Blood Moon: যখনই ব্লাড মুন দেখা গিয়েছে ঘটেছে ভয়ঙ্কর ঘটনা! নেপালে বিদ্রোহের পূর্বাভাসও ছিল? জানুন ইতিহাস
Lunar Eclipse: ৮ তারিখে নেপালে শুরু হয়েছে ধুন্ধুমার। কিন্তু এর পূর্বাভাস কি আগেই পাওয়া গিয়েছিল? এমন ধ্বংসাত্মক কিছু যে হতে পারে তা কি আগে জানা ছিল? ইঙ্গিত কি দিয়েছিল ইউনিভার্স? ইউনিভার্সের কথা উঠছে কারণ ইতিহাস। গতকাল ছিল পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ।

নেপালে বিদ্রোহ –
প্রতিবাদের আগুনে জ্বলছে নেপাল। কয়েকদিন আগেই নেপালের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক একটি নির্দেশ জারি করে। সেই নির্দেশ অনুসারে ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্রে ব্যান হয়ে যায় ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মত প্রথম সারির সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম সহ মোট ২৬টি সমাজমাধ্যম। তারপরেই বিরক্তি চুঁইয়ে পড়ে Gen Z-এর মধ্যে। পথে নেমে বিক্ষোভঁ শুরু করেছে নব প্রজন্ম। সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে সেনা-পুলিশের সঙ্গে। ভেঙে দিয়েছে পার্লামেন্টের দরজাও। পালটা মাথা না নুইয়ে আরও কড়া হয়েছে প্রশাসন। চালিয়ছে গুলি। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জন আন্দোলনকারীর। আহত শতাধিক। এত কথা কেন বলছি? আসলে এক অদ্ভুত সমাপত্ন দেখা যাচ্ছে। এবার এর কোনও ব্যাখ্যা বিজ্ঞানের পরিভাষায় আছে কিনা তা বলবেন বিশেষজ্ঞরাই।
৮ তারিখে নেপালে শুরু হয়েছে ধুন্ধুমার। কিন্তু এর পূর্বাভাস কি আগেই পাওয়া গিয়েছিল? এমন ধ্বংসাত্মক কিছু যে হতে পারে তা কি আগে জানা ছিল? ইঙ্গিত কি দিয়েছিল ইউনিভার্স? ইউনিভার্সের কথা উঠছে কারণ ইতিহাস। গতকাল ছিল পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। তবে এই চন্দ্রগ্রহণ কোনও সাধারণ গ্রহণ ছিল না। এই বছরের শেষ চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের রং ছিল লাল। তাই এই চন্দ্রগ্রহণ পরিচিতি পেয়েছিল ব্লাড মুন নামেও।
ব্লাড মুন এই প্রথম নয়। এর আগেও বহুবার ব্লাড মুনের দেখা মিলেছে। খালি চোখে তা দেখাও গেছ। কিন্তু অদ্ভুত সুন্দর দেখতে প্রকৃতির এই মায়ার মধ্যেই যেন লুকিয়ে ছিল বিপদঘন্টা। এর আগে যতবার দেখা মিলেছে ব্লাড মুনের, বিশ্ব সংসারে নেমে এসেছে কোনও না কোনও দুর্যোগ। যা খচিত আছে ইতিহাসেও।
কনস্টান্টিনোপলের পতন –
সময়টা তখন ১৪৫৩। আজ থেকে কয়েক শো বছর আগে। বিশ্বজুড়ে তখন কনস্টান্টিনোপলের জয়জয়কার। তারই মাঝে একদিন আকাশে দেখা মিলেছিল এই রক্তস্নাত চাঁদের। আর তার কয়েকদিনের মধ্যেই পতন হয় হাজার বছরের পুরনো শহর ধ্বংসের মুখে চলে যায়। রোমান সাম্রাজ্যের শেষ সম্রাটের পতন হয়। পূর্ব এবং পাশ্চাত্যের ভারসাম্যের অঙ্ক বদলে চিরকালের মতো।
কলম্বাসের জীবনদান –
ক্রিস্টোফার কলম্বাস, এই ইতালীয় নাবিক ছিলেন আমেরিকা আবিষ্কারের মূল কাণ্ডারী। ১৪৯২ সালের ১২ অক্টোবর কলম্বাস কিউবার উত্তর-পূর্বে একটি দ্বীপে উপকূলে আসেন। যার পরবর্তীতে তিনি নাম দেন সান সালভাদর নামে। এখানেই পরবর্তী ১০ বছরে কলম্বাস ফের নতুন দেশ আবিষ্কারের জন্য সমুদ্রযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আরও তিনটি সমুদ্রযাত্রা করবেন। কিন্তু চতুর্থ এবং শেষ সমুদ্রযাত্রায়, মধ্য আমেরিকার উপকূলের কাছে কলম্বাস ভয়াবহ সংকটে পড়েন।
১১ মে ১৫০২, ক্যাপিটানা, গ্যালেগা, ভিজকাইনা এবং সান্তিয়াগো দে পালোস জাহাজ নিয়ে স্পেনের কাদিজ ত্যাগ করেন। জাহাজে পোকার কারণে তক্তায় গর্ত তৈরি হয়। বাধ্য হয়ে কলম্বাস তাঁর দুটি জাহাজ পরিত্যাগ করেন। অবশেষে ২৫ জুন, ১৫০৩ একটি দ্বীপের উত্তর উপকূলে তার শেষ দুটি জাহাজকে সমুদ্র সৈকতে নোঙর করান। যা আজকে জামাইকা নামে পরিচিত। প্রাথমিকভাবে সেখানে বসবাসকারী আদিবাসীরা তাঁদের স্বাগত জানান। খাবার-আশ্রয় দেন।
কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পাল্টায় পরিস্থিতি। কলম্বাসের অর্ধেক ক্রু বিদ্রোহ করে, কিছু আরাওয়াককে ডাকাতি এবং হত্যা করে। খাবারের অভাব দেখা যায়। দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েন কলম্বাস এবং তাঁর ক্রু। এই সময়ে এক আজব কান্ড ঘটান কলম্বাস। জোহানেস মুলার ভন কোনিগসবার্গ ওরফে রেজিওমোন্টানাসের পঞ্জিকা দেখে তিনি আবিষ্কার করেন ২৯শে ফেব্রুয়ারী, ১৫০৪ সালের বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়, পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ হবে।
গ্রহণের তিন দিন আগে, কলম্বাস আরাওয়াক প্রধানের সঙ্গে দেখা করে বলেন তাঁর খ্রিস্টান দেবতা আরাওয়াকদের উপর খুব ক্রুদ্ধ, কারণ তিনি কলম্বাসদের খাবার সরবরাহ দেননি। তিন রাত পরে, তিনি উদীয়মান চাঁদকে প্রায় মুছে ফেলবেন, যা ‘ক্রোধে প্রজ্বলিত’ দেখাবে। এরপর চন্দ্রগ্রহণ হতেই ভয় পায় আরাওয়াকরা। লাল চাঁদ দেখে ভয় পেয়ে খাবার নিয়ে ছুটে আসে কলম্বাসদের কাছে।
২০১৯ চন্দ্রগ্রহণ –
এখানেই শেষ নয়। ২০১৯ সালে চন্দ্রগ্রহণ হচ্ছিল। ঠিক সেই সময়ে চাঁদে ভয়ানক বিস্ফোরণের মতো কিছু একটা ঘটতে দেখা যায়। এমন দৃশ্য আগে দেখা যায়নি। তবে বিজ্ঞানীরা পরে জানান এই প্রথমবার চন্দ্রগ্রহণের সময় কোনও উল্কাপিন্ড চাঁদের উপর আছড়ে পড়ল। সেই সংঘর্ষের কারণে ওই বিস্ফোরণ হয়। এই বছর ব্লাড মুন দেখা দেওয়ার পরের দিন থেকেই ভয়ানক পরিস্থিতি নেপালে। এই চন্দ্রগ্রহণ কোনও ভয়ানক ধ্বংসের পূর্বাভাস ছিল কিনা তা বোঝা যাবে সময়ের সঙ্গেই।
