Chittorgarh Fort: ইতিহাসের খোঁজে ঘুরে আসুন চিতোর থেকে! এমন দুর্গ ভূ-ভারতে পাবেন না
দুঃসাহসিক সব ঘটনার সাক্ষী এই চিতোরগড় দুর্গ। নানা ইতিহাস ছড়িয়ে রয়েছে দুর্গ জুড়ে। কিন্তু আজ শুধুই রহস্যে মোড়া চিতোর।
রাজস্থানের (Rajasthan) চিতোরগড় দুর্গ (Chittorgarh ) শুধু ভারতে নয়, সমগ্র বিশ্ব জুড়ে বিখ্যাত। এশিয়ার সবচেয়ে বড় দুর্গ। আরাবল্লি পাহাড়ের ওপর ৭০০ একর জায়গা জুড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে এক ইতিহাস। ‘পদ্মাবত’ (Padmaavat) সিনেমার দৌলতে বহু মানুষ এখন পরিচিত এই চিতোরগড় দুর্গ সম্পর্কে। শুধু আলাউদ্দিন খিলজি নয়, এরপর গুজরাতের বাহাদুর শাহ এবং মোঘল সম্রাট আকবরও হামলা করেন এই দুর্গের ওপর। বিরোধী দল পরাজিত হলেও এক টুকরো ইট ক্ষয়ে যায়নি দুর্গের।
মেওয়াড়ের রাজধানী ছিল চিতোরগড়। তবে সপ্তম শতকে মৌর্যরা এই দুর্গ গড়ে তুলেছিলেন। শোনা যায়, স্থানীয় মৌর্য শাসক চিত্রাঙ্গদা মোরি এই দুর্গটি গড়ে তুলেছিলেন। তারপর চিতোরগড় দখল করে নেয় গুহিলা রাজবংশের বাপ্পা রাওয়াল। রাজপুতদের গর্ব ছিল এই দুর্গ। তারপর ১৩০৩ সালে এই দুর্গ দখল করে আলাউদ্দিন খিলজি। নানা রাজবংশ রাজত্ব করে গেছে চিতোরগড়ে। ১৫৩৫ খ্রিষ্টাব্দে গুজরাতের বাহাদুর শাহ হামলা চালায় চিতোরে। ১৫৬৭-৬৮ খ্রিষ্টাব্দে মোঘল সম্রাট আকবরও দখল করে চিতোর। এরপর ১৬১৫ সালে, আকবরের উত্তরসূরি জাহাঙ্গির এবং মেওয়াড়ের মহারানার মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি সাক্ষর হয়। সেই সময় দুর্গ এবং দুর্গের আশেপাশের অঞ্চল দিয়ে দেওয়া হয় মেওয়াড়কে। এরপর দুর্গটি চলে যায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের হাতে। ১৯০৫ সালে চিতোরগড় দুর্গের মেরামতের কাজ করায় ব্রিটিশ রাজ।
View this post on Instagram
দুঃসাহসিক সব ঘটনার সাক্ষী এই চিতোরগড় দুর্গ। নানা ইতিহাস ছড়িয়ে রয়েছে দুর্গ জুড়ে। কিন্তু আজ শুধুই রহস্যে মোড়া চিতোর। এখন চিতোরগড় দুর্গ একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। পর্যটকদের কাছে এক জনপ্রিয় পর্যটক কেন্দ্র চিতোরগড় দুর্গ। উদয়পুর থেকে ১০২ কিলোমিটার দূরত্বে আরাবল্লি পাহাড়ের ওপর অবস্থিত চিতোরগড়।
দুর্গে প্রবেশ করতে গেলে পেরোতে হয় বাদল পোল, ভৈর পোল, হনুমান পোল, রাম পোল ও লক্ষ্মণ পোল সহ সাত-সাতটি ফটক।পুরো একটা দিন সময় লেগে যায় এই দুর্গ পায়ে হেঁটে ঘুরতে। এর ভিতরে রয়েছে কীর্তি স্তম্ভ, বিজয় স্তম্ভ, পদ্মিনী প্রাসাদ, গৌমুখ জলাধার, রানা কুম্ভ প্রাসাদ, মীরা মন্দির, কালিকামাতা মন্দির, জৈন মন্দির এবং ফতেহ প্রকাশ প্রাসাদ। জল কষ্ট দূর করার জন্য এই দুর্গের মধ্যে প্রায় ৮৪৮টি কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করা হয়েছিল। এখন তার মধ্যে শুধু ২২টিই রয়েছে।
এই দুর্গের মধ্যে রয়েছে বিজয়স্তম্ভ। দুর্গের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইমারতের মধ্যে একটি। এটি তৈরি করা হয়েছিল ১৪৪২ সালে। এটি তৈরি করেছিলেন রাজপুত শাসক রানা কুম্ভ। মাহমুদ শাহ প্রথম খিলজির বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিজয়ের স্মারক হিসেবে তৈরি করেছিলেন স্তম্ভটি। এরকম নানা ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে চিতোরগড় দুর্গের বিভিন্ন স্থাপত্য সম্পর্কে…
আগামিকাল- উদয়পুর
আরও পড়ুন: তীর্থযাত্রীদের মধ্যে ভিড় মরুর দেশের শুধু এই দুটি শহরে! কেন জানেন?