Gautam Gambhir: চাকরি থাকছে? পুরনো ট্রফি তুলে ধরলেন গৌতম গম্ভীর

South Africa beat Team India: টিম যখন ব্যর্থ হয় কোচই সাংবাদিক সম্মেলনে আসেন। এ বড় পুরনো রেওয়াজ। গম্ভীর সেই অলিখিত নিয়ম মেনে সাংবাদিক সম্মেলনে এলেন ঠিকই, তাঁকে শুনতে হল সবচেয়ে অপ্রিয় প্রশ্নটা, চাকরি থাকছে তো?

Gautam Gambhir: চাকরি থাকছে? পুরনো ট্রফি তুলে ধরলেন গৌতম গম্ভীর
চাকরি থাকছে? পুরনো ট্রফি তুলে ধরলেন গৌতম গম্ভীরImage Credit source: PTI

Nov 26, 2025 | 2:15 PM

কলকাতা: সাদা বলে হয়, লালে বেহাল! যখনই প্রশ্নের মুখে দাঁড়াতে হয় তাঁকে, অনেকের মতো অজুহাতের রাস্তাতেই হাঁটেন। অনেকের মতো তুলে ধরতে চান সাফল্য, অনেকের মতো পুরোপুরি দায় কাঁধে চাপাতে চান না। গুয়াহাটির সকাল এসব টুকরো টুকরো ছবি আর একবার দেখল। কোচের আসলে দায়িত্ব কী? ড্রেসিংরুম সামলাবেন, ক্রিকেটারদের ছন্দে রাখবেন, ম্যাচ জেতার স্ট্র্যাটেজি তৈরি করবেন, আর তারকা-যুদ্ধ থাকলে তা অতি গোপনে সামলে দেবেন। ক্রিকেটে কোচের ভূমিকা এইটুকুই। কেউ কেউ নিজেকে এর ঊর্ধ্বে তুলে নিয়ে আসতে চান। এবং বলাই বাহুল্য, সাফল্য যেমন রোজ আসে না, তেমনই কোচের হাঁটার রাস্তাও সবসময় আলোকিত থাকে না। এই মুহূর্তে গৌতম গম্ভীর ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম চর্চিত নাম। কেন? নিউজিল্যান্ডের কাছে হোম সিরিজে ০-৩ হার। তারপর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ০-২ হার। মাঝে ২ টেস্টের একটা সিরিজ ছিল বটে, কেউ খুব বেশি গুরুত্বই দিচ্ছেন না। অর্থাৎ গম্ভীরকে নিতে হচ্ছে ‘০-৫’ হারের ধাক্কা।

টিম যখন ব্যর্থ হয় কোচই সাংবাদিক সম্মেলনে আসেন। এ বড় পুরনো রেওয়াজ। গম্ভীর সেই অলিখিত নিয়ম মেনে সাংবাদিক সম্মেলনে এলেন ঠিকই, তাঁকে শুনতে হল সবচেয়ে অপ্রিয় প্রশ্নটা, চাকরি থাকছে তো? রবি শাস্ত্রীর সময় থেকে রাহুল দ্রাবিড় পর্যন্ত এই ১০ বছরে ভারতীয় ড্রেসিংরুম এক অন্য নিয়মে চলেছিল। যে নিয়মে সাধারণত অভ্যস্ত ভারতীয় দল। সিনিয়ররা গুরুত্ব পাবেন, তারকাপুজো থাকবে প্রবলভাবে। তার মধ্যেই ধীরে ধীরে তৈরি করে নেওয়া হবে পরবর্তী প্রজন্ম। শাস্ত্রী যেমন বিরাট-রোহিতদের বাড়তি গুরুত্ব দিতেন, লোকেশ রাহুল-ঋষভ পন্থ-শুভমন গিলদেরও ধীরে ধীরে টিমের উপযোগী করে তুলতেন। এই একই কাজ রাহুল দ্রাবিড়ও যত্ন করে সামলেছেন। গম্ভীর ব্যতিক্রমী কেন? তার কারণ, গম্ভীর কোচ হওয়ার পর থেকে টিমের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। দল চলবে তাঁর কথায়, ক্যাপ্টেন মেনে চলবেন তাঁর নির্দেশ, এমনকি ব্যাটিং অর্ডার যখন তখন বদলে যেতে পারেন গম্ভীরের অঙ্গুলিহেলনে। রাতারাতি বদল যে বুমেরাং হয়ে যায়, গম্ভীর ঠারেঠারে বুঝতে পারছেন। অনেকেই গম্ভীরের জমানাকে ভারতীয় দলে গ্রেগ চ্যাপেলের কোচিংয়ের সঙ্গে তুলনা করছেন। গুরু গ্রেগের জন্য ভারতীয় দলের খোলনলচে ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল। যার খেসারত দিতে হয়েছিল লম্বা সময়। ধোনি না থাকলে পরিস্থিতির বদল হত না।

এই কারণেই হয়তো গম্ভীরকে অপ্রিয় প্রশ্নটার মুখোমুখি হতে হল। এবং গম্ভীর বললেন, ‘যখন প্রথম ভারতীয় দলের কোচ হয়েছিলাম, সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বলেছিলাম, দল গুরুত্বপূর্ণ, আমি নই। আজও একই কথা বলছি। এই আমারই কোচিংয়ে ইংল্যান্ডে একটা আনকোরা ভারতীয় দল সাফল্য পেয়েছিল। তাও কিন্তু লোকে বারবার নিউজিল্যান্ড সিরিজের কথা বলছে। আমি জানি মানুষ এরপর ইংল্যান্ড সফরটা ভুলে যাবে। এই আমারই কোচিংয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও এসেছে, এশিয়া কাপও এসেছে।’

গম্ভীর কোচ থাকবেন কি থাকবেন না, সেই বল ঠেলেছেন বিসিসিআইয়ের কোর্টে। খুব স্বাভাবিক। তবে যেটা স্বাভাবিক নয়, সেটা হচ্ছে, গম্ভীরে মৃদু হলেও অসন্তোষ শুরু হচ্ছে। কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই শ্রীলঙ্কায় ওডিআই সিরিজে হারতে হয়েছিল ভারতকে। এবং অতি সাম্প্রতিক বিতর্কও তাঁর বিরুদ্ধে যে যাবে, সন্দেহ কী। কী বিতর্ক মনে পড়ছে পাঠক? বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার আচমকাই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া। ক্রিকেট দেয় অনেক কিছু। কিন্তু কেড়েও যে নেয়! গম্ভীরের থেকে ভাল আর কে জানেন!