রবীন্দ্রনাথের পাতে পড়ল হাজার বছর পুরনো ডিম, চিনা বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে মহাবিপাকে কবিগুরু! তারপর জোব্বার মধ্যে…
কীভাবে বিপাক থেকে বেরিয়ে আসতে হয়, তাও খুব সুন্দর করে রপ্ত করে ফেলেছিলেন রবিঠাকুর। আর তার এই কৌশল দেখে বহুবার হতবাক হয়েছেন, তাঁর প্রিয়জন ও বন্ধুরা। হ্য়াঁ, এমনই এক ঘটনার কথা নিজেই লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপস্থিত বুদ্ধি যে কতটা প্রখর ছিল, তা তাঁর জীবনের নানা পর্যায়ের গল্পেই ফুটে ওঠে। কীভাবে বিপাক থেকে বেরিয়ে আসতে হয়, তাও খুব সুন্দর করে রপ্ত করে ফেলেছিলেন রবিঠাকুর। আর তাঁর এই কৌশল দেখে বহুবার হতবাক হয়েছেন, তাঁর প্রিয়জন ও বন্ধুরা। হ্য়াঁ, এমনই এক ঘটনার কথা নিজেই লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ‘আমার দেখা নয়া চিন’ বইয়ে তিনি লিখেছিলেন, কীভাবে উপস্থিত বুদ্ধি ও তাঁর পরনের জোব্বা তাঁকে বিপদ থেকে বাঁচিয়ে ছিল।
তা ঠিক কী ঘটেছিল?
সেবার চিন সফরে গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সঙ্গে ছিলেন অধ্য়াপক ক্ষীতিমোহন সেন এবং চিত্রশিল্পী নন্দলাল বসু। রবিঠাকুরকে কাছে পেয়ে তাঁর জন্য এক বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিলেন কবির চিনা বন্ধুরা। সেখানেই রবিঠাকুর, নন্দলাল বসু এবং ক্ষীতিমোহন সেনকে খেয়ে দেওয়া হয়েছিল চিনাদের ট্র্যাডিশনাল এক ডিমের রান্না। যে রান্নায় ব্যবহার হয়েছিল হাজার বছরের পুরনো ডিম!
কবির বন্ধুরা জানিয়েছিলেন, প্রথমে মাটির মধ্যে নুন মিশিয়ে তারপর কয়েকটা ডিমে সেই প্রলেপ মাখিয়ে দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করে রাখা হতো মাটির নিচে। যতক্ষণ না পর্যন্ত ডিমের সাদা অংশ কালচে হতো ততক্ষণ পর্যন্ত সেগুলো খাওয়ার উপযোগী হবে না। চিনাদের মুখে এমন কথা শুনে কিছুটা ভয় পেয়েছিলেন নন্দলাল ও ক্ষীতিমোহন। কিন্তু রবিঠাকুর কিন্তু একেবারে নিশ্চিন্তে হাতে নিয়েছিলেন খাবারের পাত্র। অনিচ্ছা থাকলেও, কবিকে দেখে সেই ডিমের পদ মুখে পুরে ছিলেন নন্দলাল ও ক্ষীতিমোহন। ব্যস, সেই রাত থেকেই পেটের গণ্ডগোল শুরু দুজনের। এমনটাই শরীর খারাপ হল যে, নন্দলাল ও ক্ষীতিমোহনকে ভর্তি করতে হল হাসপাতালে। তবে রবিঠাকুর কিন্তু সুস্থই ছিলেন।
নন্দলাল ও ক্ষীতিমোহন সেরে ওঠার পর কবিকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তোমার কেন কিছু হল না ওই ডিমের পদ খেয়ে? হাসতে হাসতে রবি বলেছিলেন, তিনি তো একটা ডিমও খাননি, ওই সব অখাদ্যগুলো কৌশলে নিজের লম্বা দাড়ির ভিতর দিয়ে জোব্বার মধ্যে সংরক্ষণ করে দিয়েছিলেন!





