Janmashtami 2023: জন্মাষ্টমীতে বালগোপালকে ৫৬ ভোগ দেওয়া হয় কেন? রয়েছে পৌরাণিক কাহিনি

Chappan Bhog: জন্মাষ্টমীর দিন বালগোপালকে ৫৬ রকম পদ সাজিয়ে পরিবেশন করা হয়। হিন্দুশাস্ত্র মতে, দেব-দেবীদের পুজোর সময় সাধারণ বিজোড় সংখ্যায় নৈবেদ্য সাজানো হয়ে থাকে। কিন্তু ৫৬ সংখ্যা কেন?

Janmashtami 2023: জন্মাষ্টমীতে বালগোপালকে ৫৬ ভোগ দেওয়া হয় কেন? রয়েছে পৌরাণিক কাহিনি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 06, 2023 | 7:02 PM

আজ জন্মাষ্টমী। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, এবছর দুদিন তথা ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর পালিত হবে কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী। সনাতন ধর্মে, পাপভার থেকে পৃথিবীকে মুক্তি দিতে ও সাধু-সন্ন্যাসীদের পরিত্রাণের জন্য মর্ত্যে আর্বিভাব হয়েছিল বিষ্ণুর অষ্টম অবতার শ্রীকৃষ্ণ। ভাদ্রমাসের রোহিনী নক্ষত্র অবস্থিত অষ্টমী তিথিতে শ্রীকৃষ্ণের আর্বিভাব তিথি হিসেবে চিহ্নিত হয়। শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব তিথি জন্মাষ্টমী হিসেবে পরিচিত। প্রাচীন পুরাণ মতে, এদিনটিকে ধুমধাম করে সারা দেশে কৃষ্ণ পুজো করা হয়ে থাকে। গোকুলাষ্মী উপলক্ষ্যে গোপালঠাকুরকে দেওয়া হয় ছাপ্পান্ন ভোগ। এই ছাপ্পান্ন ভোগ শ্রীকৃষ্ণকে যেমন দেওয়া হয়, তেমনি জগন্নাথদেবকেও নিবেদন করা হয়। কথিত আছে, শ্রীকৃষ্ণকে প্রসন্ন করতে এই ছাপ্পান্ন ভোগ নিবেদন করলে ভক্তদের মনোবাসনা পূর্ণ হয়ে থাকে। কিন্তু এই ছাপ্পান্ন ভোগ কী?

জন্মাষ্টমীর দিন বালগোপালকে ৫৬ রকম পদ সাজিয়ে পরিবেশন করা হয়। হিন্দুশাস্ত্র মতে, দেব-দেবীদের পুজোর সময় সাধারণ বিজোড় সংখ্যায় নৈবেদ্য সাজানো হয়ে থাকে। কিন্তু ৫৬ সংখ্যা কেন?

পৌরাণিক কাহিনি মতে, বৃন্দাবনবাসীরা ইন্দ্রকে নানারূপে মহার্ঘ ভোগ নিবেদন করে সন্তুষ্ট রাখতেন। হিন্দুশাস্ত্র মতে, ইন্দ্র হলেন বৃষ্টি ও ব্রজের দেবতা। তাঁর আশীর্বাদেই সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত বর্ষণ হয়। তাই চাষীরা ইন্দ্রদেবকে তুষ্ট করতে দামি ও প্রচুর ভোগ রান্না করে নিবেদন করতেন। কিন্তু গরিব চাষীদের পক্ষে দামি ভোগ নিবেদন করা দুঃসাধ্য। চাষীদের কষ্ট দূর করতে ইন্দ্রকে এভাবে ভোগ নিবেদন না করে নিজের ভোগ অবস্থা বুঝে নিবেদন করতে। কৃষ্ণের কথা শুনে চাষীরা সেই কাজই করে থাকেন। এদিকে ভোগের সামগ্রীতে ঘাটতি দেখে ইন্দ্র অত্যন্ত রেগে যান। তাঁর ক্রোধে প্রচণ্ড বৃষ্টি ও বজ্রপাত হতে থাকে। ক্রোধের কারণে বৃন্দাবনে হতে থাকে মেঘভাঙা বৃষ্টি। তারপর থেকেই মানুষের জীবন হয়ে ওঠে বিপন্ন। বিপদে পড়ে শ্রীকৃষ্ণের দ্বারস্থ হয়ে ওঠে। বন্যা পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে গ্রামবাসীরা গোবর্ধন পর্বতের দিকে চলে যায়। কিন্তু গোবর্ধন পর্বতের দিকে যেতে গিয়ে সকলেই দেখেন, শ্রীকৃষ্ণ পর্বতকে নিজের কড়ে আঙুল তুলে রেখে দিয়েছেন। আর সেই পর্বতের তলায় আশ্রয় নেয় সকল গ্রামবাসীরা। টানা সাতদিন ধরে বৃষ্টিপাত হলে বন্যা পরিস্থিতি আরও জোরালো হয়ে ওঠে। ওই সাতদিন টানা কৃষ্ণঠাকুর কড়ে আঙুলে পর্বতকে ধরে থাকেন। সাতদিন ধরে একচুলও নড়েননি তিনি। এমনকি এককণা খাবারও মুখে তোলেননি। কাহিনি অনুযায়ী, সাধারণত সারাদিন শ্রীকৃষ্ণ মাত্র ৮বার খাদ্যগ্রহণ করেছিলেন। বৃষ্টি থামার পর বৃন্দাবনবাসী ৫৬ ভোগ রান্না করে নিবেদন করেছিলেন। সেই থেকে জন্মাষ্টমীর দিন বালগোপালকে ৫৬ ভোগ রান্না করে নিবেদন করা হয়।

ভোরে উঠেই এই ভোগ রান্না তৈরি করা শুরু করে দেওয়া উচিত। ছাপান্ন ভোগে শস্য, ফল, শুকনো ফল, মিষ্টি, পানীয়, নোনতা, আচার প্রভৃতি নিবেদন করা হয়। এছাড়া পুজোর ভোগ হিসেবে দেওয়া হয় মাখন মিছরি, সন্দেশ, ক্ষীর, বোঁদের লাড্ডু, রসগোল্লা, পনিরের জিলাপি, রাবড়ি, মালপোয়া, মোহনভোগ,ফলের চাটনি, জিরা লাড্ডু, মোরব্বা, শাক, দই, পায়েস, পাপড়, মুগ ডালের হালুয়া, খিচুড়ি, লাউ ও বেগুনের সবজি, পুরি, বাদাম বা কেশরের দুধ, কিশমিশ, আমন্ড, পেস্তা, এলাচ, দারচিনি প্রভৃতি দেওয়া হয়।