
অকশন টেবলে উইনার। দিল্লি ক্যাপিটালসের ক্ষেত্রে এমনটাই বলা হচ্ছিল। মরসুমের শুরুতে দিল্লিকে অন্যতম শক্তিশালী দল ভাবা হয়েছিল। কিন্তু ধারাবাহিকতা দেখাতে ব্যর্থ। মুম্বইয়ের কাছে শেষ ম্যাচটাতে হেরেই তাদের প্লে অফে যাওয়ার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। জয় দিয়েই অবশ্য মরসুম শেষ করেছে। মরসুমের প্রথম চারটি ম্য়াচে টানা জয়। পাঁচ নম্বর ম্যাচে প্রথম হার, মুম্বইয়ের কাছে। পরের ম্য়াচে আবার রাজস্থানের বিরুদ্ধে সুপারওভারে কোনওরকমে জয়। তারপর থেকে পরপর হারের ধাক্কা। প্রথম ছয় ম্যাচে মোট পাঁচটিতে জয়। এবং বাকি ৮ ম্যাচের মধ্যে মাত্র দুটিতে জয়। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে গিয়েছিল। একাধিক ম্যাচ উইনার থাকলেও প্লে-অফে যেতে না পারা। দিল্লির হতাশার সম্ভাব্য কারণ ঠিক কী কী?
প্রথমত ওপেনিং জুটি। বারবার কম্বিনেশন বদল হয়েছে। লোকেশ রাহুলের কথাই ধরা যাক। কখনও ওপেন করেছেন, কখনও মিডল অর্ডারে ব্যাটিং। কোনও ওপেনিং জুটিই থিঁতু হতে পারেনি। লোকেশ রাহুল, জ্যাক ফ্রেজার, অভিষেক পোড়েল, ফাফ ডু প্লেসি, করুণ নায়ার। ভিন্ন ওপেনার ট্রাই করেছে দিল্লি ক্যাপিটালস। ব্য়াটিংয়ে ওপেনিং জুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুরুটা ভালো হলে মিডল অর্ডারে পরীক্ষা করাই যায়। কিন্তু দিল্লির ওপেনিংয়েই বারবার বদল। এতেও তাল কেটেছে।
আইপিএলের ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নিয়ম ভুললেও চলবে না। ব্য়াটিং বা বোলিং আক্রমণকে প্রয়োজনমতো শক্তিশালী করার জন্য এই নিয়ম। কোন দল এই নিয়মের বেশি সুবিধা নিতে পারবে, সেটা তাদের পরিকল্পনার উপর নির্ভর করে। গত মরসমে চেন্নাই যেমন এই নিয়মকে দারুণ কাজে লাগিয়েছিল। দিল্লি ক্যাপিটালস এখানেও যেন বারবার ভুল করেছে। কখনও পরিকল্পনা কাজে দেয়নি, আবার কখনও পরিকল্পনা কাজে লাগানোর সুযোগই আসেনি। দিল্লির ব্যাটিং এতটাই টালমাটাল ছিল যে, এই নিয়মের সুবিধা নিতে ব্যর্থ।
কোনও টিম তখনই সাফল্য পায়, যখন সকলে মিলে পারফর্ম করতে পারে। কোনও ম্যাচে ব্যাটিং দুর্দান্ত হল কিন্তু বোলাররা সঙ্গ দিতে পারল না, তা হলে আর লাভ নেই। বোলারদের সাফল্যের নেপথ্যে ফিল্ডিং পারফরম্যান্সও নির্ভর করে। ক্যাচ, গ্রাউন্ড ফিল্ডিং মিস হলে, বোলারদের আত্মবিশ্বাসেও ঘাটতি দেখা যায়। দিল্লি বোলিংয়ে তারকার অভাব ছিল না। মিচেল স্টার্ক, কুলদীপ যাদব, মোহিত শর্মা, অক্ষর প্য়াটেল, মুকেশ কুমার। তারকাদের পাশাপাশি এ মরসুমের আবিষ্কার বিপরাজ নিগমের কথাও ভুললে চলবে না। বেশ ভালো বল করেছেন।
বোলারদের সাফল্য শুধু উইকেটে মাপা যায় না। দেখতে হবে, প্রতিপক্ষকে চাপে রাখতে কতটা সফল হয়েছেন। কুলদীপ যাদব ৭ এর ইকোনমিতে মোট ১৫টি উইকেট নিয়েছেন। বাকিরা উইকেট নিলেও প্রতিপক্ষর উপর সেই দাপট দেখাতে ব্যর্থ। বোলিং ইউনিটের ব্যর্থতাও তাদের প্লে অফ থেকে ছিটকে যাওয়ার অন্যতম কারণ। অপেক্ষা আগামী মরসুমের, ভুল শুধরে নতুন শুরুর।