পাকিস্তান কি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে ছিটকে গেল? ৯৯.৯৯ শতাংশ হ্যাঁ। যদিও অঙ্কের নিরিখে পাকিস্তান এখনও ছিটকে যায়নি। কয়েক ঘণ্টার জন্য টুর্নামেন্টে টিকে রয়েছে আয়োজক পাকিস্তান। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছিল। সেই ম্যাচে বড় হার। সেমির আশা জিইয়ে রাখতে ভারতের বিরুদ্ধে জিততেই হত। তবে মুখের কথা, আর মাঠে নেমে পারফর্ম করা এক জিনিস নয়। পাকিস্তান মুখে লড়াই করেছে, ভারত পারফরম্যান্সে। কাল বাংলাদেশ বনাম নিউজিল্যান্ড। পাকিস্তান এই টুর্নামেন্টে ততক্ষণই টিকে রয়েছে, যতক্ষণ বাংলাদেশ। কাল নিউজিল্যান্ড জিতলে পাকিস্তানকে সঙ্গে নিয়েই বিদায় হয়ে যাবে পাকিস্তানের। ভারতের অবশ্য নানা লক্ষ্য পূরণ হয়েছে একই ম্যাচে।
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত। কিন্তু ওয়ান ডে ফরম্যাটে দীর্ঘ দিন আইসিসি ট্রফি নেই। সেই ২০১৩ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। গত সংস্করণ অর্থাৎ ২০১৭ সালে ফাইনালে উঠেছিল ভারত। কিন্তু ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হার। রানার্স হয়েছিল বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন টিম ইন্ডিয়া। ২০২৩ সালে ঘরের মাঠে ওয়ান ডে বিশ্বকাপে টানা ১০ ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছিল ভারত। সেখানেও ফাইনালে হার। টার্গেট চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। একটা ধাপ পেরনো গেল বলাই যায়।
বরাবরই বড় ম্যাচের প্লেয়ার বিরাট কোহলি। তবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ের ভিত গড়ে দেন বোলাররাই। বিশেষ করে হার্দিক পান্ডিয়ার কথা বলতে হয়। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্রেক থ্রু দেন। তেমনই অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব এবং রবীন্দ্র জাডেজাও অবদান রাখেন। রান তাড়ায় রোহিত ও শুভমন জুটি বিধ্বংসী শুরু করে। রোহিত এদিন বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। তবে এমন ম্যাচের জন্য তো কিং কোহলি রয়েইছেন।
ছন্দে থাকা শুভমন গিলের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দেন বিরাট কোহলি। দুর্দান্ত একটা জুটি গড়েন। শুভমনকে ফেরান লেগ স্পিনার আবরার আহমেদ। তাতেও ভারতীয় টিমে এক বিন্দুও চিন্তা ছিল না। কারণ, প্রতিপক্ষ পাকিস্তান আর ক্রিজে কোহলি। শ্রেয়সকে নিয়ে আরও একটা জুটি গড়েন। শ্রেয়স আউট হলেও ততক্ষণে দল জয়ের খুব কাছে। যদিও শেষ মুহূর্তে স্নায়ুর চাপ তৈরি হয় ভারতীয় শিবিরে। বিরাট-অক্ষর ব্যাট করছিলেন। মাত্র তিন রান বাকি। বিরাট তখন ৯৬ রানে।
ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মা ডাগআউট থেকে বিরাটকে সিগন্য়াল দেন, ছয় মারার। অক্ষর স্ট্রাইক দেন বিরাট কোহলিকে। ইনসাইড আউটে বাউন্ডারি মেরে নিজের ৫১তম ওডিআই সেঞ্চুরি এবং দলের জয় একসঙ্গেই দুই কাজ বিরাট কোহলির। পাকিস্তানের কাছে এখন সেমিফাইনালের অঙ্ক, প্রথমত কাল বাংলাদেশ যদি নিউজিল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে হারায়, এরপর পাকিস্তান হারাবে বাংলাদেশকে, এরপর নিউজিল্যান্ড ভারতের কাছে হারবে। সেক্ষেত্রেই একমাত্র পাকিস্তান সেমিফাইনালে যেতে পারে! কিন্তু কাল নিউজিল্যান্ড জিতলে সব গল্পের ইতি। এই গ্রুপ থেকে ভারতের সঙ্গে ও নিউজিল্যান্ড সেমিফাইনালে যাবে।