাতাস থাকে শীতল ও সতেজ। কুয়াশার মধ্য দিয়ে হাঁটা এবং কফি বাগানে সময় কাটানোর অভিজ্ঞতা হয় অসাধারণ। এখানকার ঐতিহ্যবাহী কোডাগু সংস্কৃতি এবং এখানকার মানুষদের আতিথেয়তা পর্যটকদের মন ছুঁয়ে যায়।
যা দেখবেন: অ্যাবি ফলস (Abbey Falls), রাজা’স সিট (Raja’s Seat)-এ সূর্যাস্ত দেখা, ওমকারেশ্বর মন্দির, তিব্বতীয় গোল্ডেন টেম্পল (বাইলাকুপ্পে)।
৩. কোডাচাদ্রি (Kodachadri), কর্ণাটক: ট্রেকপ্রেমীদের স্বর্গ
এটি কেবল একটি শৈলশহর নয়, এটি ট্রেকিং এবং অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। পশ্চিমঘাট পর্বতমালার এই পর্বতশৃঙ্গ ঘন জঙ্গলে ঘেরা এবং এটি কোডাচাদ্রি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের একটি অংশ।
শীতের আকর্ষণ: গ্রীষ্মের তীব্র গরমের বদলে শীতকালে এই ট্রেইল ধরে ট্রেকিং করা অনেক সহজ। চূড়ায় পৌঁছানোর পর আরব সাগরের উপর সূর্যাস্তের দৃশ্য এক কথায় অবিশ্বাস্য। ধর্মীয় গুরুত্বের কারণে এটি তীর্থযাত্রীদেরও প্রিয় স্থান।
যা দেখবেন: কোলাহলমুক্ত ট্রেকিং রুট, সর্বজ্ঞপীঠ মন্দির, হিদলুমানে জলপ্রপাত।
৪. নন্দী হিলস (Nandi Hills), কর্ণাটক: বেঙ্গালুরুর নিকটবর্তী আশ্রয়
বেঙ্গালুরু থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নন্দী হিলস দ্রুত ভ্রমণের জন্য আদর্শ। এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে এবং টিপুর সুলতানের গ্রীষ্মকালীন আবাসস্থল এখানেই ছিল।
শীতের আকর্ষণ: এখানকার প্রধান আকর্ষণ হল খুব ভোরে পাহাড়ের উপর থেকে কুয়াশার সমুদ্র দেখা। শীতল বাতাস এবং ভোরের মনোরম দৃশ্য দিনের শুরুটা করে তোলে সতেজ। হাইকিং, সাইক্লিং এবং প্যারাসেলিংয়ের সুযোগও এখানে রয়েছে।
যা দেখবেন: টিপু’স ড্রপ, নন্দী মন্দির, ব্রহ্মাশ্রম।
৫. বাবা বুদান গিরি এবং মুল্লায়ানাগিরি (Baba Budan Giri & Mullayyanagiri), কর্ণাটক: চিকমাগালুরের মুকুট
এগুলি কর্ণাটকের চিকমাগালুর জেলার দুটি বিখ্যাত পর্বতশৃঙ্গ। মুল্লায়ানাগিরি হল কর্ণাটকের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এবং বাবা বুদান গিরি কফির ইতিহাস বহন করে।
শীতের আকর্ষণ: এই সময়ে এখানকার কফি বাগানগুলি শান্ত ও মনোরম থাকে। মুল্লায়ানাগিরির চূড়া থেকে চারপাশের বিস্তীর্ণ দৃশ্য এই শীতে মনকে শান্তি দেবে। ট্রেকপ্রেমীরা এখানে ট্রেকিং উপভোগ করতে পারেন। এই অঞ্চলে শীতকালে আবহাওয়া সবচেয়ে বেশি আরামদায়ক থাকে।
যা দেখবেন: মুল্লায়ানাগিরি চূড়া, বাবা বুদান গিরি দরগা, মানেকধারা জলপ্রপাত, শীতল জলপ্রপাত।
এই শীতে প্রকৃতির স্নিগ্ধতা এবং শান্ত পরিবেশ উপভোগ করতে আপনি বেছে নিতে পারেন এই পাঁচটির মধ্যে যে কোনও একটি শৈলশহর। ব্যাগ গোছান এবং দক্ষিণ ভারতের এই স্বর্গীয় গন্তব্যগুলির অভিজ্ঞতা নিতে বেরিয়ে পড়ুন।
