সংস্কৃতে আরতি শব্দের অর্থ হল-পূর্ণ প্রেম। ঈশ্বরের প্রতি প্রেম পূর্ণ ভাবে বস্তু নিবেদনকেই আরতি বলে। যে কাজই আমরা করি না কেন তাতে যদি নিষ্ঠা থাকে, ভক্তি থাকে তবেই কিন্তু সফলতা পাওয়া যায়। মঙ্গল আরতি হয় একদম ভোরবেলা। ভোরবেলা এমনিতেই মন শান্ত থাকে। তখন ধূপ-ধুনোর সুগন্ধ আমাদের মনকে আরও অনেক বেশি শান্ত করে দেয়। ফলে কাজে মন বসে। একাগ্রতা বাড়ে। ভালবাসা থেকেই ভক্তের ভগবানের প্রতি এই নিবেদন হল আরতি। এর ফলে কিন্তু জীবনযাত্রাতেও আসে পরিবর্তন। যে কোনও সাধু পুরুষই সকালে উঠে মঙ্গল আরতি মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যে দিয়ে তাঁদের দিন শুরু করেন। এটি একটি প্রাচীন অভ্যাস।
তবে শাস্ত্র মতে এই আরতি হিন্দু পুজোর এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।আরতি সাধারণত পুজোর সব অনুষ্ঠানের একদম শেষে করা হয়ে থাকে।প্রদীপ ধরিযে আরতি করা হয় ভগবানের মূর্তির সামনে বার বার চক্রাকারে ঘুরিয়ে।প্রদীপ ছাড়াও ধুনো,শঙ্খ,ধুপও মূর্তির সামনে রাখা হয়।কখনও আরতি করা হয় কোনও ব্যক্তি বিশেষের ওপর কুদৃষ্টি কাটাতে।অনেকে মনে করেন বৈদিক যুগের আগুনের কিছু আচার থেকে আরতির উদ্ভব।অন্য মতে মানা হয় বহু শতাব্দী আগে যখন ভগবানের মূর্তি গভীর অন্ধকারে গর্ভগৃহে রাখা হত, তখন প্রদীপ ধরানো হত অন্ধকার কাটাতে ভক্তেরা যখন মন্দিরে পৌঁছত,তখন পূজারি প্রদীপটা মুর্তির কাছে নিয়ে গিয়ে ধরতেন দর্শনের জন্য।পরবর্তীকালে এই অভ্যাসটাই এক রীতিতে পরিণত হয়, সেখান থেকেই সকালের এই মঙ্গল প্রার্থনায় ভগবানকে দিনের শুরুতে স্মরণ করা রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরতি কথাটা এসেছে “আ” মানে সম্পূর্ণ ও “রতি” মানে ভালোবাসা থেকে।তাই আরতির অর্থ ভগবানের প্রতি সম্পূর্ণ ও অপ্রতিহত প্রেম।আরতি তাই এত ভক্তিভরে শ্রদ্ধার সাথে মণ্ত্রচ্চারণ,করতালি,ভক্তি ভজন ও ধ্যনমগ্ন সচেতনতার সমষ্টিগত নিবেদন।
দিনের শুরু যদি এভাবে হয় তাহলে কিন্তু সারাদিন ভাল কাটে। ধূপ-ধুনোর সুগন্ধে মন ভাল হয়। একটা পজিটিভ এনার্জি পাওয়া যায়। শুধু যে হিন্দুধর্মেই এই মঙ্গল আরতি রয়েছে তা নয়, বৌদ্ধস্তূপ থেকে চার্চ সর্বত্রই কিন্তু হয় এই সকালের প্রার্থনা।
আরও পড়ুন: Vastu tips: বাস্তুদোষ কাটাতে ঘর মোছার বালতিতে ফেলে দিন এক চামচ নুন, তফাত দেখুন এক সপ্তাহেই
আরও পড়ুন: Paush Month 2021: এখন চলছে পৌষ মাস! এই সময় কীভাবে পুজো করবেন সূর্য দেবতার? জেনে নিন