Ramdan Special Recipe: বাড়িতেই বানান ‘সিরাজে’র মত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর চিকেন হালিম! রইল তার সহজ রেসিপি
Chicken Haleem Recipe: হালিম তৈরির জন্য দরকার ধৈর্য। শুধু ধৈর্য থাকলেই ঘরেই বানানো সম্ভব প্রকৃত স্বাদের হালিম। রমজান মাসে, কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় হালিম তৈরি হয়। বিশেষ করে সিরাজ রেস্তোরাঁর হালিম হল সর্বশ্রেষ্ঠ।
বিশ্বের অধিকাংশ ইসলামিক দেশগুলিতে ও ভারতের বিভিন্ন জায়গায় জিভে জল আনা ও পুষ্টিকর হালিম (Haleem) তৈরি করা হয়। তবে হায়দরাবাদি হালিমের (Hyderabadi Chicken Haleem) স্বাদ অন্যান্য হালিমের থেকে একেবারেই আলাদা। ঘি ও মশলার গুণে এখানকার হালিমের স্বাদ ভোলবার নয়। অনেকেই বলেন প্রকৃত হালিমের স্বাদ পেতে হায়দরাবাদি হালিমই হল শ্রেষ্ঠ।
আসলে মটন দিয়ে তৈরি রেসিপিকে বলা হয় হালিম। আর চিকেনের সঙ্গে তৈরি করা হলে তাকে হরিস বলে। তবে এই নামে অনেকেই অভ্যস্ত নন। হালিম তৈরির জন্য দরকার ধৈর্য। শুধু ধৈর্য থাকলেই ঘরেই বানানো সম্ভব প্রকৃত স্বাদের হালিম। রমজান মাসে, কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় হালিম তৈরি হয়। বিশেষ করে সিরাজ রেস্তোরাঁর হালিম হল সর্বশ্রেষ্ঠ। এই সময় রোজা ভাঙার পর প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন। তার জন্য হালিম হল সেরা রেসিপি। বিভিন্ন রকমের ডাল, গম , মাংস এবং গরম মশলা একসঙ্গে মিশেয়ে অনেক জল দিয়ে অনেকক্ষন ধরে সিদ্ধ করে তৈরি করা হয়।
হালিমের উৎপত্তি হয় হারিশ নামে পরিচিত জনপ্রিয় আরব পদ থেকে। হারিশার সবচেয়ে পুরনো লিখিত রেসিপি পাওয়া যায় খ্রিস্টীয় দশম শতকের দিকে বাগদাদে কিতাব-আল-তাবিখ নামের রান্নার বইতে। ভারতবর্ষে হারিশার আগমন মুঘলদের মাধ্যমে। দ্বিতীয় মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের আমলে ভারতে হারিশার আগমন হলেও হারিশা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় হুমায়ূনের পুত্র সম্রাট জালাউদ্দিন আকবরের আমলে। ভারতে, রমজান মাসে হায়দরাবাদে রান্না করা হালিমকে বিশেষ কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে সারা বিশ্বে পাঠানো হয়। হালিম ঐতিহ্যগতভাবে বড় কড়াইয়ে কাঠ দিয়ে রান্না করা হয়। ইতিহাসবিদগণে মতে হায়দরাবাদের নিজামদের আরব সৈন্যরা হারিশা এনেছিল হায়দরাবাদে। বিংশ শতকে হালিম জনপ্রিয়করণে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছিলেন সুলতান সাইফ নাওয়াজ জং বাহাদুর। নিজামদের যুগ অবসান হওয়ার পর ১৯৫০-এর দশকে হায়দ্রাবাদের ইরানি খাবার হোটেলগুলোতে সর্বপ্রথম হালিম বিক্রি শুরু হয়।
হায়দরাবাদী চিকেন হালিম
৫-৬ জনের জন্য হালিম বানাতে হলে কী কী উপকরণ লাগবে, কীভাবে তৈরি করবেন, তা এখানে বিস্তারিত নির্দেশ দেওয়া রইল…
উপকরণ
৪০০ গ্রাম বোনলেস চিকেন ১/৪ সাজিরা ৪টি ছোটো এলাচ ১ টুকরো দারচিনি আধ চা চামচ গোলমরিচ গুঁড়ো ৪ টি লবঙ্গ ১/৪ চা চামচ জিরে ১/২ চা চামচ তিল (সাদা) ১/২ জায়ফল ১/২ জয়িত্রী আধখানা ১ টি ষ্টার অ্যানিস্ ১ টি গোটা শুকনোলঙ্কা ১ কাপ চিকেন স্টক (চিকেনের হাড় সেদ্ধ করা জল) ১ চা চামচ মুগডাল (শুকনো কড়াইতে নাড়া) ১ চা চামচ অড়হর ডাল ১ চা চামচ মুসুর ডাল ১ চা চামচ ছোলার ডাল ১/8 কাপ ওটস ১/৪ কাপ ডালিয়া ১ চা চামচ গোবিন্দভোগ চালের গুঁড়ো ৪-৫ টি আমন্ড ১/৪ কাপ ঘি ২ টি কাঁচালঙ্কা (কুচোনো) ১/৪ কাপ পেঁয়াজকুচি ১/২ টেবিল চামচ আদা রসুনবাটা ১ কাপ দুধ স্বাদমতো নুন ১/৪ কাপ পেঁয়াজ বেরেস্তা স্বাদ মত কাশ্মীরি লঙ্কাগুঁড়ো ১/২ টেবিল চামচ ধনেপাতাকুচি ১/২ টেবিল চামচ পুদিনাকুচি ১/২ চা চামচ লাইমজুস ৭-৮ টি রোস্টেড কাজুবাদাম
পদ্ধতি
সমস্ত মশলা ড্রাই রোস্ট করে নিন। এরপর সমস্ত মশলা ডাল, ওটস, ডালিয়া, চালের গুঁড়ো, আমন্ড একসঙ্গে নিয়ে ব্লেন্ডারে দিয়ে মিহি করে নিতে হবে। এবার আভেনে প্রেশার কুকারে ঘি দিয়ে আদা রসুনবাটা দিতে হবে। অল্প কষে নিয়ে চিকেন পিস্গুলো দিয়ে একটু ভেজে নিতে হবে। এরপর এতে চিকেন স্টক দিন। এরপর বেরেস্তা দি.ে ভাল কষিয়ে নিন।
এরপর দুধ, কাঁচালঙ্কা, ধনেপাতা, পুদিনাপাতা, নুন দিয়ে আরও কয়েক মিনিট রান্না করুন। ডাল মশলার পাউডার দিয়ে চিকেনগুলোকে কষে নিতে হবে। চিকেনের টুকরোগুলোর সঙ্গে মশলাগুলি যাতে ভালো করে মিশে যায়, তা দেখে নিন। এবার কুকারের ঢাকনা আটকে হাই ফ্লেমে দুটো হুইসল দিতে হবে। চিকেন তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হয়ে যায়। তাই ২টো সিটি দিলেই চলবে। এরপর লো ফ্লেম করে ৪০ মিনিট রান্না করুন। তারপর অফ করে স্টিম বের করে পটেটো মাশার দিয়ে ম্যাশ করে নিন। ভালো করে স্ম্যাশ করার পর তাতে আধ টেবিলস্পুন ঘি ছড়িয়ে দিয়ে ঢাকনা বন্ধ করে রেখে দিন। পরিবেশনের আগে একটি সার্ভিং বোলের মধ্যে ঢেলে রাখুন। তার উপর পেঁয়াজ বেরেস্তা, কাজু ভাজা, পুদিনাপাতা ও ধনেপাতা দিয়ে গার্নিশ করে নিন।