হিন্দুধর্মে অক্ষয় তৃতীয়া (Akshaya Tritiya 2022) অত্যন্ত পবিত্র এক দিন। বছরের অত্যন্ত শুভ দিনগুলির মধ্য অন্যতম মঙ্গলকারক দিন অক্ষয় তৃতীয়া। এই দিবসে, কিছু সতর্কতা অবশ্যই অবলম্বন করা উচিত যাতে ঈশ্বরের আশীর্বাদ সর্বদা ভক্তদের উপর বর্ষিত হয়। পাঁজি অনুসারে, বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে অক্ষয় তৃতীয়া উদযাপন করা হয়। অক্ষয় তৃতীয়ার দিনটি থেকেই সূচনা হয়েছিল ত্রেতা যুগের। চলতি বছরে মে মাসের ৩ তারিখে পড়ছে অক্ষয় তৃতীয়া। বিশ্বাস করা হয়, এই দিনটিই হল ধন ও সমৃদ্ধির দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য উৎকৃষ্ট! তাই অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে প্রথা মেনে নানা আচার-উপচারে দেবী লক্ষ্মীর পুজো করা হয়।
জ্যোতিষমতে, এই অতি পবিত্র দিনে বেশ কিছু কাজ কখনওই করা উচিত নয়। কারণ ওই বিশেষ ধরনের কাজগুলি করলে দেবী লক্ষ্মী অত্যন্ত অপ্রসন্ন হন। তাই দেখা যাক ঠিক কোন কোন কাজ করলে সমৃদ্ধির দেবীর রুষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়—
ক্রোধান্বিত হবেন না
দেবী লক্ষ্মীকে সন্তুষ্ট করতে চাইলে, অক্ষয় তৃতীয়ার দিনটিতে কোনওভাবেই রাগপ্রকাশ করা যাবে না। এছাড়া পূজার সময় কোনওভাবেই ঝামেলা সৃষ্টি করা উচিত হবে না। এই ধরনের কাজে দেবী লক্ষ্মী বিরক্ত হন। সুতরাং, ওই দিনে নিবেদিত এবং শান্ত মন সম্বল করে মা লক্ষ্মীর পুজো দিন।
অন্যের ক্ষতি চাইবেন না
যে ব্যক্তি সর্বদা অন্যের কু-কামনা করে, দেবী লক্ষ্মী কখনওই তাঁদের আশীর্বাদ দেন না। সুতরাং কখনওই কারও ক্ষতি চাইবেন না। অক্ষয় তৃতীয়ায় দেবী লক্ষ্মীর আশিস পেতে চাইলে, দুঃস্থদের খাদ্য এবং অর্থ সাহায্য করুন।
ঘরবাড়ি অন্ধকার রাখবেন না
প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে গৃহের একটি কোণও অন্ধকার রাখা চলবে না। কোথাও আলো না পৌঁছলে অবশ্যই সেখানে একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখতে হবে। এভাবে মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ সদা সর্বদা গৃহে বিরাজ করবে।
লক্ষ্মী ও বিষ্ণু আলাদাভাবে পূজা করলে চলবে না
সৌভাগ্য এবং সমৃদ্ধি পেতে হলে অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে, একই বাড়িতে আলাদা আলাদা জায়গায় দেবী লক্ষ্মী এবং ভগবান শ্রীবিষ্ণুর পুজো দেওয়া উচিত নয়। কারণ তাঁরা স্বামী-স্ত্রী। তাই বিষ্ণুদেব ও দেবী লক্ষ্মীকে একযোগে পাশাপাশি রেখে পুজো করলে সাফল্য আসবে হাতের মুঠোয়।
গৃহে খালি হাতে ফিরবেন না
অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে খালি হাতে গৃহে না ফেরার চেষ্টা করুন। সম্ভব সোনা অথবা রুপোর কোনও সামগ্রী কিনতে পারেন। তবে সবসময় দামি ধাতু বা অলঙ্কার কেনা সম্ভব হয় না। তাই অন্য ধাতুর কোনও জিনিসও কিনতে পারেন।
শুচিতার উপর জোর দিন
অক্ষয়তৃতীয়ার দিনে ঘুম থেকে উঠুন ব্রহ্ম মুহূর্তে। স্নান করুন। ধোয়া এবং পরিষ্কার বস্ত্র পরিধান করুন। এইদিনে জীবনযাপনে শুদ্ধতা ও পবিত্রতা বজায় রাখার চেষ্টা করুন।
স্নান করে তুলসী পাতা তুলুন
হিন্দু ধর্মে তুলসীগাছের বিশেষ মাহাত্ম্য আছে। এই গাছকে হরিগাছ বলেও কোথাও কোথাও ডাকা হয়। মনে করা হয় তুলসী এবং নারায়ণ সহাবস্থান করেন। তাই তুলসীর পাতা বা ডাল ভাঙা উচিত নয়। অপবিত্র অবস্থায় তুলসীগাছকে ছোঁয়াও উচিত নয়। সবসময় স্নান করার পরেই তুলসীগাছ স্পর্শ করা যায়। না হলে লক্ষ্মীদেবী অত্যন্ত রুষ্ট হন।
আরও পড়ুন: Goddess Lakshmi: লক্ষ্মীর কৃপা পেতে সূর্য ডোবার আগেই সেরে ফেলুন এই জরুরি কাজগুলি