PM Modi’s Security Breach: ‘অসম্মানজনক পদচ্যুতির থেকে কম কিছু প্রাপ্য নয় পঞ্জাবে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের’
PM Modi's Security Breach: আমার মতে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, যাকে আমরা অত্যন্ত কঠোর প্রশাসক বলে ভেবেছিলাম, তার উচিত নিজের কঠোর দিকটি দেখানো এবং এই গাফিলতির জন্য় কাউকে রেয়াত না করা।
প্রবীর কে বসু:
আমাকে বলতেই হচ্ছে যে প্রধানমন্ত্রী ক্ষমাশীল। গতকাল পঞ্জাবে যা ঘটেছে, তারপর অন্য কোনও রাজ্য়ের প্রধান হলে তিনি নিজের নিরাপত্তা প্রধানকে এক মুহূর্তের জন্য়ও কাজে রাখতেন না।
প্রধানমন্ত্রী যখন কোনও রাজ্য সফরে যান, তার নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্ন সফরের দায়িত্বে থাকেন রাজ্যের মুখ্য সচিব (Chief Secretary), ডিজিপি(DGP), জেলাশাসক (DM) ও পুলিশ সুপার(SP)। সকলেই আইএএস আধিকারিক (IAS Officer)। ডিআইবিরও দায়িত্ব থাকে, তবে রাজ্যের আধিকারিকরাই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সম্পূর্ণ দায়িত্বে থাকেন।
তারা কি জানতেন বিক্ষোভকারীরাও প্রস্তুতি নিয়েছে? যদি জানতেন, তবে তাদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। যদি তারা বলেন যে বিক্ষোভ সম্পর্কে জানতেন না, তবে তো আরওই তাদের পদচ্যুতি হওয়া উচিত।
বিকল্প রুট কী ছিল? কেনই বা তা ব্যর্থ হল?’
কল্পনা করুন, প্রধানমন্ত্রী কোনও সীমান্তবর্তী উপদ্রুত এলাকায় যাচ্ছেন এবং ওই অঞ্চলের সেনা কর্তা একই ভুল করেছেন, তবে ওনার ভবিতব্য কী হতে পারত বলে আপনাদের মনে হয়? কোর্ট মার্শাল!
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে কোথাও একটা সীমারেখা টানতেই হবে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে আসেননি, এক ঘণ্টা দেরীতে বৈঠকে আসেন এবং কয়েক মিনিটের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর আঁচল ধরে বেরিয়ে যান। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা না করেই তিনি বৈঠক ছেড়ে চলে যান।
সেই সময়ও প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিষয়টি অত্যন্ত নম্রতার সঙ্গে সামলে ছিলেন বলেই আমার মনে হয়েছিল।
এই ঘটনাতেই আমলা মহলে বার্তা পৌঁছেছিল যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অত্যন্ত নরম মনের। সেই কারণেই হয়তো পঞ্জাবের মুখ্য় সচিব, ডিজিপি এবং তাদের অধীনে থাকা আইএএস, আইপিএস অফিসাররাও এত বড় দায়িত্বকে একফোঁটাও গুরুত্ব দেননি। মুখ্যমন্ত্রীও নতুন, তার ফল? সম্পূর্ণরূপে নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিপর্যয়।
রামচরিত মানসে একটি বাক্য় রয়েছে, “বিন ভায়া না হোয়ে প্রীত”। এবং এই কারণেই আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থায় নিয়ম-শৃঙ্খলা অত্যন্ত জরুরি।
আমার মতে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, যাকে আমরা অত্যন্ত কঠোর প্রশাসক বলে ভেবেছিলাম, তার উচিত নিজের কঠোর দিকটি দেখানো এবং এই গাফিলতির জন্য় কাউকে রেয়াত না করা। ওনার উচিত মুখ্যসচিব, ডিজিপি, জেলাশাসক, পুলিশ সুপার -সকলকেই ৩১১(২) ধারা অনুযায়ী বরখাস্ত করা এবং দেশের প্রধানমন্ত্রীর জীবন বিপন্ন করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক চক্রান্তের অভিযোগ আনা। তাদের অর্জিত মর্যাদা কেড়ে নেওয়া উচিত এবং নামের আগে অবসরপ্রাপ্ত আইএএস বা আইপিএস অফিসারও লিখতে না দেওয়া। একইসঙ্গে তাদের উপর ভারতীয় দণ্ডবিধি ও জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে যথাযথ ধারায় অভিযোগ দায়্র করা।
পঞ্জাবের ট্রাক রেকর্ড মোটেই ভাল নয়। পঞ্জাবের এক সেনার হাতেই খুন হয়েছিলেন দেশের এক প্রধানমন্ত্রী। পঞ্জাবের কিছু সৈন্য বিহারের বোকারোতে বিক্ষোভও শুরু করেছিলেন। পঞ্জাবের এক নেতা পাকিস্তানে গিয়ে জেনারেল বাজওয়ার সঙ্গে গলা মিলিয়েছিলেন, যিনি আমাদের দেশের সেনা অফিসার ও জওয়ানদের খুন করেছেন।
যদি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বা ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় এই ধরনের গাফিলতি হত। আমি চিন বা রাশিয়ার কথা বলছিই না, সেখানে নিরাপত্তার ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা “ভ্যানিশ” হয়ে যেতেন।
গণতন্ত্রের অর্থ নম্প্রতা নয়। নম্রতাকে সবসময় ভুল করে দুর্বলতা হিসাবে গণ্য করা হয়। হাত থেকে লাঠি সরিয়ে নিলে সন্তান বিপথে যাবেই।
লেখক অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার।