Udaipur: চিতোর থেকে পরাজয় মেনে ‘উদয়পুরা’ চলে এসেছিল মহারানা! তারপর কীভাবে গড়ে উঠল এই লেক ও প্রাসাদের নগরী?

সংস্কৃতি, ইতিহাস, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর হ্রদ নিয়ে গঠিত উদয়পুর। এই লেক ও প্রাসাদের নগরীতে আপনি যদি সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের সাক্ষী হোন, তাহলে তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকতে বাধ্য।

Udaipur: চিতোর থেকে পরাজয় মেনে 'উদয়পুরা' চলে এসেছিল মহারানা! তারপর কীভাবে গড়ে উঠল এই লেক ও প্রাসাদের নগরী?
লেক পিছোলা, উদয়পুর
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 29, 2022 | 8:00 AM

প্রাসাদ, হ্রদ, বাগান, বড় বড় ইমারত, সাদা অলিগলির মধ্যে রঙের ছোঁয়া- সব মিলিয়ে পর্যটকদের মন কেড়ে নেয় উদয়পুর (Udaipur)। রাজস্থানের (Rajasthan) অন্যতম জনপ্রিয় শহর (City of Lakes) উদয়পুর। ১৫৫৮ খ্রিষ্টাব্দে মোঘল সম্রাট আকবর যখন চিতোর দখল করে, মেওয়াড়ের রাজা দ্বিতীয় উদয় সিংহ সপরিবারে চলে আসে উদয়পুরায়, যা হল আজকের উদয়পুর। সেই সময় উদয়পুর হল রাজপুতদের বাসস্থান, মেওয়াড়ের রাজধানী। ১৮১৮ সাল অবধি উদয়পুর ছিল এই মেওয়াড়ের রাজধানী। তারপর সেটা চলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের হাতে।

সংস্কৃতি, ইতিহাস, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর হ্রদ নিয়ে গঠিত উদয়পুর। ভারতের ‘সিটি অফ লেকস’ নৈনিতাল ও ভূপাল সহ অনেকগুলো শহরকেই বলা হয়ে থাকে। সেই তালিকায় নাম রয়েছে উদয়পুরেরও। আর তা হবে নাই বা কেন! লেক ও প্রাসাদের নগরী উদয়পুর। চিতোরগড় থেকে প্রায় ১০২ কিলোমিটার দূরত্বে আরাবল্লি পাহাড়ের পাশে অবস্থিত উদয়পুর।

উদয়পুর গেলে মনে হয় যেন লেক পিছোলাকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে সারা শহর। যদিও এই হ্রদ কৃত্রিম ভাবে তৈরি। তবুও এর সৌন্দর্যের কাছে হার মানে দেশের অনেক হ্রদই। বহু মানুষ রোজ প্রতীক্ষায় থাকে লেক পিছোলায় সূর্যোদয় দেখার জন্য। এই লেকের সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়েই তো চিতোর থেকে এসে উদয়পুরে বাসা বাঁধে মেওয়াড়ের রাজা দ্বিতীয় উদয় সিংহ। মহারানা লাখার রাজত্বকালে শস্য পরিবহন করত ‘বানজারা’ নামক একটি উপজাতি। তাঁরাই ১৩৬২ খ্রিষ্টাব্দে এই লেক তৈরি করেছিল।

এই হ্রদের পূর্ব দিকে রয়েছে মহারানা উদয় সিংহ দ্বিতীয়ের তৈরি সিটি প্যালেস। প্রায় ৪০০ বছর ধরে তৈরি হয়েছিল এই প্যালেস। চিতোর থেকে উদয়পুর চলে আসার পর তৈরি করা হয় এই প্রাসাদ। ৪টি বড় ও ৭টি ছোট প্রাসাদ নিয়ে ১১ মহলের উদয়পুর সিটি প্যালেস। এই প্রাসাদের কাঁচের কাজ, পাথরের কাজ, আর দেওয়ালে শত শত বছরের ইতিহাস মুগ্ধ করে রাখবে আপনাকে। যদিও আজ এটি একটি বিলাসবহুল হোটেলে পরিণত হয়েছে। আর একদিকে রয়েছে সংগ্রহশালা।

উদয়পুর সিটি প্যালেসের উত্তরে রয়েছে প্রায় চারশো বছরের পুরনো জগদীশ মন্দির। ইন্দো-আর্য স্থাপত্যশৈলীতে তৈরি মন্দিরটির কারুকার্য‌ চোখ জুরানো। আর এর প্রাঙ্গনে ভগবান জগন্নাথের একটি কালো পাথরের মূর্তি রয়েছে। ১৯৬১ সালে এই মন্দিরটিও তৈরি করেছিলেন মহারানা উদয় সিংহ দ্বিতীয়।

লেক পিছোলার পাশেই রয়েছে রাজস্থান তথা উদয়পুরের আরেকটি ঐতিহাসিক নিদর্শন বাগোর কি হাভেলি। অষ্টাদশ শতাব্দীতে তৈরি করা হয়েছিল এই প্রাসাদটি। রাজ পরিবার, তাদের মন্ত্রী ও সঙ্গীরা এবং গার্হস্থ্য কর্মীদের ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল এই প্রাসাদটি। এর মধ্যে ১০০টি বাসস্থানের জায়গা রয়েছে। এর মধ্যে সুন্দর বাগান আর রয়েছে ভাস্কর্য ও শিল্প দিয়ে নির্মিত পাপ্পেট গ্যালারি।

উদয়পুরে যেমন রয়েছে প্রাসাদ ও হ্রদ, তেমনই স্থানীয়রা ভিড় করে উদয়পুরের ঘাটগুলিতে। এই লেক ও প্রাসাদের নগরীতে আপনি যদি সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের সাক্ষী হোন, তাহলে তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকতে বাধ্য।

আরও পড়ুন: ইতিহাসের খোঁজে ঘুরে আসুন চিতোর থেকে! এমন দুর্গ ভূ-ভারতে পাবেন না