
সুপার সানডেতে ভারত-পাক কতটা রোমহর্ষক হতে পারে? সোজা কথায় বললে, এই ম্যাচেই টিকে পাকিস্তানের বিশ্বকাপ যাত্রার স্বপ্ন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই গ্রিন আর্মিকে হারিয়ে চমকে দিয়েছে আয়োজক আমেরিকা। গ্রুপ টেবলের পরিস্থিতি এখন এতটাই জটিল যে, বিরাট-হার্দিকদের হারাতে না পারলে নিউ ইয়র্ক থেকেই দেশে ফেরার বিমান ধরতে হতে পারে রিজওয়ান-ফখর জামানদের। কোণঠাসা পাকিস্তান যে মরণ কামড়, বলেই দেওয়া যায়। ঠিক এই কারণেই বাড়তি সতর্কতা জারি করা হচ্ছে ভারতীয় শিবিরে। বছর তিনেক আগে আমিরশাহি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কাছে হেরে প্রথম রাউন্ডেই ছিটকে গিয়েছিল ভারত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেটিই ছিল ভারতের সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স। সমালোচনায় জেরবার হয়ে গিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট টিম। এ বারের বিশ্বকাপে তাই নিউ ইয়র্কেই পাক-যন্ত্রণা মিটিয়ে ফেলতে চাইছেন রোহিতরা।
ভারত-পাক ম্যাচে বিরাট-বাবর, রিজওয়ান-বুমরা, হার্দিক-ফখররা যদি নায়ক হন, তা হলে বাইশ গজকেও দিতে হবে গুরুত্ব। নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পিচ ক্রিকেট দুনিয়ায় বেশ নাম-ডাকও করে ফেলেছে। কখন বল উঠবে কেউ জানেন না। কখন যে গড়াবে, ঘাতক হয়ে উঠবে, তা বোঝা যাচ্ছে না। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারত সহজে জিতেছিল ঠিকই, কিন্তু পিচের কামড় খেতে হয়েছিল বিরাট-রোহিত-পন্থকে। ভারত পিচ নিয়ে বেসরকারি অভিযোগও দায়ের করেছে আইসিসির কাছে। শনিবার প্র্যাক্টিসে ব্যাটিংয়ের সময় চোট পেয়েছেন রোহিত। অসমান বাউন্স চাপে রেখেছে ভারতীয় টিমকে।
পিচ-পর্ব বাদ দিলে ভারতের কিন্তু বিশ্বকাপের শুরুটা খারাপ হয়নি। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়ের পর পাকিস্তান ম্যাচও ছিনিয়ে নিতে চাইছে ভারত। প্রথম ম্যাচে রান পাননি বিরাট। ম্যাচ প্র্যাক্টিসের অভাব বোঝা গিয়েছিল। ওপেনিংয়ে দেখা গিয়েছিল বিরাট-রোহিত জুটিকে। তিনে ঋষভ। বিরাট রান না পেলেও রোহিত, পন্থ রান করেছেন। ব্যাটিং অর্ডারে চারে সূর্য, পাঁচে হার্দিক। এরপর শিবম দুবে, জাডেজা, অক্ষরের মতো অলরাউন্ডাররা।
ভারতের সবচেয়ে বড় স্বস্তি বোলিং। আইপিএলের ছন্দ বিশ্বকাপেও ধরে রেখেছেন জসপ্রীত বুমরা। মিডিয়াম পেসাররাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছেন নাসাউ স্টেডিয়ামে। প্রথম ম্যাচে তিন উইকেট নিয়ে প্রত্যাশা বাড়িয়েছেন হার্দিক। পাকিস্তান ম্যাচেও বল হাতে এক্স ফ্যাক্টর হতে পারেন ভাইস ক্যাপ্টেনই। বড় মাঠে ভরসা হয়ে উঠতে পারেন জাডেজার মতো স্পিনারও।
বিশ্বকাপে পা রেখেই নড়বড়ে অবস্থা পাকিস্তান টিমের। আমেরিকাকে ‘ছোট ভারত’ বলে ডাকা হচ্ছে। সৌরভ-মনাঙ্কদের কাছেই হেরে বসেছে গ্রিন আর্মি। পাকিস্তানের টপ অর্ডার আরও একবার সমালোচনার মুখে। ফখর, রিজওয়ান, আজম খানরা রান পাননি। বাবর ও শাদাব রান পেয়েছেন। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে বাবরের টেস্টসুলভ ব্যাটিং নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন দেশের প্রাক্তনরা। একমাত্র আশার আলো পেসার মহম্মদ আমির। অবসর ভেঙে আবার টিমে ফিরেছেন। ভালো বোলিংও করছেন অভিজ্ঞ বাঁ হাতি পেসার। তাতেও চাপ কাটছে না।
আমেরিকার বিরুদ্ধে ডালাসে খেলেছিল পাকিস্তান। এবার গন্তব্য নাসাউ। যে মাঠ ইতিমধ্যে ‘কুখ্যাত’ হয়ে গিয়েছে। সেখানে বাবরের পাকিস্তান কি পারবে ভারতকে সামলাতে? হারলেই বেজে যেতে পারে বিদায় ঘণ্টা। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তান কিন্তু ভয়ঙ্কর। রোহিতরাও সেটা ভুলছেন না।