AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Lesbian Mom: ‘বিয়ের ১৬ বছর পর জানতে পারলাম আমি লেসবিয়ান, এক ছেলের বয়স তখন ১৫, অন্যজন ১২’

LGBT Pride Month: মা-বাবা মানতে পারেননি মেয়ে অন্য কোনও 'মহিলার' সঙ্গে ঘর করবে।আনার ১২ বছরের ছেলেও মাকে প্রশ্ন করেছিল, ভবিষ্যতে অন্য কোনও পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে মা ঘর বাঁধতে চায় কিনা...

Lesbian Mom: 'বিয়ের ১৬ বছর পর জানতে পারলাম আমি লেসবিয়ান, এক ছেলের বয়স তখন ১৫, অন্যজন ১২'
জীবন নিয়ে আমার কোনও অনুশোচনা নেই...
| Edited By: | Updated on: Jun 27, 2022 | 1:05 PM
Share

ইংল্যান্ডের বাসিন্দা অ্যানা মার্টিন, বয়স ৩৭। ১৫ আর ১২ বছরের দুই সন্তানও রয়েছে তাঁর। দাম্পত্য জীবনে ১৬ বছর পার করে এসে জানতে পারলেন তিনি লেসবিয়ান। তবে এই প্রথমবার নয়, এর আগেও কিশোরীবেলায় অ্যানার মনে হয়েছিল তিনি মেয়েদের প্রতি একটু বেশিই আকৃষ্ট। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে সেইভাবে তিনি আর ভাবেননি। ১৯ বছর বয়সে স্বামীর সঙ্গে প্রথম দেখা অ্যানার। এরপর তাঁদের মধ্যে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং তাঁরা বিয়ের সিদ্ধান্তও নেন। বিয়ের পরবর্তী বছরগুলো বেশ ভালই কাটছিল তাঁদের। দু’জনে মিলে তাঁরা বাড়ি কিনেছেন, গাড়ি কিনেছেন। বিয়ের দু’বছরের মাথায় প্রথম সন্তানের জন্ম- সব মিলিয়ে বেশ কাটছিল। ছোট ছেলের জন্মের পর তাঁর মনে হল কোথাও গিয়ে ছন্দ কাটছে। দাম্পত্য জীবনে সব কিছু থাকার পরও কিছুতেই সুখী থাকতে পারছেন না। সব সময় অস্থির লাগত। কিন্তু নিজেই বুঝতে পারতেন না যে ঠিক কী চাইছেন।

যখন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতেন, গল্প করতেন তখন অ্যানার মনে হত ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের প্রতিই তিনি বেশি আকৃষ্ট। এমনকী তাঁর সামনে যদি কোনও মহিলা তাঁর পুরুষ ক্রাশকে নিয়ে কথা বলত, তা শুনতে মোটেই ভাল লাগত না আনার। নিজের মনের থেকে চিন্তাগুলোকে কোনও ভাবেই ঝেড়ে ফেলতে পারছিলেন না। আবার কারও আত্মবিশ্বাসেও আঘাত দিতে চাননি। মাঝেমধ্যেই স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করতেন, রসিকতা করে বলতেন ‘যদি আমরা আলাদা হয়ে যাই তাহলে কী হবে ভবিষ্যত’। পরবর্তীতে তাঁর স্বামীও বুঝতে পেরেছিলেন স্ত্রী সমকামী। তাই স্ত্রী যখন ছেড়ে যাওয়ার কথা বললেন, তখন আনার স্বামী সরাসরি প্রশ্ন করেন , ‘তুমি কি মহিলাদের ভালবাসো?’ প্রত্যুত্তরে অ্যানা বলেন, ”হ্যাঁ, আমি মহিলাদের সঙ্গে ডেট করতে চাই”।  অ্যানার স্বামী তাঁকে আটকাননি, নিজের মতো করে পরিস্থিতির সামাল দিয়ে স্ত্রীকে ডেটে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু ডিভোর্স প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় অ্যানার মনে হয়, তিনি জীবনের সবচাইতে সেরা বন্ধুটিকেই হারাতে বসেছেন।

তাঁর আসল লড়াই শুরু হয় এর পর থেকে। মা-বাবা মানতে পারেননি মেয়ে অন্য কোনও ‘মহিলার’ সঙ্গে ঘর করবে। আনার ১২ বছরের ছেলেও মাকে প্রশ্ন করেছিল, ভবিষ্যতে অন্য কোনও পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে মা ঘর বাঁধতে চায় কিনা। ছেলেকেও নিজের পরিচয় সঠিক ভাবে বুঝিয়েছিলেন মা আনা। কোনও রকম ট্যাবু রাখেননি। এরপর বিভিন্ন ডেটিং সাইটে নাম লেখান অ্যানা মার্টিন। বেশ কিছু বন্ধুও হয় তাঁর। তবে অনেকে তাঁকে নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করত। কারণ ১৬ বছর একজন ‘পুরুষ’ মানুষের সঙ্গে দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছেন আনা। পশ্চিম কর্নওয়ালের এক ছোট্ট গ্রামের বাসিন্দা আনা। আর ওই গ্রামে তিনি একাই ছিলেন সমকামী। রাস্তায় বেরোলে সবাই আঙুল তুলে বলত ‘লেসবিয়ান’।

মা হিসেবে প্রথমেই তাঁর চিন্তা ছিল দুই সন্তানকে নিয়ে। কিন্তু যখন দেখলেন ছেলেরা বুঝতে শিখেছে, স্বামী আবার নতুন সম্পর্কে স্বাভাবিক ভাবে মিশে গিয়েছেন তখনই নিজের জন্য কিছু করার সিদ্ধান্ত নিলেন অ্যানা। বন্ধুদের পরামর্শেই কাজ শুরু করলেন LGBTQ কোচ হিসেবে। এই কোচিং সূত্রেই খোঁজ পান মনের মানুষের সঙ্গে। তাঁর হাত ধরেই এখন ম্যানচেস্টারের বাসিন্দা অ্যানা। নিজেকে নিয়ে আর কোনও অনুশোচনা নেই তাঁর। বরং তিনি খুব খুশি। শেষ পর্যন্ত নিজের এই সত্ত্বাটিকে চিনে নিতে পেরেছেন বলে…