India’s Longest Train: ৯টি রাজ্যের মধ্য দিয়ে ৮০ ঘণ্টা ধরে ছুটে চলে দেশের দীর্ঘতম ট্রেন, চেপেছেন কখনও?
Vivek Express: ২০১৩ সালে স্বামী বিবেকানন্দের ১৫০ জন্মবার্ষিকীতে চালু হয় বিবেক এক্সপ্রেস। দূরত্ব ও সময়সীমার জন্যই বিবেক এক্সপ্রেস ভারতের দীর্ঘতম ট্রেন।

ভারতীয় রেল বিশ্বের বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্ক। ১১৫,০০০ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত ভারতীয় রেল। মোট ৭,৩৪৯ স্টেশন থেকে প্রতিদিন ১৩,১৬৯ যাত্রীবাহী ট্রেন এবং ৮,৪৭৯ পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করে। দেশের ২.৩ কোটি মানুষ প্রতিদিন ভারতীয় রেলে যাতায়াত করেন। কম খরচে এবং দ্রুত কোনও জায়গায় পৌঁছানোর জন্য ভারতীয় রেলই যাতায়াতের সেরা মাধ্যম। এই সুবিশাল রেলওয়ে নেটওয়ার্কে এমন রুট রয়েছে যেখানে ৪৬ কিলোমিটার পথে ট্রেন যায় ৫ ঘণ্টা ধরে। তেমনই রয়েছে ভারতের দীর্ঘতম রেলপথও। সেখানে ৮০ ঘণ্টা ধরে ট্রেন ছুটে চলে।
দেশের দীর্ঘতম রেলপথ হল ডিব্রুগড় থেকে কন্যাকুমারী। এই রেলপথে ছুটে চলে বিবেক এক্সপ্রেস। ভারতের পূর্ব দিকে অবস্থিত অসমের ছোট্ট শহর ডিব্রুগড়। চা বাগানের ঘেরা এই জায়গা। এখান থেকে বিবেক এক্সপ্রেস রওনা দেয় কন্যাকুমারীর উদ্দেশ্যে, যা দেশের একদম দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত। ডিব্রুগড় থেকে কন্যাকুমারী প্রায় ৪,১৮৯ কিলোমিটারের পথ। এই দীর্ঘতম অতিক্রম করতে সময় লাগে প্রায় ৮০ ঘণ্টা। এই রুটে চলে বিবেক এক্সপ্রেস।
চলতি বছরের মে মাস থেকে বিবেক এক্সপ্রেস সপ্তাহে চারদিন চলাচল করে। আগে এই ট্রেন শনিবার ও মঙ্গলবার সপ্তাহে দু’দিন চলত। এখন প্রত্যেক শনি, রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার ডিব্রুগড়-কন্যাকুমারী রুটে চলাচল করে বিবেক এক্সপ্রেস। আবার কন্যাকুমারী থেকে ডিব্রুগড় রুটে বিবেক এক্সপ্রেস চলাচল করে প্রত্যেক বুধ, বৃহস্পতি, শনি ও সোমবার।
প্রায় ৪,১৮৯ কিলোমিটারের পথ ভারতের দীর্ঘতম ট্রেন অতিক্রম করে ৮০ ঘণ্টা ধরে। পথে পড়ে ৫৮টি স্টেশন। অসমের ডিব্রুগড় থেকে ছেড়ে তিনসুকিয়া, ডিমাপুর, গুয়াহাটি, বোঙ্গাইগাঁও হয়ে বিবেক এক্সপ্রেস ঢোকে পশ্চিমবঙ্গে। আলিপুরদুয়ার, নিউ জলপাইগুড়ি, কিষাণগঞ্জ, মালদা, রামপুরহাট, দুর্গাপুর, আসানসোল, আদ্রা, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর—পশ্চিমবঙ্গের এই ১০টি স্টেশনে দাঁড়ায় বিবেক এক্সপ্রেস। এরপর যায় ঝাড়খণ্ড হয়ে ওড়িশায়। বালাসোর, কটক, ভুবনেশ্বর, খুড়দা রড, বেরহমপুর সহ বেশ কিছু স্টেশন হয়ে অন্ধ্র প্রদেশে প্রবেশ করে বিবেক এক্সপ্রেস। এরপর শ্রীকাকুলাম, বিজয়নগরম, বিশাখাপত্তনম, সামলকোট, রাজমুন্দ্রি, এলুরু, বিজয়ওয়াড়া, ওঙ্গোল, নেল্লোর, রেনিগুন্টা, ভেলোর, সালেম, ইরোড, কোয়েম্বাত্তুর, পলক্কড়, ত্রিশূর, আলুভা, এরনাকুলম, কোট্টায়ম, কোল্লম, তিরুবনন্তপুরম এবং নাগরকোইলম হয়ে বিবেক এক্সপ্রেস থামে কন্যাকুমারীতে। অসম, নাগাল্যান্ড, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, অন্ধ্র প্রদেশ, কেরল ও তামিলনাড়ু—মোট ৯টি রাজ্যের মধ্য দিয়ে ছুটে চলে বিবেক এক্সপ্রেস।
এই ট্রেনে ১টি এসি টু টিয়ার, ৪টি এসি থ্রি টিয়ার, ১১টি স্লিপার ক্লাস থেকে শুরু করে ৩টি জেনারেল সিটিং, ১টি প্যান্ট্রি কার ও ২টি পাওয়ার কাম লাগেজ রেক সহ মোট ২২টি কোচ রয়েছে। ২০১৩ সালে স্বামী বিবেকানন্দের ১৫০ জন্মবার্ষিকীতে চালু হয় বিবেক এক্সপ্রেস। দূরত্ব ও সময়সীমার জন্যই বিবেক এক্সপ্রেস ভারতের দীর্ঘতম ট্রেন।
