Airline Fashion: শাড়ি থেকে স্নিকার্স, যে ভাবে ফ্যাশান বিপ্লব এসেছে এয়ারলাইন্সে
Fashion And Style: ট্র্যাডিশন্যাল পেন্সিল স্কার্ট আর ব্লেজার নয়, এয়ারহোস্টেসদের পোশাক এবার আরও স্মার্ট। আরও অনেক বেশি আরামদায়ক ...
একটা সময় ছিল যখন ভারী সিল্কের শাড়ি, বন্ধ গলা ব্লাউজ, মুক্তোর মালা আর টাইট করে বাঁধা খোঁপাতেই দেখা মিলত কেবিন ক্রুদের। তাঁদের ব্লাউজের কাট সাধারণ মানুষের মনেও এতখানি প্রভাব ফেলেছিল যে সেখান থেকে এয়ারহোস্টেস ব্লাউজ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ১৯৭০ সালে এয়ার ইন্ডিয়ায় এয়ারহোস্টেসদের পোশাকে একটু অন্য ট্যুইস্ট আনতেই প্রথম ঘাঘরা চোলি ব্যবহার করা হয়। কাট টু ২০২২, কেবিন ক্রু-দের পোশাকে একরকম ফ্যাশান বিপ্লব করে ফেলেছে আকসা এয়ার। রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার উদ্যোগে আসছে নতুন এয়ারলাইন আকসা এয়ার। আর শুরুর থেকেই কেবিন ক্রুদের পোশাকেও থাকছে বিশেষ চমক। শাড়ি কিংবা ড্রেস নয়, মহিলাদের জন্য এবার বেছে নেওয়া হয়েছে কমলা রঙের শর্ট বন্ধগলা কুর্তা। ব্ল্যাক ট্রাউজার্সের সঙ্গে মানানসই ব্ল্যাক স্নিকার্স।
দেশীয় ট্র্যাডিশন সব সময় মেনে চলার দায়ভার ছিল এয়ার ইন্ডিয়াক উপরে। যে কারণে তাঁদের কেবিন ক্রুদের সব সময় শাড়িতেই দেখা যেত। এয়ার ইন্ডিয়া আর এয়ার সাহারার কর্মীদের জন্য পোশাকের ডিজাইন করেছিলেন রিতু বেরি। তাঁর কথায়, তখন ট্র্যাডিশন্যাল পোশাকই ছিল শেষ কথা। তবে বর্তমানে এই ধারণা একেবারেই বদলে গিয়েছে। এখন যে কোনও পোশাকে আরমই হল শেষ কথা। সেই বিষয় মাথায় রেখেই আসছে পোশাক ভাবনা। যে মেটেরিয়ালে পোশাক বানানো হচ্ছে তা যাতে স্ট্রেচেবল হয় সেদিকেই আগে খেয়াল রাখা হচ্ছে।
১৯৪৬ সালে টাটা এয়ার লাইন্স যখন এয়ার ইন্ডিয়া হল তখন অধিকাংশ এয়ারহোস্টেসকেই দেখা যেত পশ্চিমের পোশাকে। স্কার্ট, জ্যাকেট আর অ্যাঙ্গেলড টুপিতে। সেই সময় অধিকাংশ বিমান সেবিকাই ছিলেন অ্যাংলো ইন্ডিয়ান বা পার্সি। ১৯৬০ সাল থেকে এয়ার ইন্ডিয়া পোশাক হিসেবে শাড়ির ব্যবহার শুরু করে। সেই সময় থেকে পর্যটকদেরল কাছে দেশীয় ঐতিহ্য তুলে ধরার বিশেষ পদক্ষেপ নেয় এয়ার ইন্ডিয়া। নিজেদের সংস্থার স্বার্থেই তখন থেকে শুধুমাত্র গ্ল্যামারাস মহিলাদেরই সুযোগ দেওয়া হত। পোশাক হিসেবে তাঁদের জন্য থাকত সরকারী উদ্যোগে তৈরি বিশেষ কাঞ্জিভরম শাড়ি। ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পায় এয়ার ইন্ডিয়া। এরপর থেকে তাদের বভাবনাতেও আসতে থাকে বদল। নিজেদের এই শাড়িকে তারা আর্ন্তজাতিক স্তরে নিয়ে যেতে চাইল। যেখান থেকে মহারাজা ব্র্যান্ডের ভাবনা। আর এই ব্র্যান্ডের মুখ ছিল তাদের এয়ার হোস্টেসরাই।
১৯৭০ সালে যখন ফার্স্ট-ক্লাসের কাস্টমারদের জন্য মহারাজা লাউঞ্জ পরিষেবা শুরু হল তখন এয়ারহোস্টেসদের একেবারেই রাজস্থানি পোশাকে সাজানো হত। ঘাঘরা চোলি, রুপোর গয়না, মাঙ্গটিকা থেকে বিখ্যাত রাজস্থানি জুতি- এই সবটাই থাকত। যে সব কেবিন ক্রু-দের বয়স তুলনায় বেশি ছিল তাঁদের পোশাক ছিল শর্ট কুর্তা আর চুড়িদার। এমনকী তাঁদের ওই ৩ মাসের ট্রেনিং পর্বেও শেখানো হত কী ভাবে সুন্দর করে শাড়ি ড্রেপ করতে হয়। ১৯৯২ সালে দিল্লির একটি সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার জন্য বিশেষ লাল-নীল শেডের সালোয়ার কামিজ ডিজাইন করে। এরপর প্রচুর এয়ারহোস্টেস তাঁদের নিজেদের সুবিধের জন্য শাড়ি ছেড়ে এই পোশাক পরতে শুরু করেন। তবে যেকোনও বিশেষ অনুষ্ঠানে বা যদি বিমানে কোনও বিশেষ অতিথি থাকতেন তাহলে তাঁদের ট্র্যাডিশন্যাল কোনও সিল্ক শাড়িই পরতে হত।