Bhai Phonta: ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিতে বোনেরা কড়ে আঙুলই কেন ব্যবহার করেন?
Hindu Ritual: ভাইয়ের কপালে কড়ে আঙুল ঠেকিয়ে বোন উচ্চারণ করে: 'ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা। যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা'।
ভাইয়ের কপালে কড়ে আঙুল ঠেকিয়ে বোন উচ্চারণ করে: ‘ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা। যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা’। এভাবে তিনবার ফোঁটা দেওয়ার সঙ্গে মন্ত্র উচ্চারণ করতে হয়। বাঙালিদের কাছে ভাইফোঁটার কদর বরাবরই আলাদা। ভাইফোঁটা—এই উৎসব ভাইবোনের। এই উৎসব আনন্দের। এর মাঝে এই উৎসবের গুরুত্ব ভুলে গেলে চলবে না। কথিত রয়েছে, এ দিন মৃত্যুর দেবতা যম, তাঁর বোন যুমনার হাত থেকে ফোঁটা নিয়েছিল। যে কারণে ভ্রাতৃদ্বিতীয়াকে যমদ্বিতীয়াও বলা হয়ে থাকে। কিন্তু ফোঁটা দিতে কেন বাম হাতের কড়ে আঙুল ব্যবহার করা হয়, সেটা কি জানা আছে?
বোনেরা বাঁ হাতের কড়ে আঙুল ব্যবহার করে ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দেয়। নারী হচ্ছে প্রকৃতির রূপ এবং কড়ে আঙুল মহাশূন্যের প্রতীক। আমাদের হাতের আঙুলে পঞ্চমহাভূত ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ, ব্যোম অবস্থান করে। কড়ে আঙুলে থাকে ব্যোম। তাই এটি মহাশূন্যের প্রতীক। আর এই কারণেই কড়ে আঙুল ব্যবহার করা হয় ফোঁটা দেওয়ার জন্য। সহজ ভাষায় বললেন, কড়ে আঙুল দিয়ে ফোঁটা দেওয়ার অর্থ হল, ভাইবোনের ভালবাসা আকাশের মতো উদার, অসীম ও অনন্ত হয়। সুতরাং, ভাইবোনের ভালবাসা অটুট রাখতে এবং সম্পর্কে আরও মধুর করতে কড়ে আঙুল ব্যবহার করা হয় ফোঁটা দেওয়া জন্য।
আগে কপালে ফোঁটা দেওয়ার পাশাপাশি দুই কানের লতিতে এবং কন্ঠনালিতে ফোঁটা দেওয়ার চল ছিল। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন শুধুই কপালে ফোঁটা দেওয়া হয়। কিন্তু কেন দেওয়া হয়? সেটাও জানা জরুরি। কপাল হল চেতনার প্রথম স্তর। কপাল হল ভাগ্যের স্থান। বোনেরা ভাইয়ের সৌভাগ্য কামনা করে কপালে ফোঁটা দেয়।
কানের লতিতেও ফোঁটা দেওয়ার পিছনেও রয়েছে কারণ। কান হল আমাদের শ্রবণ অঙ্গ। আর যেহেতু জগৎ ধ্বনিময় আর ওই ধ্বনিতেই ব্রহ্মের পদধ্বনি অনুচ্চারিত হয়, তাই সেই ব্রহ্মধ্বনি যাতে ভাইয়ের কানে শ্রুত হয় তাই কানের লতিতে ফোঁটা দেওয়া হয়। একই ভাবে কন্ঠনালিতেও ফোঁটা দেওয়া হয়। ভাইয়ের কথা যেন মধু এবং সত্য হয় তাই বোনেরা কণ্ঠে টিকা দেয়।