‘লাল চুল কানে দুল, যুবা তৃণমূল’, ফিরহাদের জামাইকে বেনজির আক্রমণ শুভেন্দুর
“আমি আর দিলীপ ঘোষ মেদিনীপুর থেকে ৩৫টা আসনে জেতাব। আর গণনার দিন অধ্যাপক রায় আর মিনি পাকিস্তানওয়ালা মন্ত্রী দুপুর বেলা এসে আমার বাড়ি খাবেন, নিমন্ত্রণ রইল।”
কাঁথি: ইট মারলে পাটকেল আর পাটকেল মারলে পাল্টা পাটকেল। তৃণমূল বনাম বিজেপি, রাজ্য রাজনীতিতে এটাই এখন ট্রেন্ড। আর সেই ট্রেন্ডে এবার কাঁথির জনসভায় কার্যত আগুন ঝড়ালেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। রণংদেহী মেজাজে একের পর এক বক্তব্যে বিঁধলেন দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় (Saugata Roy) এবং কলকাতা পুরসভার প্রশাসক এবং রাজ্য মন্ত্রিসভার মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে (Firhad Hakim)।
শুভেন্দু বিজেপি-তে যাওয়ার পরই মেদিনীপুরে সভা করে শুভেন্দুকে ‘বিশ্বাসঘাতক’, ‘বেইমান’, ‘মিরজাফর’ বলে আক্রমণ শানিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী। অধ্যাপক সাংসদ প্রশ্ন তুলেছিলেন, “শিশির অধিকারীর ছেলে না হলে কে চিনত শুভেন্দুকে?”
এদিন সেই আক্রমণের জবাব দিলেন মেদিনীপুরের ‘যুবরাজ’। জ্বালাময়ী বক্তৃতায় তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য ফিরহাদকে বললেন ‘মিনি পাকিস্তানওয়ালা মন্ত্রী’। প্রশ্ন তুললেন মন্ত্রীর যোগ্যতা নিয়েও।
আরও পড়ুন: লোকসভায় বিষ্ণুপুর থেকে তাঁকে জেতানোর কাজ করেছিলেন শুভেন্দুই, বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি সৌমিত্রর
কাঁথি বাস স্ট্যান্ডের সভা থেকে এদিন ফিরহাদকে সরাসরি নিশানা করে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “নিউ আলিপুর থেকে টিকিট পাননি বলে নেত্রীর বাড়িতে ঢিল মারতে গিয়েছিলেন, সে আমাকে বিশ্বাসঘাতক বলছেন। তাঁর এতো যোগ্যতা, কলকাতার মানুষ আমফানের পর দশ দিনের মধ্যেই তা বুঝে গিয়েছে। জল নেই। কারেন্ট নেই। গাছ কাটতে ওড়িষা থেকে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টকে নিয়ে এসে গাছ কাটতে হয়েছে। এতোই তাঁর যোগ্যতা।”
আরও পড়ুন: ফের ‘বেসুরো’ রবীন্দ্রনাথ! বিধানসভা ভোটের আগে ‘সিদ্ধান্ত’ জানানোর হুঁশিয়ারি সিঙ্গুরের বিধায়কের
এদিন শুভেন্দুর আগুনে বক্তৃতার অভিমুখে ছিলেন অধ্যাপক সৌগত রায়ও। প্রবীণ সাংসদের উদ্দেশে তাঁর কটাক্ষ, “একজন অপরচুনিস্ট পলিটিসিয়ান। অধ্যাপক রায়ের গুরুত্ব ৯ বছর পর বুঝেছে তৃণমূল। শুভেন্দু অধিকারী চলে যাওয়াতে তৃণমূলের পায়ে কাঁটা ফুটেছে, তখন সৌগত রায়ের ডাক পড়েছে।”
আরও পড়ুন: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের সঙ্গেই জোট, সিলমোহর কংগ্রেস হাইকমান্ডের
আরও একধাপ এগিয়ে শুভেন্দু বলেন, “লড়াইটা গ্রামের সঙ্গে দক্ষিণ কলকাতার ওই ৪টে ৫টা নেতাদের বিরুদ্ধে। যাঁরা গোটা সরকারটার দখল নিয়েছে। ষাটটা দফতরের মধ্যে চল্লিশটা ওই চার, পাঁচটা মন্ত্রীর হাতে।”
এখানেই শেষ নয়। ‘পরিবারতন্ত্রের খোঁচার’ পাল্টা ফিরহাদের পরিবারকে বিঁধতেও পিছু পা হননি শুভেন্দু। একদা তৃণমূলের যুবনেতা শুভেন্দুর মুখে এদিন ফিরহাদ সম্পর্কে বলতে শোনা যায়, “মাননীয় মিনি পাকিস্তানওয়ালা মন্ত্রী, আমি তো আপনার জামাইকে নিয়ে কিছু বলিনি। লাল চুল, কানে দুল, তার নাম যুবা তৃণমূল। আমি তার কথা বলিনি। আমি বলেছি কয়লা চোর, গরু পাচারকারী তোলাবাজ ভাইপো-র কথা।” এই সভা থেকেই শুভেন্দু অধিকারীর হুঙ্কার, “আসল খেলা দেখাব আদর্শ আচরণ বিধি শুরু হলে। আমি আর দিলীপ ঘোষ মেদিনীপুর থেকে ৩৫টা আসনে জেতাব। আর গণনার দিন অধ্যাপক রায় আর মিনি পাকিস্তানওয়ালা মন্ত্রী দুপুর বেলা এসে আমার বাড়ি খাবেন, নিমন্ত্রণ রইল।”