AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Rajasthan: তীর্থযাত্রীদের মধ্যে ভিড় মরুর দেশের শুধু এই দুটি শহরে! কেন জানেন?

শরীফ দরগাহ যেমন একটি জনপ্রিয় তীর্থস্থান, তেমনই আজমির থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে পুষ্কর, যা হিন্দু তীর্থযাত্রীদের মধ্যে খুব জনপ্রিয়। ভারতের প্রাচীনতম শহরগুলির মধ্যে একটি হল এই পুষ্কর।

Rajasthan: তীর্থযাত্রীদের মধ্যে ভিড় মরুর দেশের শুধু এই দুটি শহরে! কেন জানেন?
আনা সাগর হ্রদ, আজমির
| Updated on: Jan 22, 2022 | 8:00 AM
Share

মরুর দেশে তীর্থস্থান (Pilgrimage) বলতে ভেসে ওঠে আজমিরের (Ajmer) কথা। এই শহরের কোনও তথাকথিত নাম নেই। জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রও (Tourist Places) রয়েছে হাতে গোনা। রয়েছে শুধু হিন্দু ও মুসলিম তীর্থযাত্রীদের ভিড়। কারণ আজমির শরীফ দরগাহের মত মিলনক্ষেত্র খুব কমই আছে। তবুও আজমির ভারতীয় সংস্কৃতি ও নৈতিকতার বৈচিত্র্যের একটি পারফেক্ট ডেস্টিনেশন (Destination)।

রাজধানী জয়পুর থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে আরাবল্লি পর্বতের মাঝে অবস্থিত আজমির। আরাবল্লি পর্বত আর আনা সাগর হ্রদ ঘিরে রয়েছে গোটা আজমির শহরটিকে। ‘অজয় মেরু’ শব্দ থেকে এই শহরের নাম হয়েছে আজমির, যার অর্থ হল অজেয় পাহাড়। দিল্লি, আগ্রা বা উত্তর ভারতের অন্যন্য শহরের মত আজমির ঐতিহাসিক দিক থেকে সমৃদ্ধ।

সপ্তম শতাব্দীতে রাজা অজয়পাল চৌহান এই শহরটি প্রতিষ্ঠা করেন। দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত এখানে চৌহান রাজবংশ রাজত্ব করে। এঁরাই তৈরি করেছিল ভারতের প্রথম হিল ফোর্ট‌ অর্থাৎ পাহাড়ের ওপর দুর্গ, যা তারাগড় নামে জনপ্রিয়। মোহাম্মদ ঘোরির কাছে পৃথ্বীরাজ চৌহানের পরাজয়ের পর আজমিরে বসতি স্থাপন করে মোঘলরা। যদিও মোঘলদের আজমিরের প্রতি ভালবাসার প্রধান কারণ হল আজমির শরীফ দরগাহ।

ajmer sharif dargah

আজমির শরীফ দরগাহ

এরপর ১৬১৬ সালে মোঘল রাজা জাহাঙ্গীর এবং ইংল্যান্ডের রাজা জেমস ১ এর আদালতের রাষ্ট্রদূত স্যার টমাস রো-এর মধ্যে সাক্ষাৎকারের মাধ্যম হয়ে ওঠে এই আজমির। তার বেশ কিছু বছর পর আজমির পুরোপুরি চলে যায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের হাতে। রাজপুতানাদের একমাত্র অঞ্চল যা ছিল ব্রিটিশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। রাজপুত, মোঘল তারপর ব্রিটিশ- এইসব কিছুরই নিদর্শন ও স্থাপত্য একসঙ্গে দেখতে পাবেন যখন ঊষর ও টিলাময় ভূমি পেরিয়ে আপনি আজমিরে প্রবেশ করবেন।

আজমির শরীফ দরগাহ ছাড়াও এখানের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হল আনা সাগর হ্রদ। ১৩ কিলোমিটার বিস্তৃত এই মানবসৃষ্ট হ্রদের সঙ্গে মিশে রয়েছে রাজপুত ও মোঘলদের ইতিহাস। এই হ্রদ তৈরি করেছিল চৌহান রাজবংশই। তবে এর পাশেই রয়েছে দওলতবাগ। ১৬৩৭ সালে সম্রাট শাহজাহান এই সবুজ উদ্যানটি গড়ে তোলেন। তবে এই হ্রদের নৈসর্গিক সৌন্দর্য, শান্ত পরিবেশ এবং স্থির নীল জল আপনার মন কেড়ে নেবে।

Pushkar

পুষ্কর

শরীফ দরগাহ যেমন একটি জনপ্রিয় তীর্থস্থান, তেমনই আজমির থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে পুষ্কর, যা হিন্দু তীর্থযাত্রীদের মধ্যে খুব জনপ্রিয়। ভারতের প্রাচীনতম শহরগুলির মধ্যে একটি হল এই পুষ্কর। ৫১০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত পুষ্করকে তিন দিকে দিয়ে বেষ্টন করে রেখেছে টিলা। আজমির ও পুষ্করের মধ্যে একটি প্রাকৃতিক সীমানা গঠন করে আরাবল্লি পাহাড় যা ‘নাগ পাহাড়’ নামে পরিচিত।

পুষ্করেও রয়েছে একটি হ্রদ। যদিও এটি মানবসৃষ্ট নয়। পুষ্কর হ্রদের সঙ্গে জড়িত রয়েছে পুরাণ। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, ভগবান ব্রহ্মা, যিনি মহাবিশ্বের স্রষ্টা বলে বিশ্বাস করা হয়, একটি পদ্ম মাটিতে ফেলে দেন যার ফলে অবিলম্বে একটি হ্রদ তৈরি হয়। এরপর তিনি ফুলের নামে জায়গাটির নাম রাখার সিদ্ধান্ত নেন এবং এইভাবে জন্ম হয় পুষ্করের। সারা বিশ্বে ভগবান ব্রহ্মাকে উৎসর্গ করা একমাত্র মন্দির রয়েছে এই পুষ্করের শহরেই। তাই হিন্দু তীর্থযাত্রীদের ভিড় এখানে লেগেই থাকে।

এই শহরের আরেকটি বিশেষত্ব রয়েছে। ‘রাজস্থানের গোলাপ বাগান’ নামে পরিচিত এই পুষ্কর। পুষ্করের বিখ্যাত গোলাপ সারা বিশ্বে রপ্তানি করা হয়। পৌরাণিক ইতিহাসের পাশাপাশি, কালজয়ী স্থাপত্য, ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী পুষ্করকে একটি আকর্ষণীয় শহর করে তোলে।

আরও পড়ুন: ইতিহাস, ঐতিহ্য আর উজ্জ্বল দীপ্ত আজও বজায় রেখে চলেছে এই নীলের শহর