Fatherhood: বাচ্চাদের স্নান করিয়ে, খাইয়ে, ডায়াপার বদলিয়ে দেদার খুশি যে সব বাবারা

Millennial Dad: ২০১৭ সালের একটি গবেষণা বলছে বাড়ির কাজে এখন বাবারা ৩০ মিনিট বেশি সময় ব্যয় করেন। এখনকার বাচ্চারা মায়েদের তুলনায় বাবার সঙ্গে অনেক বেশি সময় কাটাচ্ছে

Fatherhood: বাচ্চাদের স্নান করিয়ে, খাইয়ে, ডায়াপার বদলিয়ে দেদার খুশি যে সব বাবারা
বাবা, বেবি ও...
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 28, 2022 | 11:45 PM
এ যেন এক অন্য ‘বাবা বেবি ও’-র গল্প। ফারাকটা শুধু এটাই যে, এই গল্পটা ‘রিল লাইফ’-এর নয়, ‘রিয়েল লাইফ’-এর। তাই এই গল্পটা ‘গল্প হলেও সত্য়ি’। এই গল্পের নায়ক ‘মিলেনিয়াল ড্যাড’ (Millennial Dad) অর্থাৎ নব্য যুগের বাবারা। কারণ আজ থেকে ২০ বছর আগেও বাবারা ‘Parenthood’-কে মোটেও গুরুত্ব সহকারে দেখতেন না। সন্তানের জন্ম পর্যন্তই ছিল তাঁদের দায়িত্ব। এরপর সন্তান কীভাবে মানুষ হচ্ছে, তার বেড়ে ওঠা, পড়াশোনা যাবতীয় দেখভালের দায়িত্বে থাকতেন মূলত মায়েরাই। বাবার দায়িত্ব সময়ে-সময়ে টাকার জোগান দেওয়া। সময় বুঝে শাসন। তবে সন্তানের দিকে তেমন একটা নজর না থাকলেও যে কোনও বিষয়ে শেষ সিদ্ধান্ত নিতেন বাবারা-ই। ‘মিলেনিয়াল ড্যাড’ অথবা আধুনিক বাবারা অভিভাবকত্বকে অনেক বেশি গুরুত্ব সহকারে দেখেন। আগের অর্থাৎ তাঁর বাবা-ঠাকুর্দাদের তুলনায় এখন এই ‘মিলেনিয়াল ড্যাড’ নিজে প্রায় তিনগুণ বেশি সময় দেন সন্তানকে।
১৯৮২ সালে ৪৩ শতাংশ বাবা স্বীকার করেছিলেন তাঁরা কখনওই বাচ্চার ডায়াপার বদলাননি। কিন্তু শেষ কয়েক বছরের সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে সেই সংখ্যাটা নেমে এসেছে ৩ শতাংশে। এখনকার বাবারা বাচ্চাদের স্নান করান, খাওয়ান, ডায়াপার বদলান—যে কাজ আগে একা মায়েরা করতেন, সেই কাজ দায়িত্ব নিয়ে সামলে দেন বাবারা। ২০১৭ সালের একটি গবেষণা বলছে বাড়ির কাজে এখন বাবারা ৩০ মিনিট বেশি সময় ব্যয় করেন। এখনকার বাচ্চারা মায়েদের তুলনায় বাবার সঙ্গে অনেক বেশি সময় কাটাচ্ছে। ফলে বাবা-বাচ্চার ‘বন্ডিং’ আগের তুলনায় অনেক বেশি স্ট্রং।
এখনকার পুরুষদের মানসিকতাতেও এসেছে বদল। গৃহস্থালির যাবতীয় কাজ তাঁরা শুধুমাত্র মেয়েদের দিকে ঠেলে দেন না। বরং দু’জনে মিলেই সবটা ভাগ করে নেন। মা কাজের প্রয়োজনে বাইরে থাকলে তখন বাবা-ই পুরো দেখভাল করেন। সমীক্ষা বলছে ৮৫% বাবার দাবি, তাঁরা সন্তানের সুবিধের জন্য বাড়ির যাবতীয় কাজ করতে ইচ্ছুক। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অভ্যাস শুধুমাত্র বাবাদের জন্য নয়—বাচ্চাদের জন্যও স্বাস্থ্যকর। ছোট থেকে তারা এটা দেখেই বড় হচ্ছে যে, বাবা-মা দু’জনেই সমান কাজ করে। গবেষণা এরকমটাও বলেছে যে, যখন সংসারের দায়িত্বের ৬০%-এর বেশি মায়ের ঘাড়ে এসে পড়ে, তখন দাম্পত্য কলহ বেশি হয়। বাড়িতে অশান্তি লেগেই থাকে। দাম্পত্য কলহ সন্তানের বেড়ে ওঠার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে পারে না। ২০১৭ সালের আরও একটি গবেষণায় উঠে এসেছে , কর্মরত মায়েরা এখন নিজের জন্য এক ঘন্টাও অবসর পান না। যেখানে বাবাদের হাতে অবসর তুলনায় বেশি থাকে। বরং মায়েরা বাবার তুলনায় মাল্টিটাস্কিংয়ে অনেক বেশি অভ্যস্ত।
মার্কিন ফ্যামিলি থেরাপিস্ট জিল হুইটনির মতে, অনেক সময় বাবারা অপরাধবোধে ভোগেন। নিজেদের মধ্যেও এই নিয়ে দ্বন্দ্ব চলতে থাকে। তাঁরা কিছুতেই মানতে পারেন না যে, স্ত্রী-র পরিবর্তে তিনিই সন্তানের দেখভাল করছেন। আর তাই এ ব্যাপারে আরও অনেক বেশি সচেতন হতে হবে মায়েদের। সন্তানকে বড় করতে বাবার ভূমিকাও যে অনেকখানি, এটা তাঁদেরই বোঝাতে হবে। তিনি যা করছেন, তা মোটেই ভুল নয়।
ব্রিগহাম ইয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক কেভিন শফারের মতে, বাবারা একান্তে অনেকবার জানিয়েছেন যে, তাঁরাও মায়েদের মতোই দায়িত্বশীল হতে চান। সন্তানের খাওয়া-দাওয়া, পড়াশোনার যাবতীয় দেখভাল করতে চান। ঠিক যেমনটা একজন মা করেন। কিন্তু সমাজের চোখরাঙানির ভয়ে তা করে উঠতে পারেন না। একরকম ভয় মিশ্রিত উৎকন্ঠা থাকে, ‘সমাজ আমায় কী বলবে’। অধিকাংশ বাবা-মা এখন কর্পোরেট সেক্টরের কর্মী। তুমুল কাজের চাপের মধ্যে থেকেও তাঁদের মন সব সময় ভাবে: ‘বাচ্চাকে আরও একটু যদি বেশি সময় দেওয়া যেত’F। সন্তানকে মানুষ করতে যথাযথ সময় তাঁরা দিচ্ছেন না বলে মনের মধ্যে অনুশোচনাও থাকে। তবুও কর্পোরেট কাজের দুনিয়ায় সবটাই মুখ বুঝে মেনে নিতে হয়। এটুকু বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে স্পষ্ট যে, এখনকার প্রতি তিনজন বাবার মধ্যে অন্তত ২ জন পরিবার এবং সন্তানের যথাযথ খেয়াল রাখেন।